বিদ্যালয়ের পথে উত্ত্যক্তকারী ও সমাজের বাস্তবতা

বিদ্যালয়ের পথে ওঁৎপেতে থাকা উত্ত্যক্তকারীদের উৎপাত সামাজিক ব্যাধি। এ রোগ রেখে নারীর উচ্চশিক্ষা শতভাগ নিশ্চিত করা যেমন অসম্ভব তেমনই বাল্যবিয়ের মতো অনেক রোগ থেকে মুক্তির আশাও অনেকটা দূরাশা। ফলে সমাজে নারীর চলার পথ মসৃণ করা অতীব জরুরি। দেশ জুড়ে সেই চেষ্টাই চলছে।
উত্ত্যক্তকারী সমাজেরই কারো না কারো সন্তান। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় উত্ত্যক্তকারীদের বেশিরভাগই সমাজের খেটে খাওয়া সাধারণ পরিবারের সন্তান। পারিবারিক শিক্ষায় যতোটা না ঘাটতি তার চেয়ে সংস্কৃতি চর্চার নামে অপসংস্কৃতি থেকে পাওয়া কুশিক্ষা অধিকাংশেই দায়ী। স্বস্তা গল্পে সাজানো নাটক সিনেমা থেকে পাওয়া পথ আগলানো কথিত নায়কের চরিত্র দেখে নিজেকেও সেই আসনে বসাতে গিয়ে উঠতি বয়সীদের কেউ কেউ ডেকে আনে নিজের ও স্কুলছাত্রীর সর্বনাশ। গতপরশু চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার রাস্তায় এক স্কুলছাত্রীকে ছুরিকাঘাত তারই সর্বশেষ নগ্ন বহির্প্রকাশ। যা সভ্য সমাজের লজ্জা।
সমাজে যতোগুলো সামাজিক রোগ রয়েছে তা থেকে মুক্তির দাওয়ায় বা উপায়ও রয়েছে। সামাজিক অধিকাংশ ব্যাধির দাওয়ায়ের নাম সচেতনতা। এই সচেতনতা নামক টনিক তথা আলো যে সমাজে যতোটা ছড়ানো সম্ভব হবে সেই সমাজ ততোটাই ব্যাধিমুক্ত হবে। এ হিসেবে আমাদের সমাজে এখনও যে সচেতনতার ঘাটতি স্পষ্ট তা বলাই বাহূল্য। তবে সব সচেতনতার আলো সমাজের শুধু সচেতন মানুষগুলোর মাধ্যমেই ছড়ায় না, বিনোদনমূলক সুস্থধারার সংস্কৃতিচর্চা গণমাধ্যমের সামাজিক দায়-দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগেরও প্রয়োজন পড়ে। এজন্য দরকার ছদ্মবেশে নজরদারিও।
চুয়াডাঙ্গায় এক স্কুলছাত্রীর ছুরিকঘাতের পর প্রশাসন ও পুলিশের তড়িৎ পদক্ষেপ অবশ্যই বখাটেদের জন্য শতর্ক বার্তা। দৃষ্টান্তমূূলক শাস্তি সমাজের ওই ব্যাধি নিরাময়ে অবশ্যই সহায়ক হবে। সমূলে উৎপাটনে দরকার উদীয়মানদের সুপথে রাখার মতো সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চর্চা, পারিবারিক ও সামাজিক সুশিক্ষা।
পুনশ্চ: পেশিশক্তি প্রয়োগে নয়, শ্রম ও মেধা শক্তি প্রয়োগে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মধ্যেই লুকিয়ে নায়ক রূপ।