বিশ্বজুড়ে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস : আতঙ্ক
স্টাফ রিপোর্টার: করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর পরবর্তী ১৮ মাসের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সাড়ে ছয় কোটি মানুষ উজাড় হয়ে যাবে বলে সতর্ক করেছিলো যুক্তরাষ্ট্র। মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার অন্তত তিন মাস আগেই এ ব্যাপারে সতর্কতা জারি করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা ভবিষ্যদ্বাণী করে জানিয়েছিলেন, নতুন এক ধরনের করোনা ভাইরাসে লাখ লাখ মানুষ মারা যেতে পারে। করোনা ভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে আতঙ্কের মধ্যে গতকাল শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ডেইলি মেইল।
চীন থেকে দেশে দেশে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে সৃষ্ট করোনা ভাইরাস এরই মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ইউরোপ-আমেরিকার ১২টি দেশে পৌঁছে গেছে। এমনকি আমাদের পাশের দেশ নেপালেও এনসিওভি ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩০০ ছাড়িয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ নানা উদ্যোগ নিয়েছে।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের নিবিড় বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ দুই দেশে যাতায়াত করেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশেও এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (হেলথ ইমার্জেন্সি ও অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম) ডা. আয়েশা আক্তার জানান, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের সব প্রবেশ দ্বারে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এখনও এ ধরনের কোনো রোগীর তথ্য পাওয়া যায়নি।
চীনে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা শনিবার পর্যন্ত এক হাজার ২৮৭তে পৌঁছেছে বলে দেশটির ন্যাশনাল হেলথ কমিশন নিশ্চিত করেছে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে নিউমোনিয়া সদৃশ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ২৬ থেকে বেড়ে ৪১-এ দাঁড়িয়েছে। মৃতদের মধ্যে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে লড়াইরত এক চিকিৎসকও আছেন। উহানে জিনহুয়া হাসপাতালের ৬২ বছর বয়সী চিকিৎসক লিয়াং উডংয়ের মৃত্যুর খবর জানিয়ে গণমাধ্যম। উহানেই প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটির প্রথম দেখা মেলে। সংক্রমণের বিস্তৃতি ঠেকাতে কয়েকদিন ধরে শহরটিকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে।
চীনের বাইরে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, নেপাল, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায়ও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। উহান থেকে ১৯ জানুয়ারি আসা এক চীনা নাগরিকের শরীরে করোনা ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। মেলবোর্নের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৫০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির পরিস্থিতি স্থিতিশীল বলেও জানিয়েছে তারা। শুক্রবার সন্ধ্যায় ফরাসি কর্তৃপক্ষ ইউরোপে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তির উপস্থিতির খবর নিশ্চিত করে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন জানিয়েছে, তারা প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত সন্দেহে ৬৩ জনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন; এর মধ্যে দুই ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। আক্রান্ত দুই ব্যক্তিই উহান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। চীনে পড়তে যাওয়া এক শিক্ষার্থীর দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়ার কথা জানিয়েছে নেপাল। শুক্রবার এক ঘোষণায় দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ একথা জানায়। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষও তিন নাগরিকের শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি শনাক্তের তথ্য দেয়।
গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ভাইরাসটির কারণে চীনে জরুরি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে ঘোষণা করলেও এখনি আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেনি বলে জানিয়েছিলো। চীনা নববর্ষের সপ্তাহব্যাপী ছুটির মধ্যে দেশটির কোটি কোটি মানুষ একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে যাতায়াত করলে ভাইরাসটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গণপরিবহন বন্ধ করায় উহান ও পার্শ্ববর্তী হুয়াংগ্যাং শহরের অন্তত দুই কোটি মানুষ কার্যত আটকা পড়েছে। উহানের সঙ্গে বিমান ও রেল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। উহানের সর্বত্র ‘ফেসমাস্ক’ পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে শহরটি একটি ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়েছে বলে বাসিন্দারা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে।
