চুয়াডাঙ্গায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা পর্যায়ে জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট (অনূর্ধ্ব-১৭) ২০১৯ উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা পুরাতন স্টেডিয়ামে এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। উদ্বোধনী খেলায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা এবং আলমডাঙ্গা উপজেলা দল মুখোমুখি হয়। খেলার নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে সমতা হলে খেলার বাইলজ অনুসারে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। (৫+৫) ১০ মিনিটের খেলার প্রথমার্ধে ১ গোলে এগিয়ে যায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা। ফলে শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা জয়লাভ করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি বলেন, চুয়াডাঙ্গা ফুটবলের আগের সেই জৌলুস ভরা জোয়ার এখন অস্তমিত। চুয়াডাঙ্গা শহরের প্রাণকেন্দ্রে ৫টি খেলার মাঠ থাকা স্বত্বেও সেখানে এখন আর আগের মতো খেলাধুলা বা অনুশীলন হয় না। গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ফুটবলকে আবারও অতীতের সেই রূপে ফিরিয়ে আনতে হলে মাঠে এসে নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, এ টুর্নামেন্ট থেকে বাছাইকৃত জেলা দল যারা খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে খেলবে, সে সকল ফুটবল খেলোয়াড়দেরকে ক্যাম্পিং করাতে হবে। ক্যাম্পিং করাতে যে খরচ হয় আমি তা বহন করবো। একই সাথে প্রধান অতিথি টুর্নামেন্টর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে চুয়াডাঙ্গায় জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট (বালক/বালিকা) অনূর্ধ্ব-১৭ শুরু হয়েছে। খেলায় ৫টি বালক ৫টি বালিকা দল অংশগ্রহণ করছে। এ খেলার দুই বিভাগ থেকে দুটি সেরা একাদশ বিভাগীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করবে। এ দুটি দল ভালো খেলে যাতে জেলার সুনাম বৃদ্ধি করতে পারে সেজন্য সকলের সহযোগিতার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের জন্য যা যা প্রয়োজন তা করা হবে।
বিশেষ অতিথি চুয়াডাঙ্গার নবাগত পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, নিয়মিত খেলাধুলার আয়োজন থাকলে চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গার ছেলেরা ৩জন করে মোটরসাইকেলে চেপে দর্শনার দিকে যাবে না। আর যদি যেতে চাই তাহলে পুলিশ সাধ্যমতো বাঁধা দেবে। আমি চুয়াডাঙ্গায় যোগদান করার আগে চুয়াডাঙ্গার মাদক ব্যবসা ও সেবন বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জেনে এসেছি। একই সাথে এ জেলা থেকে মাদক নির্মূল করার পরামর্শও পেয়েছি। আমি সেই কথা রাখার চেষ্টা করবো। আমার বিশ্বাস এ ধরনের টুর্নামেন্ট আয়োজনের ফলে যুবসমাজকে কিছুটা হলেও মাদক থেকে বিরত রাখা যাবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ প্রশাসক সেখ সামসুল আবেদীন খোকন ও পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী। পৌর টিম জয়লাভ করায় চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র সকল খেলায়াড় ও কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল আরিফ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুনিরা পারভিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইয়াহ্ ইয়া খান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াশীমুল বারী, আলমডাঙ্গা নির্বাহী অফিসার লিটন আলী, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিরাজুল ইসলাম, দামড়–হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম মুনিম লিংকন, এনডিসি সিব্বির আহমেদ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খাইরুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা অফিসার নিখিল রঞ্জন চক্রবর্তী, জেলা ক্রীড়া অফিসার আমানুল্লাহ আহম্মেদ, ডা. আওলিয়ার রহমান, ডিএফ’র সভাপতি রফিকুল ইসলামসহ সকল আমন্ত্রিত অতিথিগণ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের আসন গ্রহণ, পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতীয় পতাকা, ক্রীড়া পতাকা, টুর্নামেন্টের পতাকা ও চুয়াডাঙ্গা সদর পৌরসভাসহ ৪টি উপজেলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াশীমুল বারীর লেখা ও সুর করা টুর্নামেন্টর থিমসংটি চমৎকার ডিসপ্লের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি আর্কষণীয় করে তোলে চুয়াডাঙ্গা সরকারি শিশু-পরিবারের মেয়েরা। চমৎকার পরিবেশনা ছিলো চুয়াডাঙ্গা কলাকেন্দ্রের ও চুয়াডাঙ্গা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের। এরপর প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিগণ শ্বেতকবুতর ও টুর্নামেন্টের ফেস্টুন সম্বলিত বেলুন উড্ডয়ন করা হয়। এরপর ফুটবলে কিক দিয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। আজ একই মাঠে ৩টি খেলা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৯টায় মুখোমুখি হবে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ও আলমডাঙ্গা উপজেলার বালিকা ফুটবল দল, সকাল সাড়ে ১০টায় মুখোমুখি হবে জীবননগর ও দামুড়হুদা বালিকা ফুটবল দল এবং বিকেল সাড়ে ৩টায় মুখোমুখি হবে জীবননগর ও দামুড়হুদা বালক ফুটবল দল।