দামুড়হুদায় ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবক নাসুর মর্মান্তিক মৃত্যু

দামুড়হুদা ব্যুরো: কানে হেডফোন দিয়ে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হতে গিয়ে চলন্ত ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে নাসুরুল্লাহ ওরফে নাসু নামের এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহত যুবক নাসু (২৯) দামুড়হুদা উপজেলা শহরের গুলশানপাড়ার বাসিন্দা মমজেদ আলীর ছোট ছেলে। ঘটনার পরপরই এলাকার শ’ শ’ লোক ছুটে যান দামুড়হুদা ব্র্যাকমোড়ে। চলন্ত ট্রাকের চাকা তার মাথার ওপর দিয়ে চলে যাওয়ায় মুখমন্ডল বিকৃত হয়ে যায়। ফলে উপস্থিত স্থানীয় লোকজন তাকে সনাক্ত করতে পারেনি। পরে তার প্যান্টের পকেটে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে লাশ সনাক্ত করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে দামুড়হুদা-চুয়াডাঙ্গা সড়কের দামুড়হুদা ব্র্যাক অফিসের সামনে ওই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই দামুড়হুদা থানা পুলিশ ও চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরে লাশের ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্সযোগে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে নেয় পুলিশ। আজ বুধবার নিহতের লাশের ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের লোকজনের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে জানান দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) কেএম জাহাঙ্গীর কবীর। ঘাতক ট্রাকটি আটক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নাসু দামুড়হুদার আখ সেন্টারের সামনে দিয়ে পিচরোডে ওঠে। ওই সময় তার কানে হেডফোন লাগানো ছিলো। সম্ভবত সে কারও সাথে কথা বলছিলো। কথা বলতে বলতে ব্র্যাক অফিসের সামনে গিয়ে রাস্তা পার হয়ে বাম দিকে যায়। আবার তিনি ডান দিকে আসার সময় ট্রাকের নীচে চাপা পড়েন। তবে ট্রাকের চালক বেশ কয়েকবার জোরে জোরে হর্ন বাজালেও কানে হেডফোন থাকায় সম্ভবত তিনি শুনতে পাননি।
এদিকে নাসুর মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছুলে নাসুর মা নূরজাহান বেগমসহ স্বজনরা কাঁন্নায় ভেঙে পড়েন। এক সন্তানের জনক নিহত যুবক নাসু ছিলেন ৪ বোন ও ২ ভাইয়ের মধ্যে ছোট। স্থানীয়রা জানান, নিহত নাসু স্কুল জীবনে খুব ভালো ছাত্র ছিলো। তিনি ২০০৫ সালে দামুহুহুদা পাইলট হাইস্কুল থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। ভর্তি হন যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে। ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন নাসু। পরে ঢাকায় ডাক্তারি পড়তে গিয়ে কিছুদিন পর বাড়ি ফিরে আসেন। ইতিঘটে লেখাপড়ার। পরে নেশার জগতে পা বাড়ায় নাসু। স্থানীয়দের কেউ কেউ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেছেন, কী ছেলে, আর কী হয়ে গেলো। সবই সঙ্গদোষ বলেও মন্তব্য করেন তারা।