বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা ফেরত দিচ্ছে ইম্প্যাক্ট

চোখ হারানো ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে ক্ষতিপূরণ দাবি করে উচ্চ আদালতে মামলার প্রস্তুতি

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. শাহীনসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি দিন দিন জোরদার হচ্ছে। ইতোমধ্যেই তার ডাক্তারি সনদপত্রগুলোর ফটোকপি চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন সংগ্রহ করেছেন। বিগত দিনে ইম্প্যাক্ট হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে পুঞ্জিভূত ক্ষোভেরও বহির্প্রকাশ ঘটতে শুরু করেছে। অপরদিকে ইম্প্যাক্ট হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর চোখ হারানো ২০ জনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের নিকট থেকে চিকিৎসার জন্য নেয়া ৩ হাজার করে টাকা ফেরত দিতে শুরু করেছেন সংশ্লিষ্টরা। টাকা ফেরত পেলেও চোখ হারানোর কষ্ট রূপ নিচ্ছে পুঞ্জিভূত ক্ষোভে।
চুয়াডাঙ্গা কেদারগঞ্জস্থ ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে অপারেশন করে ত্রুটির কারণে পরবর্তিতে ১৯ জনের একটি করে চোখ তুলে ফেলতে হয়েছে। আরও একজনের চোখ দ্রুত তুলে না ফেললে যন্ত্রণা থেকে রেহায় মিলছে না। একটি করে চোখ তোলার পর অপর চোখও যাতে সংক্রমিত না হয় তা নিশ্চিত করতে পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন। ক্ষতিগ্রস্তদের অধিকাংশই হতদরিদ্র। সচেতনতায়ও ঘাটতে রয়েছে। ফলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে মনিটরিঙের বিশেষ উদ্যোগ নেয়ারও দাবি উঠেছে। অপরদিকে আগামীকাল রোববার উচ্চ আদালতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে বলে খবর পাওয়া গেছে।
গত ৫ মার্চ অপারেশন করা ২৪ জনের মধ্যে ২০ জনের চোখে ইনফেকশন দেখা দেয়ায় তাদের অপারেশন করা চোখ তুলে ফেলতে হয়। এ ঘটনা পত্র পত্রিকায় প্রকাশের পর চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ৩ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করেছেন। আগামী ২ এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করার কথা। এছাড়াও সিভিল সার্জন পত্র দিয়ে ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউিনিটি হেলথ সেন্টারে চোখের চিকিৎসা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তলব করা হয়েছে চিকিৎসকের সনদপত্র। সূত্র বলেছে, অভিযুক্ত চিকিৎসক নিজেকে রক্ষার চেষ্টায় পদস্থ কর্তাদের নিকট তদবির শুরু করেছেন। অপারেশনে ত্রুটি নাকি অপারেশনে ব্যবহৃত ওষুধ পথ্যে ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়ার কারণে ইনফেকশন? এ নিয়ে বিপরীতমুখি বক্তব্য থাকলেও ২০ জনের চোখ বিনষ্টের জন্য অপারেশনের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসককেই দায়ি করছেন অনেকে। চোখ হারানো ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে ক্ষতিপূরণ দাবি করে উচ্চ আদালতে মামলার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এদিকে অপারেশনের সময় খরচ বাবদ নেয়া রোগী প্রতি ৩ হাজার করে টাকা এখন ওই ক্ষতিগ্রস্ত ২০ জনের বাড়ি গিয়ে ফেরত দেয়া হচ্ছে বলে গতকাল খবর পাওয়া গেছে।