চুয়াডাঙ্গায় ভিমরুল্লায় জোরপূর্বক জমি দখল করাকে কেন্দ্র করে একই পরিবারের ৩ জনকে পিটিয়ে আহত

ষ্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার ভিমরুল্লায় জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে একই পরিবারের ৩ জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে প্রতিপক্ষরা তাদেরকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। আহতরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের ভিমরুল্লা গোরস্থানপাড়ার মৃত আব্দুল হকের ছেলে মানিক মিয়া (৫০) তার স্ত্রী ঝর্না খাতুন (৪২) ও মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৭)। আহতদের মধ্যে ঝর্না খাতুনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়।
পরে আস্তে আস্তে তার শারীরিক অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হওযায় রাতেই রাজশাহীতে রেফার্ড করা হয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ঝর্না খাতুনের শয্যা পাশে থাকা স্বামী মানিক হোসেন বলেন, চুয়াডাঙ্গা জ্বীনতলা মল্লিকপাড়ার আশরাফ আলী আমার শ্বশুর। তিনি বিগত ২২ বছর যাবৎ ভিমরুল্লা কবরস্থানপাড়ার আমোদ আলী ও মহাম্মদ আলীর নিকট থেকে পৈত্রিক সূত্রে ১৭ কাঠা জমি কেনেন। যার মুল দলিল সংরক্ষিত আছে। সেইসূত্রে আমার স্ত্রীসহ আমার ৩ কন্যা নিয়ে বসবাস করে আসছি।
জমি শরীকানা হওয়ায় আমোদ আলী ও মহাম্মদ আলী তাদের অন্যান্য শরীকদের অন্যান্য দাগে জমি পুঁজিয়ে দিয়ে নি¤েœাক্ত ১৭ কাঠা জমি বিক্রি করেন চুয়াডাঙ্গা জ্বীনতলা মল্লিকপাড়ার আশরাফ আলীর কাছে। যা অন্যান্য ভাইবোনের কোন আপত্তি ছিল না কারণ তাদের অন্যান্য দাগে জমি পুঁজিয়ে দেয়।
তারপর আমোদ ও মহাম্মদ আলীর অন্যান্য শরীকগণের মধ্যে প্রতিবেশী সুরত আলীর ছেলে মফি, মৃত ইব্রাহিমের ছেলে পাঙ্খা তাদের বাড়ীর জমি বার বার জোরপূর্বক দখল করতে চায়। এ বিষয়ে জমি নিয়ে কোর্টে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তারপরও তারা আদালতকে অম্যান্য করে প্রতিনিয়ত বাড়ীর সহজ সরল সদস্যদেরকে মারমুখী ও জোরপূর্বক দখল করার হুমকী দিয়ে থাকে।
এদিকে, বসবাসের পাশেই জমি কিনে বসবাস করেন মানিক হোসেন এর ভাইপো ইজিবাইক চালক সুমন। সে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করছে। এর আগে সুমন ঝর্না খাতুনের পিতার ওয়ারিশ সূত্রে বিরোধপূর্ণ জমিতে দেবরের ছেলে হয় বলে থাকতে দেয়। পরে সাংসারিক নানাবিধ কারণে সুমন অশান্তি করায় তাকে জমি থেকে উঠে যেতে বলে। সময় নিয়ে সুমন জমি থেকে চলে গিয়ে পাশেই জমি কিনে বসবাস করছে। সুমন ও তার স্ত্রী ফ্রি ফ্রি ওই জমিতে থাকতে না পারায় রাগান্বিত হয়ে প্রায়শই ঝর্না খাতুনের সাথে অকারণে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদ করে এবং তাদের সাথে যোগ হয়ে একইপাড়ার ইব্রাহিমের ছেলে পাংখা ও স্ত্রী রেহেনা, সুরত আলীর ছেলে মফি, হানেফ মোল্লার ছেলে আলী মোল্লা, আলী মোল্লার ছেলে ওয়াজদেরকে টাকা দিয়ে ঝর্না খাতুনদের উপর মিথ্যা উস্কানি দিয়ে বিভিন্ন সময় রাগান্বিত করে তোলে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ৪ টার দিকে বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে উভয়ের মধ্যে তর্ক বিতর্কের একপর্যায়ে মফি ও তার স্ত্রী রেহেনা খাতুন এবং ছেলে ওয়াজ আলী মিলে লাঠিশোঠা ও ইট দিয়ে মানিক মিয়া, ঝর্না খাতুন ও সুমাইয়া আক্তারকে পিটিয়ে আহত করে। আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়। এদের মধ্যে মানিক মিয়া ও সুমাইয়া আক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলেও ঝর্না খাতুনের অবস্থা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তে লড়তে রাজশাহীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাদীপক্ষের মামলার প্রস্তুতি চলছিল বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ের প্রতি সুষ্ঠুসমাধানে অভিযুক্ত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।