গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ গাংনী সনো ডায়গনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দেয় প্রায় দেড় মাস আগে। দুইদিন বন্ধ থাকার পর নির্দেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে কার্যক্রম চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এ নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ ও জনমনে ক্ষোভ দেখা দিলেও প্রশাসন কার্যত নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
গেল ২২ জুলাই মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. শামীম আরা নাজনীন স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়, গাংনী সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনলাইনে আবেদন করেছিলো। আবেদনটি অসম্পূর্ণ হওয়ায় পেন্ডিং রয়েছে। ফলে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্পূর্ণ অবৈধ। দ্য মেডিকেল প্র্যাক্টিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরিজ রেগুলেশন অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রতিষ্ঠানটি বিধি বহির্ভূতভাবে পরিচালিত হওয়ায় জনস্বার্থে প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই নির্দেশ অমান্য করলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই নির্দেশনাপত্র প্রাপ্তির পর ২৩ জুলাই প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়। তবে কয়েকদিন প্রতিষ্ঠানটি তালাবদ্ধভাবে থাকলেও আবার তা চালু করে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম চলছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ প্রতিষ্ঠানটি চালুর জন্য নির্দেশনা দিয়েছে কী না এমন প্রশ্নে মেহেরপুর ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. অলোক কুমার দাস বলেন, কোনো প্রকার নির্দেশনা দেয়া হয়নি। স্বাস্থ্য বিভাগের কঠোর নির্দেশ অমান্য করেই বেআইনিভাবে গাংনী সনো ডায়াগনস্টিকের কার্যক্রম চলছে।
জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে এ বিষয়ে পত্র প্রদান করে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জানতে চাইলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে আমরা খুব ঝামেলায় আছি। সেখানে দক্ষ টেকনিসিয়ান ও ফিজিসিয়ান ছাড়াই রিপোর্ট দেয়ায় রির্পোটের ওপর নির্ভর করা যায় না। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পত্র ও মৌখিকভাবে অবহিত করার পরেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা উপেক্ষা করে কীভাবে এ প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সমালোচনা চলছে বিভিন্নমহলে। প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে গোপনে ম্যানেজ করেই তারা কার্যক্রম চালাচ্ছে কী-না তা খতিয়ে দেখারও দাবি উঠেছে।
এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত. হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক রোগীর ভুল রিপোর্ট দেয়ার প্রতিবাদ করায় গেল ২১ জুলাই গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. এম.কে রেজাকে গাংনী সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক বিজয় ও তার লোকজন রেজার ওপর হামলা করে। হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আহত ডা. রেজাকে। এ ঘটনায় স্থানীয় মানুষ ও হাসপাতালে কর্মরতদের প্রতিবাদের মুখে বিজয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। জামিনে মুক্ত হয়ে সে আবারও আগের মতোই ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য বিভাগকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে গাংনীর সেই ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু
