সীমান্তে বিজিবি’র সঙ্গে গোলাগুলিতে বিএসএফ সদস্য নিহত

রাজশাহীর চারঘাটে পদ্মায় মাছ ধরার সময় ভারতীয় জেলে আটক

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর চারঘাট সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে এক বিএসএফ সদস্য নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বেআইনিভাবে পদ্মা নদীতে ভারতীয় জেলেদের ইলিশ শিকারকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। রাতে এ ব্যাপারে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, সীমান্তে অনাকাক্সিক্ষত গোলাগুলিতে এক বিএসএফ সদস্য নিহত হয়েছেন। মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে বিএসএফের কয়েকজন সদস্য চারঘাট সীমান্তের ৫০০ গজের ভেতরে এলে এ ঘটনা ঘটে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি এ তথ্য জানতে পেরেছি বিজিবির মাধ্যমে। এ সময় কয়েকজনকে আটক করা হয়, তার মধ্যে একজন বিএসএফ জওয়ানও ছিলো। তাদের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে হস্তান্তর করার কথা জানালে তারা পালানোর চেষ্টা করে এবং ওপেন ফায়ার করে। তখন আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীও পাল্টা ওপেন ফায়ার করে। এতে অনাকাক্সিক্ষতভাবে এক জওয়ান নিহত হন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ভারতের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তাই এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আমরা পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে এগুলো সমাধান করি। এটি একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা।
এদিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি জানায়, সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে চারঘাট বিওপি এলাকায় আনুমানিক ৩৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে পদ্মা নদীতে ৩ জন ভারতীয় জেলেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে দেখা যায়। এ সময় বিজিবির টহল দল উপজেলা মৎস্য অধিদফতরের ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট আবু রায়হান এবং আরও দুইজন সহকারীসহ এক জেলেকে আটক করেন। বাকিরা পালিয়ে যায়।
পরে বিএসএফের ১১৭ ব্যাটালিয়নের কাগমারী বিওপি থেকে স্পিডবোটে ৪জন সদস্য চারঘাট উপজেলার বালুঘাট এলাকার শাহারিয়াঘাটের বড়াল নদীর মুখে আনুমানিক ৬৫০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করলে বিজিবির টহল দল বাধা দেয়। ওই চারজনের মধ্যে একজন বিএসএফ ইউনিফর্ম পরা থাকলেও বাকিরা হাফপ্যান্ট ও গেঞ্জি পরা ছিলো।
বিএসএফ ওই জেলেকে জোর করে ফিরিয়ে নিতে চাইলে তাদের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে নিয়ম অনুযায়ী ফেরত দেয়ার কথা বলে বিজিবি।
তাদের বলা হয়, আপনারাও অবৈধভাবে বাংলাদেশে এসেছেন, তাই আপনাদেরও নিয়ম অনুযায়ী পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তখন বিএসএফ সদস্যরা জোরপূর্বক জেলেকে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যেতে চাইলে বিজিবি সদস্যরা তাদের বাধা দেয়।
এ সময় বিএসএফ সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে ফায়ার করতে করতে স্পিডবোট চালিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে চলে যেতে থাকে। তখন বিজিবি টহল দলও আত্মরক্ষার্থে ফায়ার করে।
এ বিষয়ে অধিনায়ক রাজশাহী ব্যাটালিয়ন এবং কমান্ড্যান্ট ১১৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। পতাকা বৈঠকে জানা যায়, ওই ঘটনায় বিএসএফের ১ জন সদস্য নিহত এবং ১ জন সদস্য আহত হয়েছেন।