মেহেরপুরে ভুট্টা ক্রয়কেন্দ্রে ডাকাতির ঘটনায় ৪জন গ্রেফতার

স্বীকারোক্তি : পূর্বপরিকল্পিতভাবেই ডাকাতির ঘটানো হয়
মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর শহরে গত শুক্রবার রাতে ভুট্টা ক্রয়কেন্দ্রে অস্ত্র ঠেকিয়ে ডাকাতির ঘটনায় ৪জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাতের বিভিন্ন সময়ে কয়েকটি দলের অভিযানে তাদেরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃতরা। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে গোরস্থানপাড়া এলাকার ছামারুল ইসলামের ছেলে আলামিন (২৭), রবিউল হোসেনের ছেলে কালু মিয়া (২৫), মিয়ারুলের ছেলে চন্দন হোসেন (২৫) ও একই পাড়ার রাহাতুল হোসেন।
মেহেরপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) শেখ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ডাকাত হওয়ার রাতেই পুলিশ জড়িতদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পুলিশের প্রাথমিক অভিযানে সন্দেহভাজনদের কাউকেই নিজবাড়িতে পাওয়া যায়নি। প্রয়োজনীয় সোর্সদের মাধ্যমে তাদের অবস্থান শনাক্ত ও গতিবিধি নজরদারি করা হয়। এক পর্যায়ে শনিবার রাতে তাদের গ্রেফতারে সক্ষম হয় পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, কালু ও চন্দন একটি তামাক কোম্পানির ডিপোতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। ডিপো ও ভুট্টা ক্রয়কেন্দ্র পাশাপাশি ভুট্টা ক্রয়কেন্দ্রের যাবতীয় কাজকর্ম তারা নজরদারি করে। আলামিন রঙ মিস্ত্রি হিসেবে ওই ভুট্টা ক্রয়কেন্দ্রের পাশের একটি ভবনে কিছুদিন আগে কাজ করেছিলো। ভুট্টা ক্রয়কেন্দ্রের লেনদেনের বিষয়টিও আলামিনও খোঁজ নেয়। পরে তাদের দলনেতার সাথে পুরো বিষয়টি শেয়ার করে ডাকাতির সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মতেই শুক্রবার রাতে তারা ডাকাতি করে। আগে থেকে সবকিছু জানাশোনা থাকায় কয়েক মিনিটের মধ্যেই টাকা ও মালামাল ডাকাতি করে স্থান ত্যাগ করে ডাকাতরা। ডাকাতির সময় আলামিন ও কালু সড়কে দাঁড়িয়ে পাহারা করছিলো বলেও স্বীকার করেছে তারা।
গ্রেফতারকৃতদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, কালুর নামে ডাকাতি মামলাসহ ৩টি মামলা ও চন্দনের নামে ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা রয়েছে। অপর দুজনের নামেও মাদক ও দাঙ্গার মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত ৪জনই একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য।
ডাকাতি হওয়া টাকা ও মালামাল উদ্ধার ও মূলহোতা গ্রেফতারের আশাবাদ ব্যক্ত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) বলেন, ভুট্টা ক্রয়কেন্দ্রের আশেপাশে কয়েকটি ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। সবই ওই সংঘবদ্ধ চক্রের কাজ বলে পুলিশ নিশ্চিত। তাই যেকোনো মূল্যের মূলহোতাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ। ডাকাতি হওয়া টাকা ও মালামাল উদ্ধারের বিষয়েও পুলিশ আশাবাদি। তবে মামলা তদন্ত ও আগামী গ্রেফতারের স্বার্থে ৪জনের স্বীকারোক্তির অন্যান্য বিষয়গুলো গোপন রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত: মেহেরপুর শহরের গো-হাটের পাশে সিপি বাংলাদেশ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ভুট্টা ক্রয়কেন্দ্রে গত শুক্রবার রাতে হানা দিয়ে ৮ লাখ টাকা, কেনাবেচার কাগজপত্র ও মালামাল লুটে করে একদল সশস্ত্র ডাকাত। এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষ গত শনিবার সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।