স্টাফ রিপোর্টার: চৌদ্দ বছর আগে ভারত সীমান্তে কাজ করতে গিয়ে কুড়িয়ে পাওয়া মূক ও বধির কিশোরকে তার আপন ঠিকানায় ফিরিয়ে দেয়ার সংগ্রাম শুরু করেছেন ছয়ঘরিয়ার আরিফুল। দীর্ঘদিন ধরে টাকা জমিয়ে পাসপোর্ট করে ভিসা নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাস্তায় নেমেছেন তিনি। সীমান্তের নির্জনে বসে কাঁদতে থাকা সেই কিশোরকে টানা ১৪ বছর নিজের কাছে রাখার পর তাকে তার আপন ঠিকানায় পৌঁছে দেয়ার এ সংগ্রামকে অনেকেই হিন্দি সিনেমা ‘বাজরাঙ্গি ভাইজান’ সিনেমার সাথে তুলনা করে বলেছেন, সিনেমা ছিলো পাকিস্তান সীমান্তের একটি কল্পিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে। আর আরিফুল নেমেছে বাস্তব বাজরাঙ্গি ভাইজান হয়ে।
ভারতের একটি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, ১৪ বছর আগে চুয়াডাঙ্গা দর্শনার নিকটস্থ গ্রামের কৃষিপরিবারের ছেলে আরিফুল সীমান্তে কৃষিকাজ করতে গিয়ে পেয়েছিলো এক কিশোরকে। সে কথা বলতে পারে না। কানে শোনে না। ঠিকানাও দিতে পারেনি সে। কুড়িয়ে পাওয়া ওই মূক ও বধির কোন ধর্মের, কোন জাতের তা না ভেবে নিজের বাড়িতে নিয়ে আপন ভাইয়ের মতোই পাশে রেখেছে। ভেবেছে একদিন ওকে ওর নিজের ঠিকানায় ফিরিয়ে দেবোই দেবো। কিন্তু কীভাবে? ভারত সীমান্তে পাওয়া কিশোর ভারতের না হলে ওর নিশ্চয় কেউ কেউ না খুঁজতো। ভারতেই যখন ওর বাড়ি তখন ওখানে যেতে হলে করতে হবে পাসপোর্ট। নিতে হবে ভিসা। অতো টাকা পাবো কোথায়? প্রান্তিক চাষি পরিবারের ছেলে আরিফুল কষ্ঠার্জিত অর্থ গুছিয়ে সম্প্রতি পাসপোর্ট করে। ভারতের ভিসাও নেয়। কয়েকদিন আগে ওই কিশোরের ছবি নিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। সেখানে এর ওর ছবি দেখিয়ে ঠিকানা নেয়ার চেষ্টায় মেতেছে এখন। গত বৃহস্পতিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাস্তায় তার ঘোরার দৃশ্য ধরাপড়ে সাংবাদিকের ক্যামেরায়। উঠে আসে ভিনদেশী অজানা ধর্মের এক বধির কিশোরের জন্য তার সংগ্রামের চিত্র।
গত কয়েকদিন ধরে আরিফুল ঘুরেছে ভারত অভ্যন্তরের বাংলাদেশ সীমন্তবর্তী এলাকা হাঁসখালি, গাজনা, বগুলা, গেদেসহ আশেপাশের বহু এলাকা। সর্বশেষ প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ওই মূক ও বধির কিশোরের ঠিকানা খুঁজে পায়নি আরিফুল।