স্বাদে মন জয় করছে মেহেরপুরের পেয়ারা

মাজেদুল হক মানিক: মেহেরপুর জেলায় এখন ব্যাপকভাবে পেয়ারা বেচাকেনা হচ্ছে। ক্রেতাদের হাতের নাগালে সারা বছরেই মিলছে সুস্বাদু পেয়ারা। রোগীর পথ্য, অতিথি আপ্যায়নসহ পরিবারের খাবার তালিকায় এখন ঠাঁই পাচ্ছে দেশীয় সহজলভ্য এই ফলটি। মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় ও থাই জাতের পেয়ারার বাগান করে অনেক চাষি এখন স্বাবলম্বী। উন্নত ও উচ্চফলনশীল জাতের পেয়ারার চারা পাওয়া যায় স্থানীয় নার্সারিতে। যে জাত সারা বছরই পেয়ারা উৎপাদনে সক্ষম। এতে বছরের সব মাসেই বাজারে পেয়ারার সরবরাহ থাকছে। তাছাড়া দামেও কৃষক ও ক্রেতারা সন্তুষ্ট তাই পেয়ারা উৎপাদন ও বেচাকেনার খাত প্রশ হচ্ছে।
পেয়ারা ক্রেতা রাইপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, স্থানীয়ভাবে যে পেয়ারা উৎপাদন হচ্ছে তা স্বাদে অতুলনীয়। বিদেশি কোনো ফলের চেয়ে পেয়ারা স্বাদ কম নয়। তাছাড়া পুষ্টিগুন তো পেয়ারাতে বেশি। এ কারণে আমার মতো অনেকেই পরিবারের জন্য পেয়ারা কিনছেন। এখন প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
গাংনী বাজারের ফল ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদেশি ফলের পাশাপাশি এখন আমরা পেয়ারাও বিক্রি করছি। ফলের তালিকায় দেশীয় এই ফলটি জায়গা করে নিচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহর ও বাজারগুলোতে পেয়ারা কেটে মসলা মাখিয়ে বিক্রির দৃশ্য অহরহ। পথচারীরা সরিষা ও মসলা মাখানো পেয়ারার প্রতি খুবই আকৃষ্ট। বাজারের মোড়, গুরুত্বপূর্ণ অফিসের সামনে কিংবা স্কুল কলেজের সামনে এভাবে পেয়ারা মাখিয়ে বিক্রি করে রোজগার করছেন দরিদ্র পরিবারের অনেকে। পেয়ারার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সাদিয়া সুলতানা বলেন, পেয়ারা পুষ্টিগুণ অন্য ফলের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনেক বেশি। যেমন আপেলে ৫২ কিলো ক্যালোরি আর পেয়ারাতে ৬৮ কিলো ক্যালোরি রয়েছে। পেয়ারায় পটাসিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ও ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনের পরিমাণ আপেলের চেয়ে অনেক বেশি। তাছাড়া পেয়ারা সহজলভ্য। তাই একজন মানুষের সুস্থ থাকার জন্য দিনে একটি পেয়ারা খাওয়া সম্ভব।
এদিকে বাসাবাড়িতে অতিথি আপ্যায়ন ও বিভিন্ন সরকারি দফতরের অনুষ্ঠানে নাস্তা হিসেবে পেয়ারা দেয়ার প্রচলন শুরু হয়েছে। এখন প্রায়ই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রীর সাথে পেয়ারা দেয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী জহির উদ্দীন বলেন, বিভিন্ন দিক বিবেচনায় এখন নাস্তায় আমরা পেয়ারা দেয়।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, আম ও লিচুতে সম্মৃদ্ধ মেহেরপুর জেলায় এখন পেয়ারা আবাদেও সম্মৃদ্ধ হচ্ছে। দেশীয় ফল আবাদে উৎসাহ দেয়ার জন্য উন্নত চারা ও প্রযুক্তি সম্পর্কে আমরা চাষিদের সচেতন করছি।