গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে : মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। তাই গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে। তাহলে খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন। তাই এখন দুর্বার গণআন্দোলনের জন্য বিভেদ ভুলে সকলকে প্রস্তুতি নিতে হবে। এখন অন্য কোন স্লোগান না দিয়ে সবাই স্লোগান দিবেন ‘এই সরকার নিপাত যাক।’ আমাদের সামনে একটি মাত্র লক্ষ্য আর সেটি হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বোভৌমত্বের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য গণঅভ্যুত্থান গড়ে তোলা। গতকাল রোববার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ সব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাসারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, ড. মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবেদীন ফারুক, আব্দুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, এজেড এম জাহিদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যনি, যুবদল সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার জনগণের ম্যন্ডেটে নির্বাচিত নয় তাই তাদের জনগণের কাছে কোন জবাবদিহিতা নেই। তারা আজ রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যর্থ করে দিয়েছে। সরকার সুপরিকল্পিতভাবে এ রাষ্ট্রেকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। সরকার বাংলাদেশকে লুটতরাজের রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। দেশকে এর থেকে রক্ষা একটি মাত্র উপায় সেটি হল গণঅভ্যুত্থান। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি এই সরকার আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমাদের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আজকের এই সমাবেশ করা জন্য গতকাল সকাল ১০টায় অনুমতি দেয়া হয়েছে। এরপর আমরা কোন সভা সমাবেশ করার জন্য কোন ধরনের অনুমতি নেবো না। সভা সমাবেশ আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার তাই আমরা আমাদের যখন ইচ্ছে সভা সমাবেশ করবো। দেশনেত্রী মুক্তির লক্ষ্যে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার মধ্যমে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো। আমরা রাজপথে নামবো।
ফখরুল বলেন, আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা ছিলো চারটি আর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৫টি। প্রধানমন্ত্রীর মামলাগুলো তুলে নেয়া হয়েছে আর আমাদের নেত্রীর মামলা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এখন আমাদের নেত্রীকে জামিন দিতেও সরকার বাধা দিচ্ছে।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই সরকার থাকলে সম্ভব নয়, সরকারের পতন ঘটিয়েই বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ঘণ্টা বাজিয়ে খেলা উদ্বোধন করেছেন আর এদিকে তার পতনের ঘণ্টা বেজে গেছে। তিনি বলেন, কোন কিছুতেই সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকলে ২০ টাকার পেঁয়াজ ২০০ টাকা কেজি হয় না। কিছু লোককে টাকার মালিক বানাতে দ্রব্যমূল্য বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে এই রাষ্ট্রকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করছে। আজ জাতীয়তাবাদী শক্তি ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে একটা ধাক্কা দিতে পারলে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে বেগম জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব। তিনি বলেন, যে বিচারক বেগম জিয়া ও তারেক রহমানকে সাজা দিয়েছের তাদের পুরস্কার হিসেবে হাইকোর্ট এর বিচারপতি করা হয়েছে। আর যে বিচারপতি তারেক রহমানকে খালাস দিয়েছে তাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে অন্যায় করা হচ্ছে এবং সরকারের অপপ্রচারের বিষয়ে আমরা জনগণকে জানিয়েছি। এতিমদের যে ফান্ডের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে সেই ফান্ড থেকে একটি টাকাও উঠানো হয়নি। সেখানে টাকা মেরে খাওয়ার প্রশ্নই আসে না। সরকার যেহেতু দেশের বিচার বিভাগকে নিজেদের আজ্ঞাবহ করে পরিচালানা করেছেন সেহেতু এই বিচার বিভাগের অধীনে বেগম জিয়ার মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, খুব শিগগিরই আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে বেগম জিয়াকে মুক্ত করে গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধার করতে হবে।
মির্জা আব্বাস বলেন, অবাধ দুর্নীতি করতেই খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে। একটা সময় আসবে জেলের তালা ভেঙেই বেগম জিয়াকে মুক্ত করা হবে।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশন ছাড়া আর কোনোকিছুই সরকারের নিয়ন্ত্রণে নাই। ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।