চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্লাস্ট রোগের পরও বাড়বে বোরো উত্পাদন!

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বোরো ধান ক্ষেতে ব্লাস্ট (ছত্রাক সৃষ্ট এক ধরনের রোগ) ছড়িয়ে পড়ায় উত্পাদন কিছুটা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে অনেক কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তবে গতবারের চেয়ে এবার আবাদ বেশি হওয়ায় উত্পাদন বাড়বে বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে হাওর এলাকায় আগাম জাতের ধান কাটা শেষ হয়েছে। গত মরসুমে এ অঞ্চলে অকাল বন্যায় প্রায় ৩০ লাখ টন ফসলহানি হয়েছিলো।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি মরসুমে সারাদেশে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪৭ লাখ ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে। কিন্তু আবাদের পরিমাণ ৪৯ লাখ হেক্টর ছাড়িয়ে গেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ হওয়ার পাশাপাশি পর্যাপ্ত সারের সরবরাহ, নিরবচ্ছিন্ন সেচ, সময়মতো বৃষ্টিপাত এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশা করা হচ্ছে এবার বোরোর বাম্পার ফলন হবে।
গত ৮ এপ্রিল সচিবালয়ে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ বছর দেশে ১ কোটি ৯০ লাখ টন বোরো চাল উত্পাদন হবে। কিন্তু হঠাত করে ব্লাস্টের আক্রমণে উত্পাদন কিছুটা কম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরসূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত ১৫ জেলার বোরো ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ আক্রমণ করেছে। আক্রান্ত জেলাগুলো হলো বগুড়া, গাইবান্ধা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, সাতক্ষীরা, চাঁদপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, জামালপুর, মৌলভীবাজার ও কিশোরগঞ্জ। এ রোগের কারণে আধাপাকা ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে। ওষুধ দেয়ার পরও কিছু হচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা স্থানীয় কৃষি অফিসে ভিড় জমাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মহসিন বলেন, সারাদেশে বোরো ধান এখন পেকে গেছে, কোথাও কোথাও কাটা শুরু হয়ে গেছে। এখন ব্লাস্টের আক্রমণ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা বোরোর মোট উত্পাদনে কোনো প্রভাব ফেলবে না। এবার বোরো চালের উত্পাদন ২ কোটি টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি।
বীজ উইংয়ের সাবেক মহাপরিচালক আনোয়ার ফারুক বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই দেশে গম ও ধানক্ষেতে ব্লাস্টের আক্রমণ হচ্ছে। এটা যেহেতু বীজ বাহিত রোগ, তাই রোপণের আগে অবশ্যই বীজ শোধন করে নিতে হবে। তবে ব্লাস্ট নির্মূলে সরকারকে বিশেষ কর্মসূচি নিতে হবে।