আলমডাঙ্গা মেহেরপুর জেলা ও মিরপুর উপজেলাসহ ৭ জেলা ও ২৩ উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়ন ঘোষণা
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলাসহ দেশের ৭টি জেলা ও ২৩টি উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়ন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের সাথে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই ঘোষণা দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ৬৪ জেলার মধ্যে ৪০ জেলা এবং ৪১০ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। মুজিববর্ষের মধ্যে বাংলাদেশের সব ঘরে আলো জ্বালবো।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কে নির্মিত ‘শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেটর অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার’; শতভাগ বিদ্যুতায়িত ৭টি জেলা; ফেনীতে ১১৪ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুতকেন্দ্র এবং ১৮টি জেলার ২৩টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘৬৪ জেলার মধ্যে ৪০ জেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়ে গেলো। ৪১০ উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হলো। ইনশাআল্লাহ মুজিববর্ষের মধ্যে বাংলাদেশের সব ঘরে আলো জ্বালবো। বর্তমানে দেশের ৯৬ ভাগ মানুষ বিদ্যুত সুবিধা পাচ্ছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী, বাগেরহাট, সুনামগঞ্জ, মেহেরপুর, গোপালগঞ্জ জেলার সুবিধাভোগী মানুষের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেন।
গণভবন প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুত জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, বিদ্যুত জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক; পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম এবং বিদ্যুত বিভাগের সচিব সুলতান আহমেদ নিজ নিজ বিভাগের উন্নয়ন তুলে ধরে তথ্যচিত্র তুলে ধরেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার, বিদ্যুত বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মাকসুদা খন্দকার, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের পিডি নাজমুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ ইয়াহ্ ইয়া খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মনিরা পারভীন, সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, আদর্শ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আজিজুর রহমান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস, দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান আলি মুনছুর বাবু, আলমডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন, জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমানসহ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নানসহ সরকারি-বেসরকারি দফতরের কর্মকর্তাবৃন্দ। এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে পুরো জেলা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হবে। মুজিববর্ষকে ঘিরে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বর্তমান সরকার। মুজিববর্ষ উদযাপনে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।
মেহেরপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুর জেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করায় জেলা প্রশাসনের কার্যালয় চত্বরে বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। পরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন এমপির নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালি শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, আজকে মেহেরপুর জেলায় চুরি ডাকাতি নেই, সন্ত্রাসী নেই, চাঁদাবাজি নেই, আপনারা লক্ষ্য রাখবেন যারা ওই কাজগুলো করতো তাদের অনেক গাত্রদাহ হচ্ছে। যারা চুরি-ডাকাতি করতে পারছে না তাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নামের সঙ্গে জড়িত এই মেহেরপুর জেলার মর্যাদা অনেক উচ্চতায় রয়েছে।
র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব খায়রুল কবির মেনন, জেলা প্রশাসক আতাউল গনি, সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী, সিভিল সার্জন ডা. নাসিরুদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক, জেলা জজকোর্টের পিপি অ্যাড. পল্লব ভট্টাচার্য, সদর থানার ওসি শাহ দারা খান, জেলা যুবলীগের যুগ্মআহ্বায়ক সরফরাজ হোসেন মৃদুল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম বাধন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্মআহ্বায়ক মতিউর রহমান মতিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মিরপুর উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়ন ঘোষণাকালে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের কনফারেন্স রুমে উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য সৈয়দা রাশিদা খানম, জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাজি রবিউল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজাদ জাহান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম সবুর, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, মিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিনসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি দফতরের প্রধানগণ, কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুত ও বিদ্যুত বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সাংবাদিক, কৃষক, শিক্ষার্থী, পল্লী বিদ্যুতের সুবিধাভোগী ও সুধীজন।