অভিগমন সড়ক নির্মিত না হওয়ায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না পোলতাডাঙ্গার মাথাভাঙ্গার ওপর নবনির্মিত সেতু

রহমান মুকুল/ইকলাস উদ্দীন: শুধুমাত্র অভিগমন সড়কের অভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না পোলতাডাঙ্গা গ্রামে অবস্থিত মাথাভাঙ্গা নদীর ৩ ইউনিয়নের সৌভাগ্যের ব্রিজটি। ফলে সংশ্লিষ্ট ৩ ইউনিয়নসহ আশপাশের প্রায় ১ লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াতে বিড়ম্বনায় ভুগছেন।
জানা যায়, গত ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন আলমডাঙ্গার পোলতাডাঙ্গা গ্রামে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। ৬ কোটি ৭৪ লাখ ১৮ হাজার টাকায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের এলবিসি প্রকল্প কর্তৃক নির্মিত হয়েছে এ ব্রিজটি। খুলনার মোজাহার এন্টারপ্রাইজ ও চুয়াডাঙ্গার মাদানী এন্টারপ্রাইজ নামক ২টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে নির্মাণ করেছে এ ব্রিজ। এলাকাবাসীর এটি স্বপ্নের ব্রিজ। তারা দাবি করেন, ব্রিজটি চালু হলে বাড়াদী, গাংনী ও খাদিমপুর ইউনিয়নের ৪৩টি গ্রামসহ ভাংবাড়িয়া ও জেহালা ইউনিয়নের প্রায় আরও ১০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের সৌভাগ্য উন্মোচিত হবে। বিশেষ করে বাড়াদী ইউনিয়নের বাড়াদী, নতিডাঙ্গা, গোয়ালবাড়ি, রাধাকান্তপুর, গোপালনগর, অনুপনগর, আঠারখাদা, পোলতাডাঙ্গা, কাটাভাঙ্গা, এনায়েতপুর, আনন্দবাস, কাচিকাটা ও গাংনী গ্রাম। এছাড়া নদীর ওপারে গাংনী ইউনিয়ন ও খাদিমপুর ইউনিয়নের, গাংনী, সাহেবপুর, বন্দরভিটা, শালিকা, আসমানখালী, নান্দবার, নিমতলা, ফুলবগাদী, খাদিমপুর, রামচন্দ্রপুর, শিয়ালমারী, আলিয়াটনগর, বটিয়াপাড়া, শীবপুর, মাজহাদ, গোপালনগর, কান্তপুর, লক্ষ্মীপুর, কৃষ্ণপুর ও জুগিরহুদা গ্রাম।
পোলতাডাঙ্গা গ্রামের শিক্ষক ফারুক হোসেন বলেন, শুধু ৩ ইউনিয়নের মানুষই না, ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের ভাংবাড়িয়া, ভোগাইল, বগাদী, মহেষপুর, গৌরীহ্রদ, হারদী ইউনিয়নের হারদী, কুমারী ইউনিয়নের দুর্লভপুর, যাদবপুর প্রভৃতি গ্রামের মানুষেরও ভাগ্যের পরিবর্তন হবে।
আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পোলতাডাঙ্গা গ্রামের সন্তান ইয়াকুব আলী মাস্টার বলেন, আবহমানকাল ধরে মাথাভাঙ্গা নদী যেমন একদিকে এতদাঞ্চলের মানুষের জন্য পলি বহন করে ফসলি আবাহন সৃষ্টি করেছে। তেমন অন্যদিকে, যোগাযোগ ব্যবস্থায় বড় বাঁধা সৃষ্টি করেছে। ফলে এই ব্রিজটি নির্মিত হলে পালটে যাবে এতদাঞ্চলের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের ভাগ্য। সেকারণে এ ব্রিজের দাবি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের। ব্রিজটি উদ্বোধন হলে শুধু কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের উপযুক্ত দামই পাবেন না, বাড়বে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার। একটি ব্রিজ না থাকায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে লক্ষাধিক মানুষের বিড়ম্বনার অন্তঃনেই। অনেক পথ ঘুরে ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়।
আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ বলেন, বেশ কিছুদিন পূর্বেই ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। তারপরও ব্রিজটি মানুষ ব্যবহার করতে পারছেন না শুধুমাত্র অ্যাপ্রোচ রোডের কারণে। পোলতাডাঙ্গা গ্রামের দিকে অবশ্য অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু নদীর অন্য পাড়ে অর্থাৎ মহেশপুরের দিকে অ্যাপ্রোচ রোড করা সম্ভব হচ্ছে না। নদীর ওই পারে অ্যাপ্রোচ রোডের জায়গা ছেড়ে দিচ্ছেন না গুটিকয়েক ব্যক্তি। অথচ অ্যাপ্রোচ রোডের জন্য সেখানে সরকারি খাস জমি আছে। সেই খাস জমি অবৈধভাবে কয়েকজন ব্যক্তি দখল করে পানবরজ এমন কি ঘর নির্মাণ করেছেন। বিল্ডিং কোড বা তারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করে দখলে রেখেছেন খাস জমি।
পোলতাডাঙ্গা গ্রামের নাসির উদ্দীন মাস্টার বলেন, গুটি কয়েক স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির কাছে বৃহৎ অঞ্চলের মানুষের সৌভাগ্যকে জলাঞ্জলি দেয়া যায় না। এ ব্যাপারে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলী জানান, সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষে খুব দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক নির্দেশনা দিয়েছেন।