চুয়াডাঙ্গায় মাদকদ্রব্যসহ আটক ১৩

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ পৃথক দুটি অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ ৩জনকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল বিকেলে পৃথক দুটি স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই আবু বক্কর সিদ্দিক, এএসআই রোকনুজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্সসহ দামুড়হুদা উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামে অভিযান চালান। এ সময় প্রাইমারি স্কুলের সামনের রাস্তা থেকে ৮ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করেন একই উপজেলার ডুগডুগি গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসেনকে (৩৮)। অপরদিকে, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সেলিম সঙ্গীয় ফোর্সসহ বিকেল ৫টার দিকে সদর উপজেলার হাতিকাটা মোড়ে অভিযান চালান। এ সময় আটক করেন শহরতলি দৌলাতদিয়াড়ের আসাদুল হোসেনের ছেলে হেলাল হোসেন (২৪) ও আব্দুল বারেকের ছেলে সেলিমকে (৩৮)। তাদের দেহতল্লাশি করে উদ্ধার করা হয় ৮ পিস ইয়াবা। পরে মাদকদ্রব্য আইনে পৃথক মামলাসহ তাদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে আলমডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫জন মাদকব্যবসায়ীকে আটক করেছে। তাদেরকে গতকালই সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে প্রেরণ করেছে।
জানা গেছে , আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ গতপরশু মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আলমডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫ জন মাদকব্যবসায়ীকে আটক করেছে। এরা হলো আলমডাঙ্গা কলেজপাড়ার ভাড়াটিয়া কুষ্টিয়া জেলার ইবি থানার বৃত্তিপাড়া গ্রামের সুবল কুমারের ছেলে মাদকস¯্রাট সুবিন্দর কুমার ওরফে মিঠুন ওরফে বিন্দু (২৮), আলমডাঙ্গা ক্যানেলপাড়ার ইব্রাহিমের ছেলে আদিল (২৫), শহরের রাধিকাগঞ্জের আব্দুল বারেক আলীর ছেলে সোহেল রানা (২৫), জেহালার মৃত আফসার আলীর ছেলে তকিম আলী (৪৫) ও একই গ্রামের মৃত সিরাজুলের ছেলে তরিকুল ইসলাম (৩২)। তাদের নিকট থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল ১৬ সেপ্টেম্বর তাদেরকে সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
জামজামি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, আলমডাঙ্গার জামজামি ফাঁড়ি পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৮ পিস ইয়াবাসহ দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে। গতরাতে আলমডাঙ্গা জামজামি সড়কের যমুনা জিকে ব্রিজের মুখে রহস্যজনক অবস্থানের সময় পুলিশ যুবকদ্বয়কে কব্জায় নেয়।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা জামজামি সড়কের যমুনাই জিকে সেচখালের ব্রিজের মুখে দুই যুবক রহস্যজনক অবস্থান করছে। গতরাত সাড়ে ৮টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জামজামি ফাঁড়ি পুলিশের টুআইসি এএসআই মিজানের নেতৃত্বে চৌকস পুলিশ যমুনায় অভিযান চালায়। পুলিশ বলেছে, তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে যুবকদ্বয় সটকে যেতে থাকে। পুলিশ এসব তাদের আটকে তল্লাশি শুরু করে। এ সময় তাদের নিকট থেকে ৮ পিস ইয়াবা উদ্ধার ও জব্দ করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো আলমডাঙ্গা বাদেমাজুর আব্দুল মান্নানের ছেলে কায়েম আলী (২৮) ও একই এলাকার আব্দুল বারেকের ছেলে লাল মিয়া (২৩)। গ্রেফতারকৃতদের রাতেই আলমডাঙ্গা থানায় হস্থান্তর করা হয়।
দর্শনা অফিস জানিয়েছে, দর্শনা পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ঝাঁজাডাঙ্গার আব্বাসকে গাঁজাসহ গ্রেফতার করেছে। গতকাল সোমবার বিকেলে দর্শনা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শেখ মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে এসআই জাকির হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালান দামুড়হুদার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের ঝাঁজাডাঙ্গা গ্রামে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ঝাঁজাডাঙ্গার নুর ইসলামের ছেলে আব্বাসকে গ্রেফতার করা হয়। আব্বাসের কাছ থেকে ১শ’ গ্রাম গাঁজা উদ্ধারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় এসআই জাকির হোসেন বাদি হয়ে গতকালই আব্বাসের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থানা পুলিশের চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে সোমবার দুপুরে গোয়ালপাড়া থেকে ৩০ বোতল ফেনসিডিলসহ মাদক ব্যবসায়ী স্বামী-স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত স্বামী-স্ত্রী দুজন হচ্ছে যশোর জেলার বৈকারী গ্রামের মোসারফ সরদারের ছেলে রবিউল ইসলাম (২২) ও রবিউল ইসলামের স্ত্রী সিমি বিশ্বাস (২০)।
