আসতে পারে স্বাস্থ্য বিভাগের আরও উচ্চ পর্যায়ের তদন্তটিম

চুয়াডাঙ্গায় অস্ত্রোপচারে ২০ জনের চোখ নষ্টের ঘটনায় ২ এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন কি না স্পষ্ট নয়

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় অস্ত্রোপচারের কারণে ২০ নারী-পুরুষের চোখ তুলে ফেলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি তদন্ত শুরু করেছে। শনিবার দুপুরে ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেল্থ সেন্টারের চক্ষু বিভাগ ও রোগীদের বাড়িতে যায় এ কমিটি। প্রয়োজনীয় তথ্য, ওষুধপথ্য ও নমুনা সংগ্রহ করেছে কমিটি। তবে ২ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার কথা থাকলেও তা নাও হতে পারে। তদন্ত কমিটি চায় স্বাস্থ্য বিভাগের আরও উচ্চ পর্যায়ের তদন্তটিম এ ঘটনার তদন্ত করুক।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটিসূত্রে জানা গেছে, ডা. শফিউজ্জামান সুমনের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি শনিবার বেলা ১১টার দিকে ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেল্থ সেন্টারে যায়। সেখানে রোগীদের অপারেশনে ব্যবহৃত সকল ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করেন তারা। এ সময় অপারেশন থিয়েটার ও হাসপাতালের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করে তদন্ত কমিটি। পরে তদন্ত কিমিটি ক্ষতিগ্রস্ত রোগী চুয়াডাঙ্গার আলুকদিয়া গ্রামের ওলি মোহাম্মদের বাড়িতে যায়। এরপর আরেক ক্ষতিগ্রস্ত চুয়াডাঙ্গার গাইদঘাট গ্রামের গোলজার হোসেনের সাথেও কথা বলেন তারা। তদন্ত কমিটি আজ রোববারও তদন্ত করবে। কাল নমুনাগুলো সংশ্লিষ্ট দফতর ঢাকায় প্রেরণ করা হবে বলে জানান তারা।
উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের কেদারগঞ্জ পাড়ায় ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেল্থ সেন্টারে গত ৫ মার্চ ২৪ রোগীর চোখে ছানি অপারেশন করা হয় ডা. মোহাম্মদ শাহীনের তত্ত্বাবধানে। অপারেশনের পর তীব্র যন্ত্রণায় কাতর হয়ে পড়েন রোগীরা। ২০ থেকে ২৪ মার্চের মধ্যে ২০ নারী-পুরুষের ইনফেকশনে আক্রান্ত চোখগুলো অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ঢাকার ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল থেকে তুলে ফেলতে হয়েছে। অরোব্লু নামক ভারতীয় একটি ওষুধের ব্যাকটেরিয়া থেকে এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে বলে হাসপাতাল কর্তপক্ষের ধারণা। গত বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম ঘটনা তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চক্ষু কনসালটেন্ট ডা. শফিউজ্জামান সুমনকে। অন্য দুই সদস্য হলেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. আবুল হোসেন ও সার্জারি কনসালটেন্ট ডা.তারিক হাসান শাহিন। পরদিন থেকে ওই হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়।
২ এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা। এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. শফিউজ্জামান সুমন মাথাভাঙ্গাকে বলেন, একই সঙ্গে ২০ জন রোগীর চোখ তুলে ফেলার ঘটনা সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। তাই আমরা চাই স্বাস্থ্য বিভাগের আরও উচ্চ পর্যায়ের তদন্তটিম এ ঘটনা তদন্ত করুক। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাল রোববার (আজ) সিভিল সার্জনের সাথে আলোচনা করবো। পাশাপাশি তদন্তের কাজও করবো। পরে স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।