দামুড়হুদার গোপালপুরে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু : নেপথ্যে নানা কাহিনী

 

জুড়ানপুর প্রতিনিধি/খাদিমপুর প্রতিনিধি: দামুড়হুদার গোপালপুরে এক সন্তানের জননী মালয়েশিয়া প্রবাসীর স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় নিজ বাড়ি থেকে সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেচানো ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা। ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ এসে লাশ ময়না তদন্তের জন্য দামুড়হুদা মডেল থানায় নিয়ে যায়।

জানা গেছে, গোপালপুর উত্তরপাড়ার হযরত আলীর মেয়ে মৃত জলি খাতুনের (৩২) ১২ বছর আগে বিয়ে হয় মুচিপাড়ার ইয়ার আলীর বড় ছেলে বর্তমানে মালয়েশিয়া প্রবাসী ইউসুফ আলীর (৩৫) সাথে। বিয়ের পরই মালয়েশিয়া পাড়ি দেয় ইউসুফ। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই শিশু কন্যা উম্মে হাবিবার জন্ম হয়। বর্তমানে উম্মে হাবিবা (১০) গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী।

এলাকাসূত্রে জানা যায়, বিয়ের আগে থেকে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো প্রতিবেশী মকলেছের ছেলে খেজমত (৩৫) আলীর সাথে। দীর্ঘ ১০বছর সম্পর্ক থাকার পর খেজমত বিয়ে করে ফেললে নতুন করে ১ বছর যাবত শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তোলে মুচিপাড়ার ছাত্তার মল্লিকের ছেলে সেন্টুর (৩৭) সাথে। এ ঘটনা নিয়ে বাড়িতে প্রতিনিয়ত ঝামেলা সৃষ্টি হতে থাকে। পাড়া মহল্লায় শোনা যায় নানা গুঞ্জন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সেন্টু মৃত জলির সাথে ব্লাকমেইল করতে থাকে গোপন ছবি ও ভিডিও নিয়ে। এ বিষয়ে মৃত জলির দেবর ইউনুস বলেন, আমার ভাই গত ১বছর আগে বাড়িতে আসে তারপর আবার চলে যায়। তারপর আমরা যখন এই ঘটনা জানতে পারি তখনই নিষেধ করি। কিন্তু সেন্টু তো নাছোড় বান্দা। সে কোনো মতে থামে না। বিরক্ত করতে থাকে সবসময়। ভাবি ফোন রিসিভ না করলে খারাপ খারাপ মেসেজ করতে থাকে। হুমকি দিয়ে বলেন, তোর চাচা শশুর বাড়িতে পাহারা দেয় কেন। বেশি বাড়াবাড়ি করলে ইট দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেবো। আমাদের মাঝখানে কেউ আসবি না। এ বিষয় নিয়ে রাতে অনেক ঝামেলা হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি ভাবি গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে। এসময় দরজার বাইরে থেকে ছিটকিনি লাগানো ছিলো। প্রতিবেশীরা লাশ নামায়। পরে লোকজন ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ আসে।

পুলিশ ঘরে ঢুকে মোবাইল ফোন, চিরকুট, বিভিন্ন বড়ি উদ্ধার করে জব্দ করেছে। চিরকুটে ভেষে ওঠে দুটি নাম সেন্টু ও খেজমত। সেন্টু বর্তমানে পলাতক রয়েছে। দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুকুমার বিশ্বাস জানান ১টি মামলা হয়েছে।