দিনদুপুরে গুঁড়িয়ে দেয়া হলো তিন বর্গাচাষীর পানবরজ

আলমডাঙ্গার ভোগাইল বগাদী গ্রামে বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে আদালতে মামলা

আলমডাঙ্গা ব্যুরো/আসমানখালী প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গায় তিন বর্গাচাষীর বরজ কেটে ও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। উপজেলার ভোগাইল বগাদী গ্রামের পূর্বপাড়া মাঠে বিরোধপূর্ণ জমির পানবরজ গত বৃহস্পতিবার দিনদুপুরে গুঁড়িয়ে দেয় প্রতিপক্ষের লোকজন। এতে তিন বর্গাচাষীর প্রায় ৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পুলিশ বলেছে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গ্রামসূত্রে জানা যায়, ভোগাইল বগাদী গ্রামের মৃত আবদুল জব্বার ম-লের ছেলে মন্টু ম-লের ভোগদখলে থাকা ৩ বিঘা জমি একই গ্রামের মহাবুল হক, মামুনুর রশীদ ও মিনারুল ইসলাম লিজ নিয়ে পানবরজ করেছেন। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে প্রতিপক্ষের লোকজন ভাড়াটে লোকজন এনে বরজ কেটে গুঁড়িয়ে দেয়। পানচাষী মিনারুল বলেন, অনেক কষ্ট করে ওই জমি লিজ নিয়ে পানবরজ করেছিলাম। পানচাষে খুব বেশি পরিশ্রম। এতো পরিশ্রমের ফসল আমার শেষ করে দিলো।
বর্গাচাষী মামুনুর রশীদ জানান, পানের দাম ভালো। পানও আল্লাহর রহমতে ভালো হয়েছিলো। ভেবেছিলাম পান বিক্রি করে গরু কিনবো। মোটাতাজা করে কোরবানির হাটে বিক্রি করবো। কিন্তু শত্রুরা তা হতে দিলো না।
জমির মালিক মন্টুর ছেলে রাজু ও বর্গাচাষী মিনারুল অভিযোগ করে জানান, আদালতে রেকর্ড সংশোধনীর মামলা চলছে। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই রায় পাওয়া যেতো। কিন্তু আসমানখালী ফাঁড়ি পুলিশের এসআই মোহাব্বত আলীর উসকানিতে গ্রামের মৃত বিশারত আলী ম-লের ছেলে আবদুল গনি, আবদুল গনির ছেলে আবদুর রহিম, মৃত বিশুর ছেলে মনোয়ার, আয়ুব আলীর ছেলে আরিফ, শমসের আলীর ছেলে হাসিবুল ও মোকাদ্দেস আলী এ জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছে।
জিন্নাত আলীর ছেলে ইউনুস আলী অভিযোগ করে বলেন ‘আমি সকালে আসমানখালী বাজার থেকে পান বিক্রি করে বাড়ি ফিরছিলাম। আমাকে সোহাগ মোড়ে থামিয়ে গলায় দা ধরেন মোকাদ্দেস ও হাসিবুল। তারা হুমকি দেন জমির পাশে গেলে জবাই করে ফেলবেন।
অভিযুক্ত মোকাদ্দেস আলী জানান, আমাদের বিরুদ্ধে যা বলা হচ্ছে সব মিথ্যা। আমি বা অভিযুক্ত কেউ পানক্ষেত কেটে দেয়ার ঘটনায় জড়িত নই। তাদের বাড়ি থেকে ঘটনাস্থল প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে। এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।’ এসআই মোহাব্বত আলী জানান, তিনি উসকানি দিয়ে পানক্ষেত নষ্ট করিয়েছেন এ অভিযোগ মিথ্যা। জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। আদালতের চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত উভয়পক্ষকে জমি দখল করতে বিরত থাকতে নোটিশ দেয়া হয়েছে। আলমডাঙ্গা থানার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে। তদন্তের পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আদালতে মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত কোনো পক্ষকেই বিবদমান জমির দখল নিতে দেয়া হবে না।’