চুয়াডাঙ্গায় বেকার ও অসচ্ছল নারীদের জীবন আলোকিত করছে জাহানারা যুব মহিলা সংস্থা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় বেকার ও অসচ্ছল নারীদের জীবন আলোকিত করছে জাহানারা যুব মহিলা সংস্থা। স্বেচ্ছাসেবামূলক এই সংস্থাটি জেলাজুড়ে জাগিয়ে তুলেছে নারীদের। শিক্ষিত ও অশিক্ষিত অসংখ্য নারী এখন নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। ইতোমধ্যে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। ঘরে বসেই এসব নারী ১০ থেকে ২০ হাজার আবার কেউ কেউ ৩০ হাজার টাকা আয় করছেন নিজের হাতে নকশাকরা কাপড় বিক্রি করে। আর বিনামূল্যে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন সংস্থাটির পরিচালক জাহানারা খাতুন টগর।
সোমবার বিকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের পার্শ্ববর্তী নূরনগর গ্রামের সালমা খাতুন পরিচালিত জাহানারা যুব মহিলা সংস্থার একটি শাখায় গিয়ে দেখা গেল নারীরা কাপড়ে ব্লক বাটিকের কাজ করছেন। সালমা খাতুন একজন অশিক্ষিত নারী। তিনি জানান, স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য শিক্ষার তেমন প্রয়োজন মনে করি না। আমি বাড়ি বসে কাজ করে প্রতিমাসে কম পক্ষে ২০ হাজার টাকা আয় করি। তিনি জানান, ‘আমরা ক্রেতাদের চাহিদা মতো ঢাকা ও পোড়াদহ থেকে কাপড় কিনে এনে ডিজাইনের কাজ করি। পরে সেটা এলাকাসহ জেলার বাইরে বিক্রি করি। এতে ভালো লাভ হয়।’ চুয়াডাঙ্গার গাইদঘাটের যুব মহিলা সংস্থার পরিচালক বীথি খাতুন বলেন, ‘আগে আমি বেকার ছিলাম। বছরখানেক আগে জাহানারা যুব মহিলা সংস্থার পরিচালক টগরের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাড়ি বসেই ইনকাম করছি। প্রতি মাসে আমার ১০ হাজার টাকা আয় হয়।’ আলমডাঙ্গা মুন্সিগঞ্জের বিধবা নারী লাবনী খাতুনও এখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন। তিনি খেজুরতলা সংস্থার পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। বিভিন্ন কাপড়ে ডিজাইন করে তা বাজারে বিক্রির পর ভালোই লাভ থাকে। জাহানারা যুব মহিলা সংস্থার পরিচালক জাহানারা খাতুন টগর জানান, ‘আমি ২০০৮ সালে নিজের উদ্যোগে চুয়াডাঙ্গার পলাশপাড়ায় সংস্থাটি গড়ে তুলি। সেখানেই নারীদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করি। পরবর্তীতে চুয়াডাঙ্গার নূরনগর, গাইদঘাট, বেলগাছি, আলমডাঙ্গার কালিদাসপুর ও দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গায় শাখা গড়ে তুলি। এসব শাখায় দু’শতাধিক নারী প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজস্বভাবে আয়ইনকাম করছে। এখানে দর্জির কাজ, এমব্রডারি, ব্লক বাটিক অ্যাপ্লিক, কুঠিরশিল্প ও সুই-সুতার কাজ করেন নারীরা। এসব নারীর হাতের কাজ সংবলিত কাপড় রাজশাহীর কাঁটাখালী ও ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় বেশ চাহিদা রয়েছে। ওখানকার ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে কাপড়ের চাহিদা জানান। আমরা তা সরবরাহ করে থাকি। দিন দিন এর চাহিদা বাড়ছে।’