চুয়াডাঙ্গার বেগমপুরে ওয়ার্ড আ.লীগের সম্মেলনে ভাঙচুরে সমাবেশ প-

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার যদুপুরে ৪নং ওয়ার্ড আ.লীগের সম্মেলন চলাকালীন কমিটির নাম ঘোষণাকে কেন্দ্র করে মারামারি হট্টগোল ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৮জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে নেতৃবৃন্দ আপাতত ওই ওয়ার্ডের কমিটি গঠন স্থগিত করেছেন। সেই সাথে চলছে মামলার প্রস্তুতি।
চুয়াডাঙ্গার বেগমপুর ইউনিয়নের জামাল উদ্দিনকে আহ্বায়ক এবং আব্বাছ আলী ও ওমর আলীকে যুগ্মআহ্বায়ক করে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি গঠিত হয় ১৭ জুলাই। সে কমিটি ওয়ার্ড কমিটি গঠনের কাজ শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় ইউনিয়নের যদুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আ.লীগ নেতা আজিজুল হক বিএ’র সভাপতিত্বে এ সম্মেলনের কাজ শুরু হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান নান্নু। বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদত হোসেন, বেগমপুর ইউনিয়ন সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন, যুগ্মআহ্বায়ক আব্বাছ আলী ও ওমর আলী। ৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন আজিজুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুক্তার আলী ও সাজ্জাদ হোসেন গাড্ডু। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন টিটু, শফিকুল, আসিফ ও বাবুল।
যুগ্মআহ্বায়ক আব্বাছ আলী বলেন, ‘প্রধান অতিথি তার বক্তব্য শেষে ৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন। এসময় আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন প্রধান অতিথির নিকট থেকে স্পিকার নিয়ে বলেন যারা সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন তারা তাদের লোকজন নিয়ে আলাদা আলাদা করে অবস্থান নেন। এতে উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। কমিটির সদস্য আমিরুল ইসলাম এবং কাশেম তার লোকজন নিয়ে আমাদের ওপর চড়াও হয়। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে লাঠিসোঁটা মজুদ করে সমাবেশে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন নিয়ে দল ভারি করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। হট্টগোলে চেয়ার তুলে মারামারির মতো ঘটনা ঘটে এবং কমিটি ঘোষণার কাজ প- হয়ে যায়। এ ঘটনায় আহত হন আনাচ আলী, আরাফাত, শিফাত, রিফাতসহ কয়েকজন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম হোসেন মীজি বলেন, দলে যেন কোনোভাবেই জামায়াত-বিএনপির লোক অনুপ্রবেশ না করে, এটা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশ। দেখছি কমিটিতে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন ঢুকানোর পাঁয়তারা চলছে। অপরদিকে সদস্য আমিরুল ইসলাম বলেন, যুগ্মআহ্বায়ক আব্বাছ আলী নিয়ম ভেঙে ছাত্রলীগ নেতাকে বক্তব্য দিতে দিয়েছেন। আবার মাঠে যার লোকজন বেশি তার নাম সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করায় তারা লোকজন দিয়ে মারমারির ঘটনা ঘটিয়েছে। এতে আমি, ইহান আলী, গোলাম হোসেন, মিজানসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন বলেন, এটা দলের আভ্যন্তরীণ বিষয়। লোক বেশি হবে মাঠে তার নাম ঘোষণা করা হবে এ সিদ্ধান্ত আমাদের ছিলো। তবে ভাঙচুর বা মারামারির তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। যুগ্মআহ্বায়ক ওমর আলী বলেন, অনুষ্ঠানের পরিচালনায় ছিলেন আব্বাছ আলী। তার হাত থেকে জামাল উদ্দিন মাইক নিয়ে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদ পদের প্রার্থীদের লোকজন নিয়ে আলাদা হতে বলায় গোলযোগ বেঁধে যায় এবং আমিরুল একজনকে থাপ্পড় মেরে দিলে হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। এ ঘটনা হাইকমা- জানার পর আপাতত বেগমপুর ইউনিয়নের কমিটি গঠন স্থগিত করে দিয়েছেন। আজ শুক্রবার সদর উপজেলা নেতৃবৃন্দ বিষয়টি নিয়ে চুয়াডাঙ্গাতে বসবেন। বেগমপুর ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ এএসআই আবুল কাশেম বলেন, নাম ঘোষণাকে কেন্দ্র করে চেয়ার তুলে মারমারি শুরু হয়ে যায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে নেতৃবৃন্দ যে যার মতো চলে যায়। এদেিক আহদের মধ্যে আরাফাতের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে আহর পরিবার জানিয়েছে।