চুয়াডাঙ্গা সাদেক আলী মল্লিকপাড়ার মেধাবী ছাত্র রুবেল অবশেষে মারা গেছেন

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সাদেক আলী মল্লিকপাড়ার আজিজুল হাকিম রুবেল জিবিএস রোগে আক্রান্ত হয়ে অবশেষে মারা গেছেন (ইন্নাল্লিল্লাহ…….রাজেউন)। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নামাজে জানাজা শেষে তার লাশ দাফন সম্পন্ন হতে পারে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সাদেক আলী মল্লিকপাড়ার মোটরশ্রমিক মিন্টু শেখের ছেলে আজিজুল হাকিম রুবেল ছিলো মেধাবী ছাত্র। তিনি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে এবার অনার্স ৩য় বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে প্রায় ১১-১২ দিন আগে রাতে হাত-পা অবশ হওয়ার উপক্রম হয়। এরপর ভোর রাতের দিকে তার হাত-পা প্যারালাইসিস হয়ে যায়। ওই সময় পরিবারের সদস্যরা তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি করার পরামর্শ দেয়। সেখানকার চিকিৎসকরা বিভিন্ন পীরক্ষা-নিরীক্ষা শেষে নিশ্চিত হয় রুবেল জিবিএস রোগে আক্রান্ত। তাকে চিকিৎসার জন্য দরকার প্রায় ৭ লাখ টাকা। কিন্তু মোটরশ্রমিক পিতার পক্ষে এতো টাকা জোগাড় করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। রুবেলের পরিবার ও তার বন্ধু-বান্ধব শুরু করে টাকা সংগ্রহের চেষ্টা। কিন্তু তাদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। দীর্ঘ ৮দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় অবশেষে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি মারা যান। গতকাল সোমবার রাতেই রুবেলের লাশ রাজশাহী থেকে বাড়িতে আসার কথা রয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সবুজপাড়া জামে মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে জান্নাতুল মাওলা কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হতে পারে।
উল্লেখ্য, জিবিএস রোগ নামটি একটু অপরিচিত। কিন্তু আমাদের আশপাশের অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। জিবিএস (গুলিয়ান-বারি-সিনড্রোম) একটি জীবাণু সংক্রমণজনিত রোগ। ক্যামপাইলো ব্যাকটার জিকুনি (ঈধসঢ়ুননধপঃবৎ লবলঁহর) নামের একটি ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের ফলে জিবিএস দেখা দেয় বলে সাধারণভাবে মনে করা হয়। সাধারণ দেখা যায় কয়েকদিন থেকে পাতলা পায়খানার সঙ্গে একটু জ্বর তারপর হাত-পায়ে অবশ অবশ ভাব এবং ক্রমান্বয়ে হাত ও পায়ের শক্তি কমে যায় এমন কি হাত-পা নাড়ানোর ক্ষমতা থাকে না। এটি ক্রমান্বয়ে শরীরের পেরিফেরি বা দূরের অংশ থেকে সেন্ট্রাল বা ওপরের দিকে আসতে থাকে। ভয়ের ব্যাপার হলো কিছু কিছু ক্ষেত্রে রেসপেরেটরি মাংসপেশী প্যারালাইজড হয়ে শ্বাস নিতে না পেরে ৫ থেকে ৬ শতাংশ রোগী প্রাণ হারায়।