বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার দর্শনা মাথাভাঙ্গা নদীর গোপালখালী ব্রিজের নিকট থেকে সদর কালুপোল ব্রিজ পর্যন্ত চিত্রা নদীর প্রাণ প্রবাহ ফেরাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৩ কিলোমিটার পুনর্খননের কাজ শুরু করে। এরই মধ্যে প্রায় ৬০ ভাগ চিত্রা খননের কাজ দৃশ্যমান হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আদালতের নির্দেশনা অম্যান্য করে দামুড়হুদার দুধপাতিলা ব্রিজের সম্মুখে ব্যক্তি মালিকাকানা সম্পত্তিতে খাল খনন করছে। ব্যক্তি মালিকানা জমিতে খাল খনন করায় জমির মালিকেরা প্রতিবাদ জানিয়ে খাল খনন কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা মাথাভাঙ্গা নদীর গোপালখালী ব্রিজের নিকট থেকে সদর উপজেলার বেগমপুর, শংকরচন্দ্র ও তিতুদহ ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে বয়ে গেছে চিত্রা নদী। ৬৪টি জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনর্খনন প্রকল্প (১ম পর্যায়) শিরোনামে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৩ কিলোমিটার পুনর্খননের কাজ শুরু করে। এইে মধ্যে খনন কাজের ৬০ ভাগ দৃশ্যমান হয়েছে। যে পথ ধরে চিত্রা খননের কাজ চলছে তার মধ্যে দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের বড় দুধপাতিলা ব্রিজের সামনে কৃষ্ণপুর, দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুর ও দুধপাতিলা মোজার ত্রি-মোহনিতে ব্যক্তি মালিকানা সম্পত্তি রয়েছে। অধিগ্রহণ ছাড়া ব্যক্তি মালিকানা সম্পত্তিতে খাল খনন হতে পারে এমন আভাস পেয়ে দুধপাতিলা গ্রামের মোহাম্মদ আলী ম-লের ছেলে গোলজার আলী গত ৮ জানুয়ারি বিজ্ঞ আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন। যেখানে শামীম আহসান, পানিউন্নয়ন বোর্ডের সালাউদ্দিন, সুবির কুমার ভট্রাচার্য্য ও জাহিদুল ইসলামকে বিবাদী করা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত নালিশি জমির ওপর ১৫৪ ধারা মোতাবেক সতর্কীকরণ নোটিশ জারি করেছেন। সেই সাথে দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) সরেজমিনে তদন্তপূর্বক দখলীয় বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশও দেয়া হয়। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে। কোনো পক্ষ এ আদেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও আদালত সতর্ক করেছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে নালিশি জমিতে ভেকু মিশিন দিয়ে খনন কাজ করতে গেলে জমির মালিকেরা বাঁধা প্রদান করে। মামলার বাদীসহ ব্যক্তি মালিকানা জমির মালিক অ্যাড. আলমগীর হোসেন, কাওছার আলী শাহ, নুরুল আলম, সিরাজুল ইসলাম, ফজলুল করিম, ফারুক হোসেন, মিনা ড্রাইভার, গোলজার আরী, আকবর আলী, আবুল হোসেন, আলামিন, আরিফুল, আহসান হাবীব, মোহাম্মদ আলী অভিযোগ করে বলেন, সরকার চিত্রা নদী খনন করছে সে ব্যাপারে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু ব্যক্তি মালিকানা সম্পত্তি খনন করতে হলে তা অধিগ্রহণ করতে হয়। আমরা ঠিকাদারের নিকট খনন কাজের ম্যাপ দেখতে চেয়েছি তা না দেখিয়ে উল্টো জোরপূর্বক আমাদের বাপ দাদার জমিতে খাল কাটছে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুবির কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞা নামার নোটিশ পায়নি। ব্যক্তি মালিকানা সম্পত্তির মালিকেরা তাদের ন্যায্য দাবি করতেই পারে। আমার প্রশ্ন এখান দিয়ে চিত্রা ছিলো তাহলে গেলো কোথায়? আর কাগজপত্র দেখানোর প্রয়োজন হলে আদালতকে দেখাবো। ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।