ইসলাম রকিব: মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপের উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল ৩টায় ওই চ্যাম্পিয়নশীপের উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। চুয়াডাঙ্গা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের কৃতি ফুটবলার আব্দুল মোমেন জোয়ার্দ্দার, চুয়াডাঙ্গা জেলা আ.লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, জেলা প্রশাসনের এনডিসি সিব্বির আহম্মেদ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার, জেলা মহিলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুন্নাহার কাকলী, সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকসহ জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাগণ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবদ্দশায় কখনো নিজের ও পরিবারের কথা ভাবেননি। সবসময় দেশ ও দেশের মানুষের কথা ভেবেছিলেন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও খেলাধুলার উন্নয়ন নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠন তৈরী করে দেশের খেলাধুলাকে বেগবান করেছিলেন। এক কথায় বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপামর জনসাধারণের সকল কাজের অনুপ্রেরণার উৎস। তাই আজ সময় এসেছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষির্কীর এ আয়োজনে বিভিন্ন খেলাধুলার মাধ্যমে তাকে স্মরণ করা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথী উভয় দলের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, খেলাধুলা ও লেখাপড়ার মাধ্যমে নিজেদেরকে মেলে ধরে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। আর এজন্য প্রয়োজন নিয়মিত অনুশীলন করা।
অনুষ্ঠানের সভাপতি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে সারাবছর চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন মাঠে খেলাধুলা অব্যহত রাখার প্রত্যয় নিয়ে শুরু হলো বঙ্গবন্ধু জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ। এ খেলাধুলার মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা জেলা তথা বাংলাদেশের খেলাধুলা আরো বেগবান হবে, হবে সমৃদ্ধ। এর মাধ্যমে আমরা নন্দিত মানুষ হতে চাই আমাদের সকল কাজে-কর্মে কথাবার্তায়। এ জন্য প্রয়োজন নিয়মিত খেলাধুলা ও সুস্থ বিনোদনের যথোপযুক্ত মাধ্যম। আমি মনে করি বঙ্গবন্ধু জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ সেটি অনেকাংশে পূরণ করবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষির্কী উপলক্ষে আয়োজিত ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ সাধারণ মানুষদের কিছুটা হলেও নির্মল বিনোদনের খোরাক যোগাবে। আর যে সময়টুকু ব্যয় করে জনগণ ও যুবসমাজ খেলাধুলা উপভোগ করবেন অন্তত: সেই সময়টুকু তো মাদক বা মাদকের মতো ভয়াবহ সঙ্গ থেকে বিরত থাকতে পারবে। চাকরিগত কারণে আমাদেরকে সমাজের উঁচু তলার মানুষ থেকে শুরু করে নি¤œশ্রেণির মানুষদের সাথে মিশতে হয়। তবে দেখা গেছে খেলোয়াড় ও খেলার সাথে সম্পর্কযুক্ত মানুষগুলো সবসময় উদর ও ভালো মানুষ হয়। তাই এ আয়োজন থেকে দেশে যেমন ভালো মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি ভাবে তেমনই ভালো খেলোয়াড়ও তৈরী হবে।
উদ্বোধনী বক্তব্য শেষে প্রধান অতিথি ও অতিথিগণ দু-দলের খেলোয়াড়দের সাথে করমর্দন করেন এবং ফুটবলে কিক দিয়ে খেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। চুয়াডাঙ্গা ডিএফ’র সভাপতি রফিকুল ইসলামের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় মাহমুদুল হক লিটন, মানিক, এনটিভির বিশেষ প্রতিনিধি আহম্মেদ পিপুল, সমাজসেবক হাফিজুর রহমান মালিক বাবু, আজিজুল হক, সাবেক কৃতি ফুটবলার আব্দুল কাদের জোয়ার্দ্দার, রেজাউল হক জোয়ার্দ্দার রেজা, এ নাসির জোয়ার্দ্দার, জাহাঙ্গীর আলম টিপু, শহীদুল কদর জোয়ার্দ্দার, জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সেলিনা খাতুন, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাহাজাদী মিলিসহ জেলা ক্রীড়া সংস্থা, জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা, ডিএফএর সকল কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
গতকালের উদ্বোধনী খেলায় স্বাগতিক চুয়াডাঙ্গা জেলা দল ২-১ গোলে জয়লাভ করে শুভ সূচনা করে। চুয়াডাঙ্গার পক্ষে গোল দুটি করেন তরিকুল ইসলাম তরু ও সাম্মী। চুয়াডাঙ্গা দলের বিপ্পার আত্মঘাতি গোলের সুবাদে মেহেরপুর জেলা দলের ঝুলিতে যোগ হয় ১টি গোল। গতকালের খেলাটি পরিচালনা করেন ঢাকা থেকে আগত ফুটবল রেফারি সজিব কুমার ব্যানার্জি চন্দন, শামীম কবীর, মাসুদুর রহমান ও কো চিং। আগামী ২১ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা জেলা দল হোম এন্ড এ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলবে মেহেরপুর জেলা দলের বিপক্ষে।