জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার কুফল এখন পদে পদে পরিলক্ষিত হচ্ছে। হাট-বাজারেই শুধু উপচেপড়া ভিড় নয়, হাসপাতাল থেকে শুরু করে বাস ট্রেন স্টিমারে কোথায় ভিড় নেই? সংকট দূরের কথা সংকটের পূর্বাভাস ফুটে উঠলেই তার দাম আকাশ চুম্বি, তারপরও কি তা নিয়ে কাড়াকাড়িতে কমতি আছে? প্রতিবেশী দেশ থেকে গরু আনতে গিয়ে পাখির মতো প্রাণ হারাতে হচ্ছে মূলত ওই জনসংখ্যা বিস্ফোরণের কারণেই নয়কি? চালের বাজার চড়তেই আছে, আনাজের চাহিদা মেটাতে গিয়ে আগাম আবাদে দিতে হচ্ছে মাত্রারিক্ত কীটনাশক। চাক্ষুস ক্ষতির পরও নিরুপায় মূলত ওই বেসামাল জনসংখ্যার কারণেই। উপায়?
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালটির ক্রমোন্নতির পরও চাহিদার তুলনায় যে অপ্রতুল তা অস্বীকার করার জো নেই। আভ্যন্তরীণ বিভাগগুলোতে শয্যা সংখ্যার কয়েকগুন বেশি রোগী, বহির্বিভাগে সকাল থেকে দুপুর অবদি লেগে থাকে লম্বা লাইন। চিকিৎসা সেবা নিতে এসে ভিড়ের মধ্যে শুধু গলার হারই হারাতে হয় না, ভ্যাপসা গরমে অনেক রোগও সংক্রমিত হয়ে ছড়ায় অন্যদের মাঝেও। এরপর গ্রামের সরলসোজা রোগী ও রোগীর লোকজনের সাথে প্রতারণা করার জন্য একশ্রেণির প্রতারক ও দালালচক্রের উৎপাত লেগেই থাকে। চিকিৎসা সেবাদানে লোকবলের অপ্রতুলতার পাশাপাশি চিকিৎসকদের অধিকাংশেরই বিলম্বে সরকারি হাসপাতালে প্রবেশের অভিযোগও অমূলক নয়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দৃশ্যপট পুরোনো হলেও সৃষ্ট সমস্যাবলীর সমাধান দরকার। যদিও উপচেপড়া ভিড় প্রত্যাশা পূরণের ক্ষেত্রে অন্তরায়।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে উদাসীনতা কাম্য নয়। ‘একটি হলে ভালো হয় দুটির বেশি সন্তান নয়’ স্লোগানের পাশাপাশি নামমাত্র কর্মসূচির মধ্যদিয়ে জনসংখ্যা যে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে না তা বলাইবাহূল্য। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি দক্ষতা বৃদ্ধি সময়েরই দাবি। বিদেশে শ্রম বিকিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অজনের স্বপ্ন নিয়ে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে উদাসীনতা সর্বনাশ ডেকে আনবে। যার আলামত ইতোমধ্যেই স্পষ্ট। অবশ্যই আমরা জাতিগতভাবে অন্য অনেকের চেয়েই অনেক এগিয়েছি। আরও এগুতে হলে অগ্রযাত্রার গতি বাড়তে হবে। এ গতি জনসংখ্যার ভারে থেমে যাক তা নিশ্চয় কারো কাম্য নয়। গতি বাড়াতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ জরুরি।