বখতিয়ার হোসেন বকুল: দামুড়হুদায় কনের গণিত খাতায় বাল্যবিয়ে পড়ানো হচ্ছে। ৯৯৯ কলে এমন অভিযোগ পেয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম মুনিম লিংকন কালবিলম্ব না করে তাৎক্ষণিক ছুটে যান বিয়ে বাড়িতে। আটক করা হয় কনের পিতা মিজানুর রহমান, কাজী হাতিভাঙ্গা মাদারাসার সুপার মেহেদি হাসান এবং বর ভগিরথপুরের সাইফুলকে। জব্দ করা হয় কনের গণিত খাতাটি। বাল্যবিয়ের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাথে সাথে বসানো হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভ্রাম্যমাণ আদালতে কনের পিতার ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া কাজীর ৬ মাস এবং বরের ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম মুনিম লিংকন কনের পিতার বাড়ি হাতিভাঙ্গা গ্রামে এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এদিকে প্রতারণা করে কনের অঙ্ক খাতায় বাল্যবিয়ে পড়ানোর সাথে জড়িতদের জেল-জরিমানা করায় এলাকার সচেতন মহলের পক্ষ থেকে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতসূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ৯৯৯ থেকে দামুড়হুদা মডেল থানায় জানানো হয় চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের হাতিভাঙ্গা গ্রামের মিজানুর রহমানের দশম শ্রেণিতে পড়–য়া মেয়ে শামিমা খাতুনকে গোপনে বাল্যবিয়ে দেয়া হচ্ছে। ২০-২৫ জন বরযাত্রীসহ বর কনের বাড়িতে অবস্থান করছে। এমন সংবাদ পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি সুকুমার বিশ্বাস বিষয়টি সাথে সাথে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানান। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম মুনিম লিংকন ঘটনাটি জানার সাথে সাথে তাৎক্ষণিক ছুটে যান কনের পিতার বাড়ি হাতিভাঙ্গা গ্রামে। আটক করা হয় কনের পিতা মিজানুর রহমান, বর দামুড়হুদা উপজেলার ভগিরথপুর গ্রামের রাশেদুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩২) এবং বিয়ে পড়ানোর অপরাধে আটক করা হয় হাতিভাঙ্গা হাফিজিয়া কওমি মাদরাসার সুপার একই গ্রামের বরকত আলীর ছেলে মেহেদি হাসানকে। এসময় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কনের পিতা মিজানুর রহমানকে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ২০১৭ এর ৮ ধারায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে কনের গণিত খাতায় নামধাম লিখে বাল্যবিয়ে পড়ানোর অপরাধে কাজী মেহেদি হাসানকে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ২০১৭ এর ৯ ধারায় ৬ মাসের এবং বর সাইফুলকে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ২০১৭ এর ৭ ধারায় ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদ-ের আদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম মুনিম লিংকন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কাজে সহায়তা করেন দামুড়হুদা মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই শেখ রফিকুল ইসলাম ও উপজেলা আইসিটি টেকনিশিয়ান খাইরুল কবির দিনার।