গাংনীর কাজিপুরে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে যুবকরে মৃত্যু

গাংনী প্রতিনিধি: শিপন হোসেন (২৭) নামের এক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কুষ্টিয়ায় তার মৃত্যু হয়। শিপন হোসেন মেহেরপুর গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের মাসুদ হোসেনের ছেলে।
প্রচ- জ্বর নিয়ে বুধবার গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয় শিপন। পুরাতন ডেঙ্গু রোগী সন্দেহে চিকিৎসক তার রক্তের আইজিজি পরীক্ষা করালে পজেটিভ পান। রোগীর পরিবারের ইচ্ছেয় ভর্তি থাকাবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কুষ্টিয়ায় রেফার করেন চিকিৎসক।
ডেঙ্গু রোগীদের তদারকির দায়িত্বে থাকা গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার সজীব উদ্দীন স্বাধীন তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এটা অবশ্যই পুরাতন ডেঙ্গু রোগী হবে। কোনো এক সময় তার ডেঙ্গু হয়েছিলো কিন্তু তখন চিকিৎসা হয়নি বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
শিপনের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু শনাক্ত হলেও তার প্লাটিলেট ভালো অবস্থায় ছিলো। গত বুধবার রাতে হাসপাতালে চলাফেলা করতে গিয়ে সে পড়ে যান। ব্লাড প্রেসার কমে যাওয়ায় গতকাল ডা. আরেফিন সিদ্দিকী তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও দেন। সকালের দিকে শারীরিক অবস্থা অনেক ভালো অবস্থায় ছিলো। কিন্তু পরিবারের লোকজনের ইচ্ছের প্রেক্ষিতে তাকে কুষ্টিয়ায় রেফার করা হয়।
শিপনের চাচা আনোয়ার হোসেন বলেন, গাংনী থেকে নিয়ে যাওয়ার পর কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পেটে প্রচ- জ্বালা যন্ত্রণার জন্য এখানে ভর্তি করেন চিকিৎসকরা। জ্বর ছিলো না তাই ওখানে ডাক্তার তাকে দেখার পরে ওই ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। মৃত্যুর আগে তার ব্লাডপ্রেসার অস্বাভিকভাবে নেমে যায়।
শিপনের পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে, পেশায় কৃষি কাজের পাশাপাশি সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য একটি এজেন্সিতে টাকা জমা দেয় শিপন। আগামী মাসে তার বিদেশ যাওয়ার কথা ছিলো। দাম্পত্য জীবনে নয় মাস বয়সী একপুত্র সন্তান রয়েছে। মরদেহ কুষ্টিয়া থেকে নিজবাড়িতে আনার পর সন্ধ্যার পরে গ্রাম কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ হাসপাতালে ২৮১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ বছরই মেহেরপুর জেলায় প্রথম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হওয়া শুরু হয়। জেলায় এ পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু রোগী শনাক্তের সংখ্যা ৩৫৫ জন। তবে মৃত্যুর ঘটনা এই প্রথম। তবে এ উপজেলায় ব্যাপকভাবে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হলেও প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বলই রয়ে গেছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন চিকিৎসকরা।