দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গা ও বাঘাডাঙ্গার মিশন পল্লিতে স্টার সানডে পালিত

ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার শপথ
শরিফ রতন: দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গা ও বাঘাডাঙ্গায় নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র স্টার সানডে। এ উপলক্ষে ভোরে গির্জায় প্রার্থনার আয়োজন করেন যিশু খ্রিস্টের অনুসারীরা। প্রার্থনায় ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার শপথ নেন তারা। সূর্যোদয়ের পর প্রাতঃকালীন প্রার্থনা ও উপাসনা শুরু হয় গির্জাগুলোতে। যিশু খ্রিস্টের পুনরুত্থান দিবস স্টার সানডের অনুষঙ্গ হিসেবে চলে বাইবেল পাঠ, সমবেত সঙ্গীত, বিশেষ সঙ্গীত ও যিশু খ্রিস্টের প্রশংসা আরাধনা। খ্রিস্টান ধর্মানুযায়ী এই দিনে খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্টের পুনরুত্থান হয়েছিলো। গুড ফ্রাইডেতে বিপথগামী ইহুদিরা যিশুখ্রিস্টকে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করে। মৃত্যুর তৃতীয় দিবস অর্থাৎ রোববার তিনি জেগে উঠেছিলো। যিশুখ্রিস্টের এই পুনরুত্থান খ্রিস্ট ধর্মবিশ্বাসীদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কুসংস্কার ও অন্ধকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের পাশাপাশি মানবতার ধর্মকে প্রচার করায় যিশু খ্রিস্টকে হত্যার শিকার হতে হয় বলে মনে করেন অনুসারীরা। কার্পাসডাঙ্গা ক্যাথলিক গির্জার ফাদার অরুন হালসোনা জানান, আজ রোববার আমাদের যিশু খ্রিস্টের পৃথিবীতে পুনরুত্থান ঘটে। আমরা দিনটি আনন্দের সাথে পালন করছি। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা শুভ বড় দিনের পর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান স্টার সানডে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে। গতকাল রোববার নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের কবরস্থানে গিয়ে কবরস্থান পরিস্কার ও প্রার্থনা করার মধ্যদিয়ে দিনটি শুরু হয়। এরপর সকাল ৮ টায় নারী-পুরুষ সবাই ধর্মীয় উপসানলয়ে গিয়ে প্রার্থনা করার মধ্যদিয়ে শেষ করে ধর্মীয় কার্য। তিনি বলেন যিশু খ্রিস্টের মৃত্যুর তৃতীয় দিনে রোববার তিনি ফিরে আসেন। পুনরুত্থানের ওই রোববারটি স্টার সানডে হিসেবে পরিচিত। যিশু খ্রিস্টের এই ফিরে আসার দিন স্মরণে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা পালন করেন স্টার সানডে। ২০০০ বছর আগে ইসরায়েলের বেথেলহেমে এক গোশালায় জন্ম নেন যিশু খ্রিস্ট। পৃথিবীতে অতি সাধারণ মানুষের মতো জন্ম নিয়েও ধনী-দরিদ্র সকল মানুষের সাথে একাত্ম হয়েছেন তিনি। মানুষের মুক্তির জন্য ন্যায় ও শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে তিনি নিজেই ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন। ‘ধর্ম মানুষের জন্য, মানুষ ধর্মের জন্য নয়’ এমন কথায় বলে গেছেন যিশু খ্রিস্ট। এদিকে গতকাল রোববার বিকেলের দিকে কার্পাসডাঙ্গা ক্যাথলিক গির্জা প্রাঙ্গণে ক্যাথলিক অনুসারীদের যুবক-যুবতীরা তাদের উদ্যোগে তাদের দাদু-দিদি, নানা-নানিদের যাদের বয়স ৬০ বা তার ঊর্ধ্বে সেসব দম্পতিদের আবার নতুন করে বিয়ে দেয়। এজন্য বিকেলে তাদের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হয়। আজ বিকেলে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হবে গান বাজনা করে। গায়ে হলুদ ও বিয়ে অনুষ্ঠানে ফাদার অরুন হালসোনা তাদেরকে প্রার্থনা করে দেন।