দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় সরস্বতী পূজা উদযাপন

স্টাফ রিপোর্টার: বিদ্যা দেবী সরস্বতীর পায়ে ফুল, বেলপাতা, বই ও নানা শিক্ষা উপকরণ সমর্পণ করে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ সারাদেশে অঞ্জলি গ্রহণ করেছেন শিক্ষার্থী ও ভক্তরা। ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনা আর নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়েছে। ঢাক-ঢোল-কাঁসর, শঙ্খ ও উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে দেশের বিভিন্ন পূজাম-প। শাস্ত্রমতে, প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে শ্বেতশুভ্র কল্যাণময়ী বিদ্যাদেবীর বন্দনা করা হয়। ঐশ্বর্যদায়িনী, বুদ্ধিদায়িনী, জ্ঞানদায়িনী, সিদ্ধিদায়িনী, মোক্ষদায়িনী এবং শক্তির আধার হিসেবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সরস্বতী দেবীর আরাধনা করেন। পূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দেন। সরস্বতী দেবী শ্বেতশুভ্রবসনা। দেবীর এক হাতে বেদ, অন্য হাতে বীণা। এজন্য তাকে বীণাপানিও বলা হয়। সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, জ্ঞান ও বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী তার আশীর্বাদের মাধ্যমে মানুষের চেতনাকে উদ্দীপ্ত করতে প্রতি বছর আবির্ভূত হন ভক্তদের মাঝে। শিক্ষার্থীরাই এ পূজায় মনোযোগী হয়। দেবীপদে অঞ্জলি দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ম-পে দেবীর সামনে শিশুদের বিদ্যাচর্চার সূচনা হবে ‘হাতেখড়ি’ দিয়ে। কোনো কোনো ম-পে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
চুয়াডাঙ্গায় সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়েছে। জেলা শহরের বড় বাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে পূজা উদযাপন করে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ। এছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিজ নিজ বাড়িতে বেলা ১১টার দিকে দেবীর চরণে বই রেখে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা আরাধনা করে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সদস্য সচিব কিশোর কুমার কু-ু বলেন, ‘মহাপঞ্চমী তিথির শুরুতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার মধ্যে সরস্বতী পূজা উদযাপন সম্পন্ন হয় চুয়াডাঙ্গায়। সম্মিলিতভাবে কয়েকটি স্থানে সরস্বতী পূজা উদযাপন করা হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজ নিজ বাড়িতে সবাই পালন করেছে।’
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহে আড়ম্বরে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পূজাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জেলা শহরের সরকারি কেসি কলেজ, নুরুন্নাহার মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মন্দিরগুলোতে ভীড় জমাতে থাকে সনাতন ধর্মাবলম্বলীরা। জ্ঞান লাভের আশায় মায়ের রাতুল চরণে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা। চলে হাতে খড়ি। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বাসা-বাড়িতেও চলে পূজা। পূজা চলাকালীন সময় উলু ও শঙ্খ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে প্রতিটি পূজাম-প। শেষে ভক্তদের মধ্য বিতরণ করা হয় প্রসাদ। এ বছর জেলা শহরসহ ৬টি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পাড়া-মহল্লায় ছোট-বড় অন্তত দেড় হাজার মন্ডপে একযোগে এ সরস্বতী পূজা পালিত হচ্ছে।