কাজ সম্পন্ন হলে কৃষি-সেচ ও মৎস্য সম্পদের হবে উন্নয়ন
বেগমপুর প্রতিনিধি: বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়নাধীন ‘৬৪টি জেলার অভ্যন্তরীন ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পূনঃখনন প্রকল্প ১ম পর্যায়’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় চুয়াডাঙ্গার চিত্রানদী পুনঃখনন কাজ পরিদর্শন করেন কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পওর সার্কেল মনিরুজ্জামান। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দোস্ত, কুন্দিপুর, কুকিয়াচাঁদপুর, শ্রীকোল এলাকার চিত্রানদীর ১০ কিঃমিঃ পুনঃখনন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি দেখেন। এসময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ উদ্যোগে বাস্তবায়িত এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এ অঞ্চলের আমূল পরিবর্তন হবে। বর্তমান সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বর্ষা মরসুমে পর্যায়ক্রমিক বন্যা, শুষ্ক মরসুমে পানির দু®প্রাপ্যতা ও ভূ- গর্ভস্থ পানির নিচে নেমে যাওয়া ইত্যাদি সমাধান হবে। ফলে প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা ব্যায়ে দর্শনা উৎসমুখ থেকে কালুপোল পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার চিত্রা নদীর পুন:খনন কাজ শুরু হয়েছে। যা চলতি বছর ৩১ মে শেষ হবার কথা রয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুবীর কুমার ভট্টাচার্য্য, শাখা কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন, কাজী মহাসীন উদ্দিন, মাখালডাঙ্গা ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি ঠিকাদার শ্রী বিশ^জিৎ সাহা, আনারুল ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, এক সময় নদীকে কেন্দ্র করে হাট-বাজার বসতো। তার কারণ ছিলো নদীপথে পরিবহনের সুবিধা। কিন্তু বর্তমান সময়ে সড়কপথের যতই উন্নতি করা হোক না কেনো নদীপথের স্থান দখল করতে পারেনি। দীর্ঘ কয়েক যুগে নদীপথের দিকে সরকারের দৃষ্টি কম থাকায় এক্ষেত্রে অচলাবস্থা বিরাজ করছিলো। অনেক নদী মরেও গেছে। যা বর্তমানে টিকে আছে তাও এখন ভরাট হয়ে সরু খালের দশায় উপনীত হয়েছে। অনেক এলাকায় নদী মরে যাওয়ার কারণে কৃষিকাজের জন্য সেচ ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। তাই নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। অতীতে সরকার নদীকে সচল করার লক্ষ্যে শুধু মেগা প্রকল্প গ্রহণ করছেন। শুধু নদী খনন করলেই চলবে না। নিতে হবে নদীর শাখা-উপশাখা খননের প্রকল্প। কারণ নদীর শাখা-উপশাখা না থাকলে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বিরাণ ভূমিতে পরিণত হবে। তাতে করে কৃষক ফসল ফলাতে পারবে না। দেশের জিডিপির বড় অংশই আসে কৃষকের কাছ থেকে। উৎপাদন ভালো হলে দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকে। তাই নদী খননের পাশাপাশি খাল খননেরও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। দেশে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা নিঃসন্দেহে সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এতে দেশের মানুষ উপকারভোগী হবেন তাতে কারো কোনো সন্দেহ নেই। বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরে বর্তমান সরকার নদীকে পুনঃজ্জীবিত করতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ৬৪টি জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্প (১ম পর্যায়) শিরোনামে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে নদীর পুনঃখনন কাজ শুরু করেছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে নদী ফিরে পাবে তার হারানো গতিপথ। কৃষি-সেচ ও মৎস্য সম্পদের হবে উন্নয়ন। রক্ষা পাবে জীব বৈচিত্র্য ও আবহমান বাংলার সংস্কৃতি। সেই সাথে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নদীর দুই পাড়ে গড়ে উঠবে সবুজ বনায়ন বেষ্টনি।