নৌকায় ভোট চাওয়া আমার রাজনৈতিক অধিকার : প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জেলা সফরে গিয়ে নৌকায় চাওয়া নিয়ে সমালোচনার জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসেবে দলীয় প্রতীক নৌকায় ভোট চাওয়া তার রাজনৈতিক অধিকার। এ বছরের শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন মহানগর ও জেলা সফরে গিয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট চান শেখ হাসিনা। এর মধ্যদিয়ে তিনি রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবহার করে দলীয় প্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন বিএনপি নেতারা।

গত বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁওয়ে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনের পর জনসভায় যোগ দিয়ে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার ওয়াদা নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর সমালোচনা করে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‌এগুলো সবই অনৈতিক ও নির্বাচন কার্যবিধির পরিপন্থি। তিনি যদি আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নিজ খরচে জনসভা করে ভোট চাইতেন, তাহলে কারও কিছু বলার ছিলো না। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের শুরুতে এ প্রসঙ্গে কথা বলেন দলটির সভানেত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, নৌকায় ভোট চাওয়া আমাদের অধিকার। আমি তো একটা দলের সভানেত্রী। কাজেই আমি যেখানেই যাব, অবশ্যই আমার দলের জন্য আমি ভোট চাইবো। এটা আমার রাজনৈতিক অধিকার।

২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হতে চলায় তার আগেই একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ বছরের শেষেই নির্বাচন হবে বলে কয়েকটি জনসভায় বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনের সভায় তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন হবে। অবশ্যই আমাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। নৌকায় ভোট চাইতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে, একমাত্র নৌকায় ভোট দিলে এদেশের মানুষ উন্নতি পায়। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, নৌকায় ভোট দিয়েই দেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে, রাষ্ট্রভাষা বাংলা পেয়েছে আর দেশের উন্নতির ছোঁয়াটাও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই পেয়েছে। কাজেই এ কথাটা সকলকে বলতে হবে, যে আমরা নৌকা মার্কায় ভোট চাই আর দেশের উন্নয়ন করার সুযোগ চাই। উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এখান আমরা অনেক কাজ করতে পারি, যার মাধ্যমে আমরা নিজেরাই অর্থ উপার্জনের পথ করে নিতে পারি। ‌কিন্তু এদিকে কেউ কখনো দৃষ্টি দেয়নি। বাংলাদেশ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখান থেকেই আমাদের বিরাট অর্থনেতিক অর্জন হতে পারে। কিন্তু এগুলো কখনও কেউ সেভাবে বোঝেও নাই, ভাবেও নাই।

শুধু মানবিক কারণে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে স্থান দেয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ভূমিকায় আন্তর্জাতিক বিশ্ব ভূয়সী প্রশংসা করেছে। সারা বিশ্ব এখন বাংলাদেশের সাথে রয়েছে। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করায় দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত হয়েছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে নিজেদের সম্পদ দিয়েই উন্নতি করতে হবে।

তিনি বলন, আমরা বিদেশি বিনিয়োগ আনবো। এ বিনিয়োগ আমাদের প্রয়োজন। সেই সাথে সম্পদ থাকতে হবে, যেন কারও মুখাপেক্ষী না হতে হয়, কারও কাছে যেন ছোট হয়ে চলতে না হয়।