ঝিনাইদহে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার রহস্য উন্মোচন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার মিরপুরে গৃহবধূ শাহিনা খাতুন (৩০) হত্যায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের স্বীকারোক্তিতে এই হত্যা রহস্য উদঘাটিত হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। গ্রেফতার করা হয়েছে হত্যায় জড়িত প্রধান আসামি মিরপুর উপজেলার নওদাপাড়া গ্রামের সেলিম হোসেন (৩৫), একই গ্রামের শিহাব আলী (৩৮), শাহানুর ইসলাম ওরফে বুড়ো (৩২) এবং ময়নাল (২৮)।
মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম জানান, গত বছর ৩০ নভেম্বর দুপুরে পূর্বপরিচয়ের সূত্রে আসামি সেলিম মোবাইলফোনে গৃহবধূ ঝিনাইদহ শৈলকুপা উপজেলার লাঙ্গলবাধ গ্রামের মহব্বুল ম-লের স্ত্রী শাহিনাকে ডেকে আনেন নয়নপুর ক্যানালপাড়া এলাকায়। এরপর সন্ধ্যা হয়ে গেলে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার কথা বলে ক্যানালপাড়ের নির্জন স্থানে নিয়ে যায় এবং সেখানে রাতভর চারজন মিলে ধর্ষণ করে। পরে ভোরে শাহিনাকে মেহেরপুরগামী একটি বাসে তুলে দিতে গেলে সে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আসামিরা মুখ চেপে ধরে দ্রুত রাস্তা থেকে টেনে হিঁচড়ে স্থানীয় একটি কবরস্থানে নিয়ে শাহিনাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে তারা লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। গত বছরের ১ ডিসেম্বর স্থানীয়দের দেয়া সংবাদ পেয়ে হাত-পা, মুখ বাঁধা ও গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় এক অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, এ ঘটনায় মিরপুর থানা পুলিশ একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করে। ক্লু-লেস এই হত্যার তদন্তে নামে পুলিশ। সোর্সের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যে সন্দেহজনক সেলিমের মোবাইল ট্র্যাক করে ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সেলিমের দেয়া তথ্যে জড়িত শিহাব, শাহানুর ও ময়নাল নামে আরও তিনজনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ এবং ক্রস চেক করলে ঘটনার মূল রহস্য বেরিয়ে আসে বলে জানান ওসি আবুল কালাম। তিনি বলেন, পরিচয় সূত্রে ডেকে এনে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ভিকটিম শাহিনা চিৎকার করায় তাকে হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আটককৃতদের কুষ্টিয়া অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে সেখানে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতেও প্রধান আসামি সেলিম হত্যায় নিজেকে জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দেয়। মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম এ তথ্য জানান। আদালত শুনানি শেষে আসামিদের কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন বলেও জানান ওসি।