মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর সদর উপজেলার বর্শিবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ ও নিয়োগ বাণিজ্যের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বর্শিবাড়িয়া গ্রামবাসীর পক্ষে মসিউর রহমান ও শারমীন নাহার। গতকাল বিকেলে বর্শিবাড়িয়া গ্রামে এ সংবাদ সম্মেলনে মসিউর রহমান বলেন, বর্শিবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ও বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফার যোগসাজসে বর্শিবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ ও নিয়োগ বাণিজ্য চলছে।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে গত ২৮ জানুয়ারি ২০০৫ সালে ওই বিদ্যালয়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে অদ্যবধি যথাযথভাবে ওই পদে দায়িত্ব পালন করে আসছি আমি। এছাড়া একই তারিখে আমার স্ত্রী শারমীন নাহার সহকারী শিক্ষিকা (বাংলা) হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন এবং অদ্যবধি শিক্ষকতা করে আসছেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় বর্শিবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত হওয়ার পর আমাদেরকে কোনো ধরনের নোটিশ বা চাকরি হতে অব্যাহতিপত্র না দিয়ে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও বাংলা বিষয়ে যথাক্রমে দিলারা পারভিন ও ইয়াসিন হাসানকে এমপিওভুক্তির জন্য ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষক সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ও আর্থিক লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে গত ৯ জুলাই ২০১৯ তারিখে সুপারিশ পাঠান। যা সম্পূর্ণ আইন ও ন্যায় বিচার পরিপন্থি। তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কলাম আজাদ ও ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতির অন্যায় সহযোগিতায় বর্তমান প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী মোছা. নারগিস খাতুনকে সহকারী শিক্ষকসহ (সমাজ বিজ্ঞান) সহকারী শিক্ষক শ্রেণি ৬ষ্ঠ (সমাজ বিজ্ঞান) ও সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদে এমপিওভুক্তির জন্য সুপারিশ করেছেন এবং সহকারী শিক্ষক (গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান) আব্দুস সবুর ওরফে ডালিমকে ২৮ জুন ২০০৩ তারিখে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি ২০১১ সালের পর বর্শিবাড়িয়া বিদ্যালয়ে এসেছেন। আবার ধর্মীয় শিক্ষক মো. শরিফুলের নিয়োগ দিয়েছেন ২৮ জুন ২০০৩ তারিখে। কিšুÍ তিনি দরবেশপুর দাখিল মাদরাসায় ২০১৩ সাল পর্যন্ত চাকরি করে এমপিওতে টাকা তুলে এসেছেন। সহকারী শিক্ষক মো. লিয়াকত হোসেনকে শরীর চর্চা শিক্ষক হিসেবে ২৮ জুন ২০০৩ তারিখে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি অদ্যবধি কোনোদিন বিদ্যালয়ে আসেননি। অপরদিকে সহকারী শিক্ষক মো. শরিফুল ইসলাম রাজনগর দাখিল মাদরাসা মেহেরপুর অদ্যবধি এমপিওর মাধ্যমে টাকা তুলছেন আবার বর্শিবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ ২৫ জানুয়ারি ২০০৫ তারিখে মো. শরিফুল ইসলামকে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপত্র দেখাচ্ছেন। যা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ ও জালিয়াতি। সবচে আশ্চর্যের বিষয়টি হলো প্রধান শিক্ষক তার স্ত্রী মোছা. নার্গিস খাতুনকে ওই বিদ্যালয়ের ৩টি জায়গায় নিয়োগ প্রদান করেছেন। যেগুলো হচ্ছে- ১৫ জানুয়ারি ২০০৫ তারিখে সহকারী শিক্ষক (সামাজিকবিজ্ঞান), একই তারিখে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শাখা (সামাজিক বিজ্ঞান) শিক্ষক হিসেবে এবং সহকারী লাইব্রেরিয়ান হিসেবে ১৩ জুন ২০১১ তারিখে নিয়োগ দেন।
আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিগত ২৩ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে বর্শিবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত হয় এবং এমপিওভুক্তির তালিকা ২ জুলাই ২০১৯ তরিখে উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেন প্রধান শিক্ষক।
পরিতাপের বিষয় যে, একজন শিক্ষা কর্মকর্তা সঠিকভাবে কাগজপত্র যাচাইবাছাই না করে কিভাবে জেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেন। সবশেষে মসিউর রহমান বলেন, আমার পরিবর্তে সহকারী প্রধান শিক্ষক দিলারা পারভীন ও আমার স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা শারমীন নাহারের পরিবর্তে মো. ইয়াসিন হাসানের এমপিওভুক্তির সুপারিশ, প্রধান শিক্ষকের স্ত্রীর নাম এমপিওভুক্তির জন্য সুপারিশে পরপর তিনবার উল্লেখ করার বিষয়টি তদন্ত পূর্বক সুরাহা না করা পর্যন্ত বিদ্যালয়ের এমপিওভুক্তকরণ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার বিষয়ে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি।