পথপারে সহযোগী দু’যুবতীর ব্যাগ দেখতে
না পারার কষ্টে ঝরলো প্রতারিতের অশ্রু
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের দু’প্রান্তে পরপর দু’দিন পৃথক দু’নারী প্রতারিত হয়েছেন। পরশু চুয়াডাঙ্গা স্টেশনের অদূরবর্তী পুরাতন স্টেডিয়ামের নিকট দুজন পুরুষ সাধু সেজে মধ্যবয়সী এক নারীর নিকট থেকে কৌশলে হাতের একটি আংটি ও নগদ আড়াই হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। আর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র শহীদ হাসান চত্বরের প্রতারিত নারী শাহের রাণী হারিয়েছেন ৫ হাজার ৩শ ৬৫ টাকা।
চুয়াডাঙ্গা শহীদ হাসান চত্বরে প্রতারিত নারী শাহেরা রাণী (৫২) জেলা সদরের হায়দারপুরের মৃত গনেস সরকারের স্ত্রী। এ নারীর অভিযোগ, ‘রাস্তা পার করার কথা বলে পাশে ঘেষে ব্যাগ দু’যুবতী ব্যাগ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ওই দু’যুবতীর ব্যাগ দেখার জন্য বললেও আমার কথা কেউ শোনেনি। উল্টো ওই দু’যুবতীকে দ্রুত সরে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে কয়েকজন।’ অবশ্য বাজারের ব্যবসায়ীদের কয়েকজন বলেছেন, ‘টাকা হারানো নারী যে দু’যুবতীকে সন্দেহ করছিলেন; তারা বোরকা পরা ছিলো। তাছাড়া ওরাই যদি টাকা চুরি করবে, তা হলে ওই শহীদ হাসান চত্বরের রাস্তা পার করে টাকা নেয়ার পরও কি বাজারের পুরাতনগলির মাঝ পর্যন্ত পাশে থাকতো? এ কারণেই সন্দেহভাজন দু’যুবতীর ব্যাগ তল্লাশিতে অনেকেই বাধা হয়ে দাঁড়ায় কয়েকজন।’ পক্ষান্তরে ভিন্ন অভিমত ব্যক্ত করে কয়েকজন বলেছেন, ‘সন্দেহভাজন দু’যুবতীর ব্যাগ তল্লাশি করে দেখলে টাকাটা হয়তো পাওয়া যেতেও পারতো। হুট করে ওদের চলে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া ঠিক হয়নি।’
শাহেরা রাণী শেষ পর্যন্ত চোখের পানি মুছতে মুছতে বাড়ির পথে রওনা হন। এ সময় তিনি বলেন, পোস্ট অফিসে জমানো টাকার মধ্য থেকে ৫ হাজার টাকা তুলি। আর বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বাড়ি থেকে আনি ৩শ ৮০ টাকা। খরচ বাদে মোট ৫ হাজার ৩শ ৬৫ টাকা ছিলো। টাকাগুলো ব্যাগে রেখে চৌরাস্তার মোড় পার হচ্ছিলাম। এমন সময় বোরকা পরা দু’যুবতী পাশে এসে বলে চাচি আসুন আমরা আপনাকে পার করে দিচ্ছি। দুজন দু’পাশে ঘেষে রাস্তা পার করলো। বাজারের গলির মধ্যে ঢুকেই যখন দেখি ব্যাগে টাকা নেই। তখনই সন্দেহ করি ওই যুবতীই টাকাগুলো নিয়েছে। কিন্তু আমার কথা শুনলো না। আমাকে ওদের ব্যাগ দেখতে দিলো না। ব্যাগ দেখতে দিলে ঠিকই আমি টাকাগুলো পেতাম।
অপরদিকে গতপরশু সকাল ১১টার চুয়াডাঙ্গা স্টেশনের অদূরে নূরগরের এক নারীকে পেয়ে দু’প্রতারক কৌশলে ৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। জানা গেছে, চেম্বারের পরিচালক গোলাম মর্তুজার স্ত্রী কোটচাঁদপুরের উদ্দেশে বাড়ি থেকে অটোযোগে রওনা হন। স্টেশনের অদূরবর্তী পুরাতন স্টেডিয়ামের নিকট দু’প্রতারকের কবলে পড়েন তিনি। ঝাঁড়ফুকের নাটক করে সোনার গয়নাসহ নগদ টাকা হাতিয়ে নিয়ে দু’প্রতারক পালিয়ে যায়। ওইদিনই এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। গতকাল শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দু’প্রতারকের সন্ধান মেলেনি। অনেকেই বলেছেন, মাঝে মাঝেই চুয়াডাঙ্গায় এ ধরণের প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। প্রতিকার মিলছে না।