শিশুটি কার পরিচয়ে বড় হবে?

মাজেদুল হক মানিক: পুত্রসন্তানের পিতৃ পরিচয় নিয়ে দিশেহারা প্রতিবন্ধী যুবতী ও তার পরিবার। মধ্য বয়সী হাসান আলীর লোলুপ দৃষ্টির ফসল এই ফুটফুটে শিশু। একদিকে দারিদ্রতা অন্যদিকে পিতৃপরিচয়হীন শিশু। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে দ্বৈবিক সহযোগিতা কামনা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই অসহায় এ পরিবারের হাতে। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মিনাপাড়া গ্রামের পিতৃহীন প্রতিবন্ধী যুবতী নানার ভিটায় বসবাস করেন। তার বয়স এখন পঁচিশ। অসহায় এ যুবতীর দিকে লোলুপ দৃষ্টি পড়ে একই গ্রামের চার সন্তানের জনক হাসান আলীর। শুরু হয় নানাভাবে বিরক্ত। পরিশেষে ধর্ষণের শিকার প্রতিবন্ধী। গর্ভবতী যুবতীকে নিয়ে শুরু হয় হাসান আলীর টালবাহানা। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তার চেষ্টার কমতি ছিলো না। পেশিশক্তির বলে প্রতিবন্ধীর পরিবারকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা। সময় গড়ানোর সাথে যুবতীর শারীরিক অবস্থা বদলাতে থাকে। শেষ পর্যন্ত মামলার আশ্রয় নেয় তার পরিবার। এর প্রেক্ষিতে হাসান আলী গ্রেফতার হলেও জামিনে মুক্তি পায়। তবে মুক্তি পাইনি প্রতিবন্ধী ও তার পরিবারের সদস্যরা। বুধবার বিকেলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফুটফুটে শিশুপুত্রের জন্ম দেয় ওই প্রতিবন্ধী যুবতী। তবে খোঁজ খবর নেয়ার কেই নেই।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতি ও গাইনী ওয়ার্ড ইনচার্জ সীমা ম-ল বলেন, নরমাল ডেলিভারি হয়েছে। বর্তমানে মা ও শিশুটি সুস্থ আছে।
প্রতিবন্ধী যুবতীর মা জানান, সাত বছর আগে তাকে রেখে ওর বাবা মারা যায়। মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তিনি গ্রামের এক ব্যক্তি সাথে বিয়ে করেন। সে সংসার থেকেই মেয়ের দেখাশোনা করতেন। ধর্ষণের পর নানাভাবে চেষ্টা করেও হাসান আলীর সাথে মিমাংসা হয়নি। ফলে আইনের আশ্রয় নেয়া হয়। কিন্তু জামিনে মুক্তি পেয়ে হাসান আলী হুমকি অব্যাহত রেখেছে। তাই নবজাতককে নিয়ে এখন কি করবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুটিকে দেখতে আসেন গাংনীর সুধীসমাজের অনেকেই। অসহায় এ পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সকলের সহযোগিতা চাইলেন তারা।
সুধী সমাজের প্রতিনিধি জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি একেএম শফিকুল আলম বলেন, আগে শিশুটির পিতৃ পরিচয় নিশ্চিত করা হবে। তাহলে সব সমস্যার সমাধান হবে।