অনলাইন ডেস্ক: জাতিসংঘের ২০১৮ সালের ‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট’ অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ নির্বাচিত হয়েছে ফিনল্যান্ড। তারপরেই আসছে নরওয়ে, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ড৷ কল্যাণ, আয়, স্বাধীনতা, আস্থা, আয়ু, সামাজিক সহায়তা ও বদান্যতা এই ছয়টি উপাদানের ভিত্তিতে একটি দেশ বা জাতির ‘সুখ’ বিচার করা হয়। সেই বিচারে তালিকার সবার উপরে উঠে এসেছে ৫৫ লাখ বাসিন্দার দেশ ফিনল্যান্ডের নাম। আর বিশ্বের সবচেয়ে অসুখী দেশগুলি হলো- বুরুন্ডি, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, দক্ষিণ সুদান, তানজানিয়া ও ইয়েমেন – এমনকি রুয়ান্ডা ও সিরিয়ার মানুষরাও নাকি তাদের চেয়ে বেশি সুখী! ২০১৮ সালের ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট অনুযায়ী, তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ১৫৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ১১৫, গতবছর যা ছিল ১১০৷ সার্ক দেশগুলির মধ্যে পাকিস্তানের স্থান হলো ৭৫, ভুটান রয়েছে ৯৭তম স্থানে, ১০১-এ নেপাল৷ তালিকায় বাংলাদেশের চেয়ে ‘অসুখী’ সার্ক দেশগুলি হলো শ্রীলঙ্কা (১১৬) ও ভারত (১৩৩)৷ ওদিকে রোহিঙ্গা সমস্যাপীড়িত মিয়ানমারের স্থান ১৩০-এ৷ সুখের তালিকার সেরা দশে কিন্তু জার্মান (১৫), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (১৮) বা যুক্তরাজ্যের (১৯) মতো দেশের স্থান হয়নি৷ ২০১২ সালের প্রথম রিপোর্টের পর থেকে স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশগুলি যেন সুখ বা সুখবোধের ইজারা নিয়ে রেখেছে৷ দৃশ্যত এর কারণ হলো এই যে, স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশগুলিতে ব্যক্তিস্বাধীনতার সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তার এক সুন্দর সমন্বয় ঘটেছে – যে কারণে এসব দেশের মানুষ উচ্চ আয়করে বিশেষ আপত্তি করেন না৷ ২০১৮ সালের রিপোর্টে অভিবাসীদের সুখ-দুঃখের দিকে আলাদা করে নজর দেওয়া হয়েছে৷ এখানেও ফিনল্যান্ড সবার সেরা, যদিও সেদেশে বিদেশির সংখ্যা সাকুল্যে তিন লাখ৷ দেখা যাচ্ছে, সুখের তালিকায় এমনিতেই যারা টপ টেনে, ঠিক সেই দেশগুলিতেই অভিবাসীরা সবচেয়ে সুখী৷ এক্ষেত্রে জার্মানি ২০১৫-১৬ সালে লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তু-অভিবাসী নিয়ে ও তাদের দেখাশোনা করেও অভিবাসীদের জন্য সুখের দেশের তালিকায় ২৮তম স্থান ছাড়াতে পারেনি৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনোকালেই সুখের তালিকার টপ টেনে ছিল না৷ এবার তারা আরো চার ধাপ নেমে গিয়ে ১৮তম স্থানে পৌঁছেছে৷ এর কারণ নাকি ট্রাম্প বা আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতা নয়, বরং মার্কিনীরা মাত্রাধিক মেদবৃদ্ধি, মাদক সেবন বৃদ্ধি ও চিকিৎসাবিহীন মানসিক বিষাদে ভুগছেন – বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে জাতিসংঘ ‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট’ তৈরির এই উদ্যোগ নেয়৷ রিপোর্ট তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় ‘সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস নেটওয়ার্ক’ বা এসডিএসএন নামের একটি আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকে৷ ২০১৮ সালের রিপোর্টটি হলো ষষ্ঠ রিপোর্ট, ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল অবধি সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে৷ ছ’টি উপাদানের ভিত্তিতে একটি দেশ বা জাতির ‘সুখ’ বিচার করা হয়: কল্যাণ, আয়, স্বাধীনতা, আস্থা, আয়ু, সামাজিক সহায়তা ও বদান্যতা৷