ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা : দায় নেবে কে

গত সোমবার শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনেই বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়েছে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। একাধিক কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা শুরু করার ঘটনা ঘটেছে। প্রথমে ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা শুরু করা হলেও কিছুক্ষণ পর পরীক্ষার্থীদের ২০২০ সালের প্রশ্নপত্র দেয়া হয়। আবার কিছু কেন্দ্রে সময় বাড়িয়ে দেয়া হলেও অনেক কেন্দ্রে সময় বাড়ানো হয়নি। কোথাও আবার পুরোনো প্রশ্নেই পরীক্ষা শেষ করতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। বিষয়টি রীতিমতো উদ্বেগের। ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০৩ ও ২০৪ নম্বর কক্ষে সরবরাহ করা হয় ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্র। প্রায় ১৫ মিনিট পর প্রশ্ন পরিবর্তন করে দেন শিক্ষকরা। বরিশালের একটি কেন্দ্রে ২০২০ সালের বদলে তাদের ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্র দেয়া হয়। এতে অর্ধশতাধিক পরীক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে অভিভাবকরা জানিয়েছেন। গোবিন্দগঞ্জের একটি কেন্দ্রে বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় ২০১৮ সালের সিলেবাসের একজন পরীক্ষার্থী থাকলেও ১৩৩ জন পরীক্ষার্থীকেই পুরনো প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়। প্রায় ৩০ মিনিট পরীক্ষা চলার পর ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহের বিষয়টি নজরে আসে। এরপর নতুন করে ২০২০ সালের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়। ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের একটি কেন্দ্রেও ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। লালমনিরহাটের বড়বাড়ী, দিনাজপুরের কাহারোল, নীলফামারী সদর, যশোরের চৌগাছা, টাঙ্গাইল সদরসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নে এসএসসি পরীক্ষা নেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
প্রশ্ন হচ্ছে এ ধরনের ঘটনা ঘটে কী করে? পরীক্ষাকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা যে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে পারেননি, এসব ঘটনা তো তারই প্রমাণ। কোনো ক্ষেত্রে বলা হয়েছে এ জন্য পরীক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হবে না। কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বয়স অল্প। জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষাটি দিতে গিয়ে এ ধরনের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে তাদের। এতে তাদের কোমল মনে যে ছাপ পড়েছে, তার প্রভাব তো আগামী পরীক্ষাগুলোতেও থাকবে। যে উদ্বেগ পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ওপর পড়েছে, তার দায় কে নেবে? এ বিষয়ে একটি কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার। এ ধরনের ভুলের দায় কোনোভাবেই যেন পরীক্ষার্থীদের ওপর না বর্তায়। ভবিষ্যতে কোনো পরীক্ষায় যেন এ ধরনের কোনো ভুল না হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।