তৃণমূল থেকে দলকে ঢেলে সাজানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ : আসাদুল হক বিশ্বাস

সরোজগঞ্জ প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হচ্ছে। চলছে পাল্টা কমিটিও এ নিয়ে দলের দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নে ওয়ার্ড কমিটি আহ্বান করেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান হাজি আসাদুল হক বিশ্বাস। এদিকে পাল্টা সমাবেশ আহ্বান করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। এ নিয়ে সকাল থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। পুলিশের অনুরোধে আসাদুল হক বিশ্বাস গিরীশনগর বাজারে সম্মেলনের আয়োজন করে। বিকেলে আসাদুল হক বিশ্বাস চুয়াডাঙ্গা থেকে গাড়িবহর নিয়ে গিরীশনগর বাজারে পৌঁছান। দুপুর থেকে যেমন তিতুদহে বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ টহলে রাখা হয়; তেমনি গিরীশনগর বাজারেও পুলিশি টহল জোরদার করা হয়।
গতকাল বিকেলে গিরীশনগর বাজারে আয়োজিত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন তিতুদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আতিয়ার রহমান। সম্মেলনে তিতুদহ ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস। এসময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের মাধ্যমেই তৃণমূল থেকে দলকে ঢেলে সাজাতে হবে বলেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের প্রতিটি ওয়ার্ড পর্যায় থেকে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এখানে একটি স্বার্থন্বেষী মহল দলের ত্যাগী নেতাদের বাদ নিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাচিল করার জন্য পকেট কমিটি গঠন করছে। এ পকেট কমিটি কোনো কাজে আসবে না। আওয়ামী লীগ সুবিধাবাদীদের পার্টি না। দুঃসময়ে সুবিধাবাদী বসন্তের কোকিলদের হাজারও বাতি জ্বালিয়ে খুঁজে পাওয়া যাবে না। আসাদুল হক বিশ্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। এ সংগঠনের কমিটি হবে রাজপথে ও জনসম্মুখে। ত্যাগী কর্মীদের অবহেলা করবেন না। ত্যাগী কর্মীদের অবহেলা করলে আওয়ামী লীগ টিকবে না। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। কেউ যদি গুটি কয়েকজনকে নিয়ে এসব কমিটি করেন তাহলে আওয়ামী লীগ রাজপথে প্রতিবাদ করবে। কেন না জননেত্রী শেখ হাসিনা মানবিক গুণ বিশিষ্ট নেত্রী। আসাদুল হক বিশ্বাস বলেন, একটি কথা মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন। কাজেই আমাদের দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সেই কথা মাথায় রেখেই সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায় থেকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, সাবেক শিল্প ও যুব ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. শফিকুল ইসলাম শফি, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক মিজানুর রহমান টিপু, চুয়াডাঙ্গা জেলা সেচ্ছসেবক লীগের যুগ্মআহবায়ক মতিয়ার রহমান মতি, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষক লীগের আহবায়ক আব্দুল মতিন দুদু, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জানিফ, যুগ্মসম্পাদক জ্যাকি, সদস্য সজল, আব্দুর রাজ্জাক, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা, তিতদহ ইউনিয়ন আ.লীগের সাবেক সভাপতি খবির উদ্দিন বিশ্বাস, ফাততুজ্জামান মাস্টার, সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, সাবেক মেম্বার মহি উদ্দিন, কুতুবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেন, যুবলীগ নেতা সিকদার রাকিব হাসান মানিক, শাহালম হোসেন, শহিদুল ইসলাম, খাইরুল ইসলাম, ওয়াশিম হোসেন, আরিফুল ইসলাম, আবু তাহের, খাইরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, ইদ্রিস আলী, আব্দুল হালিম, আব্দুল কাদের, মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী, মোফাজ্জেল হোসেন মোফা, সাবেক তিতুদহ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন তিতুদহ ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন মাস্টার। অনুষ্ঠান শেষে বকুল হোসেনকে সভাপতি সিরাজুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট ১নং ওয়ার্ড, রোকমান হোসেনকে সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট ২নং ওয়ার্ড, রমজান ম-লকে সভাপতি শহিদুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১সদস্য বিশিষ্ট, ৩নং ওয়ার্ড আ.লীগ কমিটি গঠন করা হয়।