পুলিশ সপ্তাহ সেবার মান বৃদ্ধির সহায়ক

গতকাল রোববার থেকে শুরু হয়েছে পুলিশ সপ্তাহ ২০২০। ৬ দিনব্যাপী এ সপ্তাহ শেষ হবে ১০ জানুয়ারি। রাজারবাগের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন পুলিশ সপ্তাহের। এবারের পুলিশ সপ্তাহে নতুন দাবি-দাওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘদিনের পুরোনো দাবি-দাওয়া একীভূত করে উপস্থাপন করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে।

এসব দাবির মধ্যে রয়েছে- পুলিশ মেডিকেল সার্ভিস গঠন, ক্যাডার পদে জনবল বৃদ্ধি, আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধি, যানবাহন প্রাধিকার প্রদান, পরিবারের দুই সদস্যের জন্য আজীবন রেশন সুবিধা বৃদ্ধি, পুলিশ স্পোর্টস ট্রেনিং কমপ্লেক্স স্থাপন ইত্যাদি। পুলিশ সপ্তাহে ২০১৯ সালে যারা প্রশংসনীয় কাজ করেছেন, এমন ৫৯৫ সদস্যকে তাদের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে আইজিপি ব্যাজ দেয়া হচ্ছে। পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এ পুরস্কার প্রদান করছেন।

দেশে প্রতিবছরই পুলিশ সপ্তাহ পালিত হয়ে থাকে। পুলিশের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এ ধরনের সপ্তাহ পালন খুবই প্রয়োজন বলা যায়। এ সপ্তাহে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নানা দাবি-দাওয়া উত্থাপন করা হয়। সেই দাবিগুলো পর্যালোচনা সাপেক্ষে কিছু দাবি পূরণ করা হয়। দাবি পূরণের মধ্যদিয়ে পুলিশের কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পায়, তারা নতুন উদ্যমে নিজেদের পেশাগত দায়িত্বে নিয়োজিত হতে পারে। এবারও পুলিশের পক্ষ থেকে যেসব দাবি-দাওয়া উত্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো যৌক্তিকতার ভিত্তিতে পূরণ করা হবে।

পুলিশ রাষ্ট্রের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ সেবাধর্মী সংস্থা। এ সংস্থার সদস্যরা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন, অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, এ দেশের পুলিশ জঙ্গিবাদ দমনসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকা-ে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে চলেছে। তবে এটাও ঠিক, পুলিশ সদস্যদের একটি অংশ তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন তো করছেই না, উল্টো নিজেরা জড়িত হয়ে পড়ছে নানা অপরাধমূলক কর্মকা-ে। পুলিশের এ ক্ষুদ্র অংশটির কারণে এ সংস্থার ভাবমূর্তি কখনও কখনও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এবার যেভাবে ৫৯৫ জন পুলিশ সদস্যকে ব্যাজ পরিয়ে দেয়া হবে, একইসঙ্গে এ সংস্থার অভিযুক্ত সদস্যদের বিরুদ্ধে নিতে হবে ব্যবস্থা।

এটা অস্বীকার করা যাবে না যে, কাজের ধরন অনুযায়ী পুলিশ সদস্যরা রাষ্ট্রের কাছ থেকে যথোপযুক্ত বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পান না। পুলিশের কাছ থেকে আশানুরূপ সেবা পেতে হলে তাদের সুযোগ-সুবিধার প্রতিও সুদৃষ্টি দিতে হবে। দ্বিতীয় কথা, পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে অবশ্যই। পুলিশ যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারে, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়ে পড়ে, তাহলে তাদের দ্বারা অপরাধ দমনের কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে না। এবারের পুলিশ সপ্তাহে এসব বিষয়ে বিশেষ নজর দেয়া হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।