এবারের প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ের চারটি সমাপনী পরীক্ষার ফল গত মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে। গত বছরের মতো এবারও এসব পরীক্ষার ফল মোটামুটি সন্তোষজনক বলা যায়। এবার পিইসি পাস করেছে ৯৫.৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী আর ইইসি পাস করেছে ৯৫.৯৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। জেএসসি ও জেডিসিতে গড় পাসের হার ৮৭.৯০ শতাংশ। গত কয়েক বছর ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে এসব সমাপনী পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর কত শতাংশ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে এ আলোচনা বিশেষ গুরুত্ব পায়। ফলে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা যায়। আর যারা জিপিএ-৫ পায়নি সেসব শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা হতাশ হন। যে কোনো পরীক্ষার ফল সন্তোষজনক হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা আনন্দিত হবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জিপিএ-৫ না পেলে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের হতাশ হওয়া উচিত নয়। কারণ যারা জিপিএ-৫ পায়নি তাদের কম মেধাবী ভাবার কোনো কারণ নেই। বিষয়টি উপলব্ধি করে জিপিএ-৫ তুলে দেয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
এটি যত দ্রুত তুলে দেয়া যায় ততোই মঙ্গল। বস্তুত অভিভাবকদের বড় দায়িত্ব হল শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান করা। শিক্ষার্থীরা উৎসাহ ও সুযোগ পেলে যে বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিতে সক্ষম হবে, এটা জোর দিয়ে বলা যায়। এখনও অনেক অঞ্চলে গ্রামের শিক্ষার্থীরা শহরের শিক্ষার্থীদের মতো সুযোগ পায় না। প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরাও যাতে শহরের শিক্ষার্থীদের মতো সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমান শিক্ষা পদ্ধতির কারণে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর মূল চিন্তা থাকে কী করে বেশি নম্বর পাওয়া যায়। কোনো কোনো অভিভাবকও শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে উৎসাহিত করেন। এতে সারা দেশে কোচিং সেন্টারের প্রভাব বাড়ছে। এই ব্যাধি শিক্ষার্থীদের কী ক্ষতি করছে, তা তাদের সামনে তুলে ধরতে হবে এবং এনসিটিবির পাঠ্যবই পড়ার বিষয়ে তাদের বিশেষভাবে উৎসাহিত করতে হবে। শিশুদের বিভিন্ন বিষয়ের গ্রন্থ পাঠে যতো বেশি সময় নির্ধারণ করা যাবে, নতুন বিষয়ে জানতে তারা তত বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবে।