নকল কৃষি কার্ডে ধান বিক্রি : আটকে দিলেন গাংনী খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলায় লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করে সরকারি খাদ্য গুদামে ধান ক্রয় চলছে। এতে প্রকৃত কৃষকদের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করছে। তবে একটি অসাধু চক্র কৃষকের কার্ড জালিয়াতি করে গুমাদে ধান বিক্রির অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সতর্কতায় জাল কার্ড ধরে পড়েছে। এখন আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
জানা গেছে, সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক চলমান আমন মরসুমে উৎপাদিত কৃষকের ধান ১ হাজার ৪০ টাকা মণ দরে ক্রয় করা হচ্ছে দেশের খাদ্য গুদামগুলোতে। আমন ধানের ব্যাপক উৎপাদনের ফলে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন দফতরের সমন্বয়ে কৃষকের তালিকা প্রস্তুত করে লটারির মাধ্যমে ধান বিক্রেতা কৃষকের নাম চুড়ান্ত করা হয়েছে। সে মতে এ উপজেলার ১ হাজার ৬৬৮ জন কৃষক এক মেট্রিক টন করে ধান বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ধান ক্রয় চলছে। নির্ধারিত কৃষকরা তাদের ধান বিক্রি করে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে কোনো ঝামেলা ও বাধা ছাড়াই ধান বিক্রির এই লটারির প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন মহল সাধুবাদ জানায়। তবে বসে নেই সুযোগ সন্ধানী চক্র। গাড়াডোব গ্রামের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নানের কৃষি কার্ড জাল করে একই গ্রামের নজির হোসেন। নিজেকে আব্দুল মান্নান পরিচয়ে নজির হোসেন সম্প্রতি গাংনী খাদ্য গুদামে এক মেট্রিক টন ধান প্রদান করে। কার্ড পর্যালোচনায় জাল বলে সনাক্ত করেন খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি এলএসডি) মতিয়ার রহমান বিশ্বাস বলেন, কার্ডটি দেখে আমার সন্দেহ হলে কৃষি কার্ড ও জাতীয় পরিচয় পত্রের মূল কপি আনতে বলা হয়। বাড়িতে কার্ড আনতে যাচ্ছি বলে গুদাম থেকে বেরিয়ে আর ফিরে আসেনি সে। তখন আমি বিভিন্নভাবে সন্ধান করে জালিয়াতির বিষয়টি নিশ্চিত হই। তখন ওই কার্ড আটকে দেয়াসহ এর কোনো বিল প্রদান করা হয়নি। বিল প্রদানের সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। তাদের সিদ্ধান্তে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
স্থানীয় ও চাষি সূত্রে জানা গেছে, একটি চক্রের সদস্যরা ধান ক্রয়ের স্বচ্ছ প্রক্রিয়া ভাঙার চেষ্টা করছে। তারা চাষিদেরকে বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে ধান বিক্রির অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসন, কৃষি বিভাগ ও খাদ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সতর্কতা ও কঠোরতায় তারা প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না। এই জাল কার্ডধারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এর নেপথ্যে রয়েছে যারা তাদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা গেলে স্বচ্ছতার সাথেই ধান ক্রয় কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ঠরা।