মহেশপুরে গড়ে উঠেছে দেড় ডজন প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক স্কুল : চলছে নিয়োগ বাণিজ্য

মহেশপুর প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের মহেশপুরে নিয়মনীতির তোয়াক্ক না করে একটি এনজিও’ সংস্থা নামে বেনামে এমপিওভুক্তির আশ্বাস দিয়ে গড়ে তুলেছে প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক স্কুল। এক শ্রেণির মানুষ এ স্কুল নিয়ে করছে নিয়োগ বাণিজ্য। এ ধরনের নাম সর্বস্ব সাইন বোর্ড দিয়ে করা হয়েছে প্রায় দেড় ডজন স্কুল। জানুয়ারি ২০১৯ থেকে এ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় দেড় ডজন প্রতিবন্ধী বা অটিস্টিক স্কুলের নাম দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে এ সকল স্কুলগুলোতে ম্যানেজিং কমিটি তৈরি করে মাধ্যমিক স্কুলের প্যাটেনে ২০-২২ জন করে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। নিয়োগপ্রাপ্তদের কাছ থেকে ৪-৫ লাখ টাকা করে ডোনেশন হিসেবে নেয়া হচ্ছে। স্কুলগুলোতে খাতা কলমে ১শ’র উপরে শিক্ষার্থী দেখালেও প্রকৃতপক্ষে এ উপজেলায় সমাজেসবা অধিদফতরের তথ্য মতে অটিস্টিক শিশু আছে মাত্র ২৫ জন। উপজেলার নাটিমা বাজারে গড়ে তোলা হয়েছে একটি প্রতিবন্ধী স্কুল। যার নাম দেয়া হয়েছে আরইউএন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবুল হোসেন মেমোরিয়াল অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়।
বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন মিজানুর রহমান। তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ঢাকা মোহাম্মদপুরের রাম ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি নামের একটি বে-সরকারি সংস্থা তাদেরকে পরামর্শক হিসেবে সহযোগিতা করছেন। তাছাড়া ওই সংস্থাটি স্কুল এমপিওভুক্ত করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে তারা প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ ১১জন শিক্ষক, অফিস সহকারী ১জন, কম্পিউটার, আয়া, নৈশপ্রহরি, দফতরি ১জন ও গাড়ি চালক ২জন নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সকলের ডোনেশনে জমি ক্রয় ও ঘর তৈরি করা হয়েছে।
এবিষয়ে হুদা দুর্গাপুর প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক স্কুলের সভাপতি আমির হোসেন মেম্বারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, তাদের স্কুলে ৬০ জন প্রতিবন্ধী শিশু ভর্তি হয়েছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে গিয়াস উদ্দিনসহ আরও ৬ সহকারী শিক্ষককে। তাদের কাছ থেকে যে টাকা নেয়া হয়েছে তারমধ্যে ১১ লাখ টাকা দিয়ে ২০ শতক জমি ক্রয় করা হয়েছে এবং বাকি টাকা স্কুলের জন্য খরচ করা হচ্ছে। একটি এনজিও সংস্থার প্রতিনিধি শিক্ষকদের একদিনের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। মহেশপুরে এভাবে চলছে প্রতিবন্ধী স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে রমরমা বাণিজ্য। এ বিষয়ে মহেশপুর মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জানান, এ সম্পর্কে তাদের কিছু জানা নেই।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার জুলফিকার আলী জানান, শুনছি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক স্কুল প্রতিষ্ঠান করা হচ্ছে। কোনো কোনো স্কুল থেকে তাদেরকে দাওয়াতও দেয়া হয়েছে কিন্তু সরকারের দিকনির্দেশনা না থাকায় তারা এ সকল প্রতিষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছে না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এ সকল প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা সাধারণ ডিগ্রি ধারী। এদের অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী বিষয়ে কোনো প্রশিক্ষণ নেই। অভিযোগ উঠেছে, উল্লেখিত এনজিওটি বিদ্যালয় থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু মোবাইলে ওই এনজিও সংস্থার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এলাকার সচেতন নাগরিকগণ সরকারের উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা কেেরছন।

Leave a comment