স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কায়েতপাড়া গ্রামের জিয়াউর রহমান জিয়া হত্যা মামলার রায়ে পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহা. রবিউল ইসলাম এক জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পর কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়। দ-প্রাপ্তরা হলেন আলমডাঙ্গা উপজেলার কায়েতপাড়া গ্রামের মৃত দুঃখী প্রামাণিকের ছেলে আব্দার হোসেন (৪০), মৃত আনছার আলীর ছেলে ইউনুস আলী (৫০), মৃত আইজুদ্দীন ম-লের ছেলে মুনিয়ার ম-ল (৪৫), আমজাদ জোয়ার্দ্দারের ছেলে কবির আলী (৩৫) ও একই গ্রামের মৃত জলিল ম-লের ছেলে সলক আলী (৪৮)।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের কায়েতপাড়া বাওড় মৎস সমবায় সমিতির সভাপতি জিয়াউর রহমানকে দুর্বৃত্তরা ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে গুলি করে হত্যা করে। ওই ঘটনায় নিহতের সহোদর ভাই আসাদুল ম-ল বাদী হয়ে ১৯ এপ্রিল আলমডাঙ্গা থানায় ৯জনকে আসামি করে আলমডাঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এজাহারে বলা হয়, ১৮ এপ্রিল বিকেল পাঁচটার দিকে জিয়াউর রহমান বিলের পাঁচ প্রহরী কায়েতপাড়া গ্রামের আবদার হোসেন ,মো. ইউনুচ আলী ও মো.মুনিয়ার ম-ল এবং পার্শ্ববর্তী রামদিয়া গ্রামের মো. সলক ও মো. কবির আলী জোয়ার্দ্দারকে নিয়ে দুটি নৌকায় বিল পাহারা দিতে যান। ওইদিন দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে সকলে বিল থেকে বাড়ির পথে রওনা দেয়। বাড়ি থেকে ২০০ গজ দূরে অজ্ঞাত পরিচয় ১০/১২ জন দুর্বৃত্ত মাখায় ও কোমরে গুলি করে জিয়াউরকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
মামলার তদন্তকালে পুলিশ জিয়াউর রহমান হত্যার মোটিভ উন্মোচন করতে সক্ষম হন। হত্যায় জড়িত সন্দেহে কায়েতপাড়া গ্রামের আব্দার হোসেন, ইউনুস আলী, মনিয়ার মন্ডল, কবির হোসেন ও সলককে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে আসামি সলক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আলোচিত এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আলমডাঙ্গা থানার তৎকালীন পরিদর্শক এএইচ এম লুৎফুল কবির তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
এতে বাঁওর দখলকে কেন্দ্র করে এ হত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। আদালত এ মামলায় মোট ২২ সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করে। রায়ে আদালত অভিযুক্ত ৫জনকে পেনাল কোডের ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের প্রত্যেক যাবজ্জীবন দ- দেন। আলোচিত এ মামলাটি রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাড. বেলাল হোসেন ও আসামিপক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড. সেলিম উদ্দীন খাঁন ও অ্যাড. আফজাল হোসেন।