চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা সীমান্ত বাংলাদেশিকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে খুন

????????? ?????? ?????? ? ?????? ????? ???? ??????

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হুদাপাড়া সীমান্তে আবদুল গণি নামের এক বাংলাদেশিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সীমান্তের ৮৭ নম্বর প্রধান খুঁটির পাশে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবদুল গণির বাড়ি উপজেলার চাকুলিয়া গ্রামে। নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর দাবি, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সহযোগিতায় ভারতীয় নাগরিকেরা আবদুল গণিকে (৩০) হত্যা করেছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ৬ এর পক্ষ থেকে হত্যার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিএসএফের সম্পৃক্ততার বিষয়টি তারা তদন্ত করে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা গেছে, গত সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে আবদুল গণির নেতৃত্বে কয়েকজন গরু আনতে ভারতে যান। সীমান্তে ভারতীয় অংশে পেঁয়াজ খেতের মধ্যদিয়ে গরু আনাকে কেন্দ্র করে ক্ষেত মালিকদের সাথে তাদের বাগবিত-া হয়। ক্ষেত মালিকেরা ক্ষতিপূরণ দাবি করলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানানো হলে গণিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে বাকিরা পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় গণিকে বাংলাদেশ অংশে ফেলে দেয়া হয়।
নিহতের শ্যালক ইকবাল হোসেনের দাবি, তার ভগ্নিপতি কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি ভারতে কেন গিয়েছিলেন, তা তাদের জানা নেই। নিহতের ভাই মনিরুজ্জামান বলেন, সোমবার সন্ধ্যার পর গণি বাড়ি থেকে বের হন। রাত আড়াইটার দিকে ভারত থেকে মুঠোফোনে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি জানান, বিএসএফের উপস্থিতিতে ভারতীয় নাগরিকেরা গণিকে নৃশংসভাবে কুপিয়েছেন। তাকে সীমান্তের কাছাকাছি বাংলাদেশের একটি মাঠে ফেলে রাখা হয়েছে। ঠাকুরপুর সীমান্তের ৮৭নং মেইন পিলারের নিকট থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় গণিকে উদ্ধার করে মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সোহরাব হোসেন তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক সোহরাব হোসেন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান গণি। তার বাম পায়ের গোড়ালির ওপর ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন আছে। দীর্ঘসময় ধরে রক্তক্ষরণ হওয়ায় তিনি মারা গেছেন।
এদিকে আবদুল গণির স্ত্রী ইসমতারা অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়িতে ছিলো। পরে ভারতের হুদাপাড়ার জাকির, বসির ও ভুলাদের ডাকে সাড়া দিয়ে আমার স্বামী ওপারে যায়। পরে তারা আমার স্বামীকে হত্যা করে বাংলাদেশে ফেলে রেখে গেছে। তিনি আরও জানান আমার স্বামী গরু আনতে যায়নি। গণির মা একই অভিযোগ করেন।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির পরিচালক লে.কর্নেল খালেকুজ্জামান জানান, সীমান্ত সংলগ্ন মাঠ থেকে সকালে বাংলাদেশি নাগরিকের মরদেহ উদ্ধারের পর বিজিবির পক্ষ থেকে পতাকা বৈঠকের আমন্ত্রণ জানানো হয়। দুপুরের পর বিএসএফ সম্মত হলে বিকেলে জিরো পয়েন্টে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন মুন্সিপুর বিওপির কমান্ডার মতিয়ার রহমান ও ভারতের রাঙ্গিয়ারপোতা ৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার অভিশেক আনান। বৈঠকে বাংলাদেশি নাগরিক নিহতের ঘটনায় বিজিবি’র পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়। তবে বিএসএফ বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। বিএসএফের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে ভারতের কিছু ব্যবসায়ীর সঙ্গে টাকা পয়সা নিয়ে নিহত আবদুল গণির সাথে বিরোধ ছিলো। এই বিরোধের জের ধরেও সে খুন হতে পারে।