জানা গেছে, জীবননগর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই নাহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে এএসআই হাবিব, এএসআই নুর হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ সোমবার দুপুর সাড়ে তিনটার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গোয়ালপাড়ায় মোল্লা ব্রিক্সের সামনে পাকা রাস্তায় অভিযান চালিয়ে রবিউল ও তার স্ত্রী সিমি বিশ্বাসকে আটক করে তাদের সাথে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে ৩০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে তাদেরকে গ্রেফতার করেন।
এ ব্যাপারে জীবননগর থানার ওসি (তদন্ত) ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, আটক মাদকসহ আটক স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনের মামলা রুজু হয়েছে।
অপরদিকে, চুয়াডাঙ্গা জীবননগর থানা পুলিশের চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে ২০ বোতল ফেনসিডিলসহ তিন মাদক ব্যাবসায়ীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যাবসায়ীরা হচ্ছে উপজেলার খয়েরহুদা গ্রামের আব্দুল মাবুদের ছেলে সামসুজ্জামান (৪০), মনোহরপুর গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে শহিদ (২৫) ও রাজবাড়ী জেলার পাটবাড়িয়া কুলুখালী গ্রামের পাহালের ছেলে উজ্জ্বল (৩২)।
জানা গেছে, জীবননগর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই নাহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে এএসআই হাবিব, এএসআই ইমদাদ, এএসআই কামরুল সঙ্গীয় ফোর্সসহ রোববার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তিন মাদক ব্যাবসায়ীকে আটক করে তাদের দেয়া তথ্য মতে ২০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে তাদেরকে গ্রেফতার করেন।
এ ব্যাপারে জীবননগর থানার ওসি (তদন্ত) ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, আটক মাদক ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনের মামলা রুজু হয়েছে।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ফেনসিডিলসহ চারজনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) অধিনায়ক মো. রফিকুল আলম। আটককৃতরা হলেন রাজশাহী জেলার শাহামগদম থানার নওদাপাড়া এলাকার বাবুল হোসেনের ছেলে রাজু আহমেদ (২৬), কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী এলাকার গফুর মোল্লার ছেলে জাহিদুল ইসলাম (২৫), নতুন চিলমারী এলাকার রাজা স্বর্ণকারের ছেলে সবুজ মিয়া (২২) এবং পাবনা সদর উপজেলার মুজাহিদক্লাব এলাকার মৃত ইসমাঈল হোসেনের ছেলে ইকবাল হোসেন (২২)।
প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনি জানান, সীমান্ত এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধীনস্থ মহিষকুন্ডি বিওপির হাবিলদার মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে দৌলতপুর উপজেলার হাতিশালার মোড় এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এসময় রাজু আহমেদ, জাহিদুল ইসলাম ও সবুজ মিয়াকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে একশত চব্বিশ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিলসহ দুইটি মোটরসাইকেল এবং ২৫ হাজার দুইশত টাকা উদ্ধার করা হয়।
অপরদিকে, সোমবার সকালে বান্দের বাজার মাঠপাড়া ব্রিজের ওপরে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে একশ’ বোতল ফেনসিডিলসহ ইকবাল হোসেনকে আটক করে মহিষকুন্ডি বিওপির হাবিলদার মোঃ জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে বিজিবি সদস্যরা। আটককৃত আসামিদের ভারতীয় ফেনসিডিল, মোটরসাইকেল এবং নগদ টাকাসহ দৌলতপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান ৪৭ বিজিবি অধিনায়ক মো. রফিকুল আলম।