স্থল, সমুদ্র ও বিমানবন্দরে সতর্কতা: চীনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার বসানো হয়েছে। চিকিৎসক, নার্সসহ অতিরিক্ত সেবাকর্মী নিযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি সার্বিকভাবে প্রস্তুতি রাখতে দেশের দুটি সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও স্ক্রিনিং শুরু হয়েছে। বিমানবন্দরের অ্যারাইভ্যাল এবং ভিআইপি টার্মিনালে থার্মাল স্ক্যানার বসানো হয়েছে। প্রত্যেক যাত্রীকে স্ক্যানারের ভেতর দিয়ে আসতে হয়। কোনো যাত্রীর গায়ে অতিরিক্ত তাপমাত্রা থাকলে স্ক্যানারে ধরা পড়ে। তখন যাত্রীর তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয় এবং তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনও এনসিওভি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি। চীনে এ ভাইরাস চিহ্নিত হওয়ার পর থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন, এয়ারলাইন্সগুলো এবং এভিয়েশনে কাজ করা সবাইকে সচেতন করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সার্বক্ষণিক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। বিমানবন্দরে সব যাত্রীর হাতে একটি সচেতনতামূলক নীল কার্ড দেয়া হচ্ছে। বিমানবন্দরের এলইডি মনিটরে রোগের লক্ষণগুলো জানানো হচ্ছে। লক্ষণগুলো কারও থাকলে তাকে হেলথ ডেস্কে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। এছাড়া আইইডিসিআর চারটি হটলাইনও চলু করেছে। চীন বা অন্য কোনো দেশ ভ্রমণ করে পরবর্তী ১৪ দিনের মধ্যে কেউ যদি জ্বর, শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন তাহলে কয়েকটি নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। নম্বরগুলো হল- ০১৯৩৭-১১০০১১, ০১৯৩৭-০০০০১১, ০১৯২৭-৭১১৭৮৪, ০১৯২৭-৭১১৭৮৫।
অধ্যাপক ফ্লোরা আরও বলেন, এসব হট নম্বরে প্রতিদিনই কিছু মানুষ ফোন করছে। চীন থেকে ভ্রমণ করে এসেছে এমন কিছু লোকের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের শরীরে কমন কোল্ডের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি।
ভাইরাসের ধরন ও সংক্রমণের তথ্য: আক্রান্ত রোগীদের কাছ থেকে ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করে তা গবেষণাগারে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। চীনের কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এ সংক্রমণ যে ভাইরাসের কারণে হচ্ছে সেটি আসলে এক ধরনের করোনাভাইরাস। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন ২০১৯ করোনা ভাইরাস। গবেষকরা বলছেন সামুদ্রিক মাছের বাজার এ ভাইরাসের উৎসস্থল। অনেক ধরনের করোনাভাইরাস থাকলেও ছয় ধরনের করোনাভাইরাস মানুষকে আক্রান্ত করে। গবেষকরা বলছেন, সাধারণ সর্দি, কিন্তু মারাত্মক ধরনের সংক্রমণ বা সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা সংক্ষেপে সার্স হচ্ছে এক ধরনের করোনাভাইরাস। ২০০২ সালে ৮০৯৮ জন আক্রান্ত হন। এরমধ্যে ৭৭৪ জন মারা যান।
করোনাভাইরাস সম্পর্কে এখনও খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এটি অত্যন্ত দ্রুত ছড়াতে পারে। এ ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে এটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ ফ্লু বা ঠা-া লাগার মতো করে এ ভাইরাস হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ভাইরাস সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ হল- শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও কাশি। পরে দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়া, নিউমোনিয়া এমনকি মৃত্যু ঘটতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে প্রায় ৫ দিন লাগে। প্রথম লক্ষণ জ্বর। এরপর শুকনো কাশি দেখা দেয়। এক সপ্তাহের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
