মন্দে তিরস্কার থাকলে ভালোয় পুরস্কার নয় কেনো

অপরাধ করার পর অপরাধীর পিছু ধাওয়ার চেয়ে অপরাধ করার পথে পা বাড়ানোর সাথে সাথে অপরাধী ধরে আইনে সোপর্দ করতে পারাটাই পুলিশের পারদর্শিতা। আর যদি তা সম্ভব না হয় তা হলে অপরাধ করার পরপরই প্রকৃত অপরাধীকে সনাক্ত করে তাকে দ্রæত ধরে আইনে সোপর্দ করতে পারাটাও পুলিশের বিচক্ষণতা। চুয়াডাঙ্গা জেলায় সম্প্রতি দুটি ঘটনার ক্ষেত্রে পুলিশের পারদর্শিতা ও বিচক্ষণতার বিষয়টি উঠে এসেছে। যা প্রশংসার দাবি রাখে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে গতপরশু বুধবার বিকেলে বহিরাগত দুজনকে কৌশলে ধরে নিয়ে অনেকটা বোকা বানিয়ে তাদের নিকট থেকে নগদ টাকাসহ মূল্যবান মালামাল হাতিয়ে নেয়ার গুঞ্জন ওঠে। এ গুঞ্জনের সত্যতা যাচাইয়ের এক পর্যায়ে চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কের বহুল আলোচিত ঘোড়ামারা ব্রিজের নিকট থেকে তিন তরুণকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। পুলিশের দাবি এরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে সড়কের ধারে ওত পেতে ডাকাতির জন্য অপেক্ষা করছিলো। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি চৌকশদল দ্রæত অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করতে করা সম্ভব হয়েছে। একজন পালিয়ে গেছে। তাকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। অপরদিকে ক’দিন আগেই দামুড়হুদার পারকৃষ্ণপুর এলাকায় এক শিশুকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনা ঘটে। রোমহর্ষক এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ লম্পট ও হত্যাকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারের পর ঘাতক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। অপরদিকে গ্রাম বাংলায় কিছু অপরাধী অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করে সংগঠিত হচ্ছে মর্মে বিভিন্নভাবে তথ্য যেমন পাওয়া যাচ্ছে তেমনই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানও জোরদার হয়েছে। র‌্যাব-৬ ঝিনাইদহ ক্যাম্পের পর পর কয়েকটি অভিযানে এলাকার বেশ ক’জন চিহ্নিত সন্ত্রাসীসহ সদ্য গজে ওঠা গ্যাং প্রধানকে আটক করে আইনে সোপর্দ করা হয়েছে। মাদকবিরোধী অভিযানও অব্যাহত রয়েছে। যদিও বিষয়টি কারো কারো দৃষ্টিতে দায়িত্বেরই অংশ, তবুও মন্দকাজে যখন সমালোচনা করে সুধরে নেয়ার চেষ্টা চলে তখন কর্তব্যপরায়নতাকে কেনো প্রশংসা করে উৎসাহ জোগাবেন না? মন্দে তিরস্কার থাকলে ভালোয় পুরস্কার পাওয়ার দাবি ন্যায় সঙ্গত। অভিযানকে সফল করতে কর্তব্যরত যে বা যারা বিশেষ অবদান রাখেন তাদের পুরস্কৃত করার বিশেষ উদ্যোগ প্রয়োজন।
ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ধারালো অস্ত্রসহ গ্রেফতার এবং শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার পরপরই ঘাতককে ধরে আইনে সোপর্দ করার ঘটনা পুলিশের প্রতি আস্থা প্রগাড় করার অনন্য উদাহরণ। অপরাধমূলক অপকর্ম করার পথে পা বাড়ালেই পুলিশ টের পাবে। ধরাপড়ার ভয় পদে পদে। অপরাধ করেও পার পাওয়ার সুযোগ নেই। এটা যে সমাজে যতোটা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে সেই সমাজ ততোটাই অপরাধপ্রবনমুক্ত হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা পুলিশের বর্তমান তৎপরতা সে পথেই এগুচ্ছে।