কুমিল্লার নাশকতার মামলায় খালেদা জিয়া গ্রেফতার

এখনই তার বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজন নেই : চিকিৎসক

স্টাফ রিপোর্টার: জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নাশকতার একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে ৮জনকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় গতকাল রোববার খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখানো হয়। গতকাল এই মামলায় খালেদা জিয়ার হাজিরা দেয়ার দিন ছিলো। কুমিল্লায় খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য মো. কাইমুল হক জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে খালেদা জিয়াকে কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হয়নি। পরে কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মুস্তাইন বিল্লাহ তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখান।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিনের আবেদন করা হলে আদালত ১০ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য করেন। ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি গভীররাতে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করা হলে আগুনে পুড়ে ৮জন যাত্রী নিহত হন। এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালত আগেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গত ১২ মার্চ গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর কুমিল্লার আদালতে খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের বিষয়ে আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওইদিন বিকেলে আদালতের বিচারক তার বিরুদ্ধে হাজিরা পরোয়ানা জারি করেন আদালত। সেই হাজিরা পরোয়ানা কারাগারে পাঠানো হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী আইকন পরিবহনের একটি বাস কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় আসামাত্র দুর্বৃত্তরা পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে। এতে ঘটনাস্থলে ৭জন ও হাসপাতালে নেয়ার দুদিন পর আরও একজনসহ মোট ৮জন মারা যান ও ২৭ জন আহত হন। এ ঘটনায় ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান হাওলাদার বাদী হলে দণ্ড বিধির ৩০২/৩৪ ধারায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলা তদন্ত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই মো. ইব্রাহিম। দুই বছর এক মাস তিন দিন পর ২০১৭ সালের ৬ মার্চ কুমিল্লার আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও সালাউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ ও বিএনপির উপদেষ্টা সাবেক সাংসদ মনিরুল হক চৌধুরী, চৌদ্দগ্রামের জামায়াতের সাবেক সাংসদ সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির সাহাবউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. মিজানুর রহমান, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির শাহজাহান,চিওড়া ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির ও ক্যাডার মেজবাহ উদ্দিন ওরফে নয়ন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদাসহ ৭৮ জনের নামে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। খালেদা জিয়া মামলার ৫১ নম্বর আসামি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ৫ বছর সাজা পেয়ে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া।