ব্যাক্তিগত শিক্ষা বিপননকেন্দ্র এবং শিক্ষার্থী নির্যাতন

শিক্ষক ততক্ষনই মহত যতক্ষণ শিক্ষাদান করেন এবং তা দানের মানসিকতা লালন করেন। আর যে বা যারা
বিদ্যালয়ের বেতনভুক্ত হয়েও বিদ্যাদানের আবরণে শিক্ষা বিক্রির মানসিকতা লালন করেন এবং শিক্ষা বিক্রির দোকান পাতেন
তাদেরকে কি শিক্ষক বলা চলে? এরপর যদি ওই বেতনভুক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করেন তা হলে বুঝতে বাকি থাকে না তিনি কতটা স্বার্থান্ধ। এবং হিনমনে আক্রান্ত। ক্ষতিকর এ বেরামের উপযুক্ত দাওয়ায় দিতে না পারলে সমাজকেই দিতে হবে খেসারত। চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার পারকৃষ্ণপুর মদনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়তে রাজি না হওয়ায় তাকে নির্যাতনের প্রতিবেদন পাঠে বোদ্ধাদের মধ্যে এ তাগিদ উপলব্ধি হওয়াটাই স্বাভাবিক। #
শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। সুশিক্ষা আর পরিকল্পিত পরিশ্রম একটি জাতিকে কতটা উন্নতির শিখরে পৌছে দেয় তা উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে বুঝতে বাকি থাকে না। প্রাকৃতিকভাবে অঢেল সম্পদ থাকার পরও অশিক্ষার কারণে অনেক জাতি ধ্বংসের দিকে যেমন ধাবিত হচ্ছে, তেমনই প্রতিকূল প্রকৃতির সাথে পাঞ্জা লড়ে, পাল্লা দিয়ে বহুজাতি পৌছে গেছে কাঙ্খিত লক্ষে। আমরাও সে লক্ষে পৌছুনোর যুদ্ধে নেমেছি। সরকারিভাবে সবার জন্য শিক্ষা শুধু বাধ্যতামূলকই করা হয়নি, শিক্ষাগ্রহণের যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা হয়, হচ্ছে। দেশে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে। নির্ধারিত মানদ-ের পরিমাপে প্রাপ্য সকল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যামিক
বিদ্যালয়গুলোকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। শিক্ষকম-লীকে উপযুক্ত মর্যদার বিষয়টিই শুধু নিশ্চিত করা হচ্ছে না,অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছ্বল সুন্দরভাজে চলার মত বেতনও দেয়া হচ্ছে। তা হলে শিক্ষককে কেনো অর্থলিপ্সুতায় মত্ত হতে হবে? কোন শিক্ষককেই নিশ্চয় নতুন করে মনে করে দিতে হবে না যে, একজন মানুষ যদি মানসিক দৈন্যগ্রস্থ হন, তা হলে তার কোন অভাবই দূর কর যায় না। এ হিসেবে মানসিকভাবে যারা বড় হতে পারেনি, পারে না তাদেরকে আর যাই হোক শিক্ষতায় আসা মানায় না। কেনোনা, তিনি লেখাপড়া করে নিজের মানসিক দৈনতাই যখন দূর করতে পারেননি তখন তিনি শিক্ষক হয়ে প্রজন্মকে বৃহত মানসিকতার করে গড়ে তুলবেন কীভাবে? তাছাড়া নৈতিকতার স্খলনঘটিয়ে যখন কোন একজন অর্থের পাহাড় গড়ার সুযোগ পান তখন সেই ক্ষতিকর প্রবণতা ভয়াবহ রূপ নেয়। দর্শনাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় এরকমই পরিস্থিতির সৃষ্টি
হয়েছে বলে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। #
শিক্ষক অথচ তিনি হিনমানসকিতায় আক্রান্ত। অবশ্যই ওইধরনের মুখোশধারিদের চিহ্নিত করতে হবে। তার আগে ওইধরণের ব্যক্তি যাতে শিক্ষকতার মত মহত ও মহান দায়িত্বে আসার সুযোগ না পান তাও নিশ্চিত করতে হবে। বিদ্যালয়ে যদি সঠিকভাবে শিক্ষাদান করা হয় তা হলে কি শিক্ষার্থীকে শিক্ষকের ব্যাক্তিগত শিক্ষাবিপনন কেন্দ্রে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে?  তাছাড়া পড়া না পারলেও শিক্ষার্থীকে নূন্যতম নির্যাতন যখন বারণ তখনও কেনো নির্যাতন? বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের নাম নেই, ব্যাক্তিগত শিক্ষা বিপননকেন্দ্রে না যাওয়ার কারণে কৌশলে শিক্ষার্থীর ওপর নির্যাতনের ঘটনাটিকে কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। শিক্ষার্থী নির্যাতকের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে খতিগ্রস্থ হবে জাতি। #