মহেশপুর দত্তনগর ফার্মে আলু দ্বিগুণ দামে টেন্ডার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: এ বছর খোলা বাজারে উন্নত মানের আলু বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ টাকা কেজি দরে। কিন্তু ঝিনাইদহ মহেশপুর উপজেলার দত্তনগর বিএডিসি কৃষি খামারে বীজ আলু বের করে নেয়ার পর অবশিষ্ট অবীজ, ফাটা, পঁচা, কাটা ও ছোট আলু টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে ২১ টাকা থেকে ২২ টাকা কেজি দরে! প্রশ্ন দেখা দিয়েছে প্রায় দ্বিগুণ দামে ব্যবসায়ীরা কেন এই আলু কিনলেন? নিশ্চয় লোকসান দেয়ার জন্য কেউ এমন কাজ করবেন না। তাহলে কী কাজে লাগানো হবে এগুলো? দত্তনগর বীজ উৎপাদনকারী খামারের পাঁচটি ফার্মে অবীজ, ফাটা, পঁচা, কাটা ও ছোট আলু যেগুলো বীজ উৎপাদন যোগ্য নয়, টেন্ডার দেয়া হয় গত ২১ মার্চ। কেজি প্রতি সর্বোচ্চ ২১ টাকা থেকে ২২ টাকা দর দিয়ে টেন্ডার পায় ৫টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কাটা, ফাটা ও পঁচা আলুর আড়ালে বীজ উপযোগী আলুও বিক্রি করা হয়েছে গোপনে। সেই কারণেই এতো বাড়তি দাম দিয়ে তা ঠিকাদাররা কিনেছেন। যদিও খামারের কোনো কর্মকর্তা বা ঠিকাদার এই অভিযোগ স্বীকার করেননি। অনিচ্ছুক টেন্ডার বঞ্চিত এক ঠিকাদার জানান, প্রতি বস্তায় ১১০ থেকে ১২০ কেজি যাই হোক না কেনো, হিসেব ধরা হয় ৫৫ কেজির বস্তা হিসেবে। আলুর টেন্ডার পাওয়া প্রতিষ্ঠান হালিম ট্রেডার্সের মালিক আব্দুল হালিম বলেন, ‘আমি এ আলু বীজ হিসেবে কিনেছি। তাও আবার সর্বোচ্চ দামে নিতে হয়েছে।’ ফার্মের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাজার মূল্য ছাড়া তিন গুণ দাম বেশি দিয়ে অবীজ, ফাটা, পঁচা, কাটা ও ছোট আলু কিনে ঠিকাদাররা লাভ করবে কীভাবে বুঝতে পারছি না। এ নিয়ে আমাদের মাঝেও আলোচনা হচ্ছে।’ দত্তনগর বিএডিসি কৃষি ফার্মের যুগ্ম-পরিচালক আব্দুস সামাদ খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি চুয়াডাঙ্গায় আছি। যা কিছু জানা প্রয়োজন গোকুলনগর কৃষি ফার্মের উপ-পরিচালক (ডিডি) তপন কুমারের কাছ থেকে জেনে নিবেন।’ গোকুলনগর কৃষি ফার্মের উপ-পরিচালক (ডিডি) তপন কুমার বলেন, ‘খুচরা বাজারে এখন আলুর কেজি ১২ টাকা থেকে ১৪ টাকা। কিন্তু আমরা যে ফাটা, পঁচা, কাটা ও ছোট আলু টেন্ডারের মাধ্যমে ২১ টাকা ও ২২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি, তা বাজারে পাঁচ টাকা কেজি দরেও কেউ কিনবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা টেন্ডার পেয়েছে, তারা এসব আলু কোল্ড স্টোরে এখন রেখে দেয়। আগামী বছর এসব আলু বীজ হিসেবে বিক্রি করবে বলে জানতে পেরেছি।’