চুয়াডাঙ্গার ডিঙ্গেদহে বক্স বাজানোর অপরাধে স্কুলছাত্রকে মারধর

ডিঙ্গেদহ প্রতিনিধি: বড় ভাইয়ের বিয়েতে বক্স বাজানোর অপরাধে এক স্কুলছাত্রকে কিল, ঘুষি মেরে ও বুট দিয়ে চটকিয়ে মারাত্মক জখম করার অভিযোগ উঠেছে ডিঙ্গেদহ আনসার ব্যাটালিয়নে পিসি জাফর আলি, নায়েক আলাল, সিপাহী মাসুদ ও জুয়েলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ডিঙ্গেদহ আনসার ক্যাম্পপাড়ার ইদবারীর বাড়িতে। আহত স্কুলছাত্র সুরুজ ডিঙ্গেদহ আনসার ক্যাম্পপাড়ার ইদবারীর ছেলে ও সোহরাওয়ার্দ্দী স্মরণী বিদ্যাপীঠের ৯ম শ্রেণির ছাত্র। প্রতিবেশীরা আহত সুরুজকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেছে।
এলাকাবাসী ও সুরুজের মা লাভলী জানায়, তার বড় ছেলে সুজনের বিয়ে উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে তাদের বাড়িতে বক্সে গান বাজাতে থাকে। এ সময় একই গ্রামের জলিল, ওসমান বক্স জোরে বাজাতে নিষেধ করলে তার স্কুলপড়–য়া ছেলে সুরুজ (১৬) বক্সের সাউন্ড কমিয়ে বক্সে গান বাজাতে থাকে। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ডিঙ্গেদহ আনসার ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পের পিসি জাফর আলি, নায়েক আলাল, সিপাহী মাসুদ ও জুয়েল বাড়ির মধ্যে জোরপূর্বক ঢুকে তার ছোট ছেলে স্কুলছাত্র সুরুজকে কিল ঘুষি মেরে ফেলে দিয়ে বুকের ওপর বুট দিয়ে চটকাতে থাকে। ছেলেকে বাঁচানোর জন্য মা লাভলী ছেলেকে ছেড়ে দেয়ার জন্য পিসি জাফর আলির পা ধরে কান্নাকাটি করে অনুরোধ করতে থাকে। এ সময় পিসি জাফর আলি ঝাটকা মেরে লাভলীকে ছিটকে ফেলে দিয়ে চলে যান। প্রতিবেশীরা আহত সুরুজকে উদ্ধার করে চিকিসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ সংবাদ গ্রামের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে প্রায় শতাধিক মেয়ে একত্রিত হয়ে আনসার ক্যাম্পের ২নং গেটের সামনে প্রতিবাদ জানাতে থাকে। এমতাবস্থায় মেম্বর শওকত মাহাম্মুদ বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়ে সকলকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেন। এলাকাবাসী আরও জানান, আনসার ব্যাটালিয়নের পিসি জাফর আলি ইতোপুর্বে আরও কয়েকজনকে অন্যায়ভাবে মারধর করেছে। এলাকাবাসী ক্ষোভের সাথে জানায় বক্স বাজানোর কারণে যদি তাদের কোনো অসুবিধা হতো তবে মারধর না করে নিষেধ করতে পারতো। একজন নাবালক ছাত্রকে এভাবে মারধর করায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদ পেয়ে সরোজগঞ্জ ক্যাম্পর ইনচার্জ এসআই শেখ মাহাবুব রহমান ও চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই আব্দুর রহিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সকলকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানান।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য শওকত মাহামুদ জানান, উত্তেজিত মহিলাদের শান্ত করা হয়েছে। ঘটনার যেনো পুনরাবৃত্তি না হয় সে জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আহত সুরুজের পরিবারের সদস্যদের সাথে আপোষ মিমাংসা করে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আনসার ব্যাটালিয়নের সিও জানান, দুদিন ধরে ঐ বাড়িতে জোরে জোরে বক্সে গান বাজাচ্ছিলো। এর ফলে পাশে মসজিদে নামাজ পড়া, পাড়ার লোকজনের ঘুমানো ও ক্যাম্পর কাজে অসুবিধা হচ্ছিলো। এ জন্য ক্যাম্প হতে পিসি জাফর আলি কয়েকজন আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যদের সাথে নিয়ে সুরুজদের বাড়িতে গিয়ে নিষেধ করে। তবে তাদের কাউকে মারধর করা হয়নি।