করোনাভাইরাসের চিকিৎসা: করোনাভাইরাসের চিকিৎসা প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী বলেন, ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এর টিকা বা ভ্যাকসিন নেই। কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা ব্যবস্থাও নেই। মূলত রোগীর লক্ষণ দেখে এর চিকিৎসা করতে হবে। রোগীর জ্বর হলে জ্বরের চিকিৎসা, শ্বাসকষ্ট হলে সেই চিকিৎসা এমনকি কোনো অর্গান ফেউলিউর হলে সেই চিকিৎসা করা হয়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ রোগ থেকে নিরাপদ থাকতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে (ভাইরাস বাহক) এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়া বারবার হাত ভালোভাবে ধোয়া, হাত দিয়ে নাক-মুখ স্পর্শ না করা, ঘরের বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করা উচিত।
উহানে ৪০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আটকা পড়েছে: উহান শহরে আটকাপড়া ৪০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। দেশে ফেরার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা আকুতি জানিয়েছেন। এদিকে, চীনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, উহান শহরে ৩০০ থেকে ৪০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আটকা পড়েছে। তাদের সহায়তা দিতে দূতাবাস কাজ করছে। বেইজিংয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস আটকে পড়াদের সহযোগিতার জন্য একটি হটলাইন নম্বর চালু করেছে। নম্বরটি হল +৮৬১৭৮০১১১৬০০৫। নম্বরটি ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। উহানে থাকা বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন, সেখানকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন ৫০০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। উহান থেকে বাস, ট্রেন ও বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বেশিরভাগ মানুষ ঘরে থাকছেন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় খাবার সংকটেরও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে করোনাভাইরাসে কোনো বাংলাদেশি আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। হুবেই ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে মেকানিক্যাল অ্যান্ড অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী রাকিবুল তূর্য (২৩) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উহানে তাদের অবস্থা জানিয়ে পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, সম্প্রতি চীনে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শহর উহানে বাস করছি। এখানে আমরা প্রায় ৫০০ জনেরও অধিক বাংলাদেশি উহানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত। উহান থেকে বহির্গামী সব বাস-ট্রেন ও বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমরা চাইলেও এখন নিজ দেশে ফিরে যেতে পারছি না। তিনি আরও লিখেছেন, বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আমাদের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে- এমন খবর বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রচার করা হলেও এ খবর ভিত্তিহীন। এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো খোঁজ নেয়া হয়নি। আমরা সবাই কঠিন মুহূর্ত পার করছি। পিএইচডি করতে যাওয়া ইমতিয়াজ শরিফ ফেসবুক ওয়ালে লেখেন, ইউনিভার্সিটিতে চলছে শীতকালীন ছুটি। ফলে ক্যাস্পাস ফাঁকা, উহান শহরটা একদম জনশূন্য। আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। তবুও থেমে নেই জীবন। চলছি চলার মতো করে।
চীন থেকে দেশে ফিরে এক গবেষকের উদ্বেগ: ‘করোনাভাইরাস’ প্রতিরোধে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ব্যবস্থা না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চীন থেকে দেশে আসা এক পিএইচডি গবেষক। চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, ঢাকা থেকে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে পৌঁছান ওই ব্যক্তি। এর আগে তিনি চীন থেকে মঙ্গলবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশে আসেন। পিএইচডি গবেষক ফায়সাল করিম বলেন, চট্টগ্রাম শাহ আমানতে ‘করোনাভাইরাস’ শনাক্তে স্ক্রিনিং (পরীক্ষা) করার কোনো যন্ত্রপাতি নেই। তাকে স্ক্রিনিং করা হয়নি। এমনকি তিনি আক্রান্ত কিনা এ বিষয়েও কোনো প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়নি। চট্টগ্রামের নগরীর পাঁচলাইশ থানার শুলকবহর এলাকার বাসিন্দা ফায়সাল করিম সেন্ট্রাল চায়না বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে পিএইচডি গবেষণা করছেন।
তবে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার সরওয়ার-ই-জামান জানিয়েছেন, চীন থেকে চট্টগ্রামে সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। দুবাই ও ভারত হয়ে কানেকটিং ফ্লাইটে চীনের যাত্রীরা চট্টগ্রামে আসেন। এ ধরনের কানেকটিং ফ্লাইটের কোনো যাত্রী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিনা সেটির ওপর নজর রাখছেন চিকিৎসকরা।