মাথাভাঙ্গা মনিটর: বলিউডের খ্যাতিমান অভিনেত্রী শ্রীদেবী আর নেই। গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে দুবাইয়ে মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিলো ৫৪ বছর। শ্রীদেবীর মৃত্যুতে বলিউডে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শ্রীদেবীর মৃত্যুর সংবাদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তার স্বামীর ছোট ভাই সঞ্জয় কাপুর।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দুবাই আসেন শ্রীদেবী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্বামী ও ছোট মেয়ে। সেখানে হঠাত অসুস্থ হয়ে পড়েন শ্রীদেবী। শিশুশিল্পী হিসেবে বলিউডে অভিষেক হয় শ্রীদেবীর। চিত্তাকর্ষক চোখ, রুপালি পর্দায় উপস্থিতি আর অভিনয় দক্ষতা তাকে তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দেয়। তিনি হিন্দি ছবির পাশাপাশি তামিল, তেলেগু ও মালায়ালম ছবিতে সমানতালে কাজ করেছেন। ২০১৩ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে।
মৃত্যুর আগে ৪৮ ঘণ্টা কোথায় ছিলেন শ্রীদেবী?
মাথাভাঙ্গা মনিটর: শ্রীদেবীর মৃত্যুতে এবারে সামনে উঠে এসছে নতুন তথ্য। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে, মৃত্যুর আগে ৪৮ ঘণ্টা দেখা যায়নি শ্রীদেবীকে। এ সময় তিনি হোটেলে ছিলেন বলে দাবি করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। খবরে বলা হয়েছে, দুবাইতে আত্মীয়ের বিয়েতে গেলেও দুই দিনের জন্য মুম্বাইতে ফিরেছিলেন শ্রীদেবীর স্বামী বনি কাপূর। কিন্তু দুবাইতেই থেকে যান অভিনেত্রী। গত শনিবার রাতে শ্রীদেবীর একটি নৈশভোজের নিমন্ত্রণ ছিলো। কিন্তু সেখানেও তিনি যাননি। শনিবার রাতেই হোটেল থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। হোটেলের টয়লেটে গিয়েই হৃদরোগে আক্রান্ত হন অভিনেত্রী। সেখানেই সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। তবে মৃত্যুর আগের ৪৮ ঘণ্টা কেন হোটেলের ঘর ছেড়ে বেরুলেন না শ্রীদেবী তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এসময় তিনি কি সত্যি হোটেলে ছিলেন? বনি কাপূরের ভাই অভিনেতা সঞ্জয় কাপূর অবশ্য দাবি করেছেন, হৃদরোগজনিত কোনও সমস্যাই ছিলো না শ্রীদেবীর।
এদিকে মৃত্যুর পরে দুবাইতেই শ্রীদেবীর দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। তার দেহ আনার জন্য মুম্বাই থেকে শিল্পপতি অনিল অম্বানির চার্টার্ড বিমান রওনা দিয়েছে। রোববার রাতেই শ্রীদেবীর নিথর দেহ নিয়ে সেই বিমানের মুম্বাই ফেরার কথা।
জানি না কেন এতো অস্বস্তি হচ্ছে
মাথাভাঙ্গা মনিটর: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গত শনিবার রাত ১১টার দিকে দুবাইয়ে মারা যান বলিউডের খ্যাতিমান অভিনেত্রী শ্রীদেবী। তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা বলিউড। সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু তারকা এ অভিনেত্রীর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন বিগ বি অমিতাভ বচ্চনও। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে বিগ বি’র একটি টুইট নিয়ে।
শ্রীদেবীর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসার প্রায় দেড় ঘন্টা আগেই টুইট করেছিলেন অমিতাভ। কীভাবে এই টুইট করলেন তিনি? কোনোভাবে আগে থেকে কি তিনি শ্রীদেবীর মৃত্যুর খবর পেয়েছিলেন? শ্রীদেবীর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসে শনিবার রাত ২টার কিছু পর। কিন্তু রাত একটা ১৫ মিনিটে অমিতাভ টুইট করেন, ‘জানি না কেন এতো অস্বস্তি হচ্ছে।’
যদিও এই টুইটে কোথাও শ্রীদেবীর নাম লেখেননি বলিউডের এ শাহেনশাহ। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, তিনি কি আগে থেকে কিছু অনুমান করেছিলেন? নাকি তার কাছে শ্রীদেবীর মৃত্যুর খবর আগেই পৌঁছেছিলো?
শ্রীদেবীর মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ বলিউড
মাথাভাঙ্গা মনিটর: বলিউডের বরেণ্য অভিনেত্রী শ্রীদেবী আর নেই। গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ দুবাইয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিলো মাত্র ৫৪ বছর। তার মৃত্যুর খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ভারতসহ সারা বিশ্বে। শোকে স্তব্ধ বলিউড। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে অনেকেই শোক বার্তা দিয়েছেন। অভিনেত্রীর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন অসংখ্য তারকা।
অমিতাভ বচ্চন: জানি না কেন এতো অসহায় লাগছে। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া: আমার বলার কোনো ভাষা নেই। শ্রীদেবীকে যাঁরা ভালোবাসতেন, সবার প্রতি সমবেদনা। আজ একটা কালো দিন। প্রীতি জিনতা: আমার অল টাইম ফেবারিট শ্রীদেবী নেই শুনে আমি শকড। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি। তাঁর পরিবার শক্তি পাক। বোমান ইরানি: ঘুম ভাঙলো এই শকিং খবরটা শুনে। আমাদের শ্রীদেবী আর নেই। বনি আর তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা। নেহা ধুপিয়া: শ্রীদেবী ম্যাম নেই! আমরা আমাদের সবচেয়ে সূক্ষ্ম অভিনেত্রীকে হারালাম। জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ: শ্রীদেবী, আমরা একজন আইকনকে এতো তাড়াতাড়ি হারালাম! সিদ্ধার্থ মালহোত্রা: শ্রীদেবী ম্যাম নেই শুনে সত্যিই শকড। আদনান সামি: শেষ রাতে শ্রীদেবীর খবরটা শুনে আমি আর কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। অসাধারণ প্রতিভা। রেস্ট ইন পিস। সুস্মিতা সেন: আমি শুনলাম শ্রীদেবী ম্যাম চলে গেছেন। কান্না থামাতে পারছি না। রাভিনা টেন্ডন: শকিং একটা খবরে ঘুম ভাঙল। কেন এমন হলো? এত তাড়াতাড়ি চলে গেল শ্রী! এ আর রহমান:
আমি মর্মাহত। তাঁর পরিবারের সবার প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। রাজকুমার রাও: ভাবতেই পারছি না! শ্রীদেবী নেই! কী করে সম্ভব! আমাদের জন্য বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল।
আনুশকা শর্মা: আমি শোকাহত। কী বলব, কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। রিতেশ দেশমুখ:
ভয়ানক খবর! খবরটা শুনে শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছি।
শ্রীদেবীর জন্য শোকগাথা
মাথাভাঙ্গা মনিটর: গতকাল রোববার ভারতের সাপ্তাহিক ছুটির দিন। আজকের (গতকাল) সকাল ভারতবাসীর মন বিষাদে ভরে দিলো। দেশটির চলচ্চিত্র জগতের কিংবদন্তি অভিনেত্রী শ্রীদেবীর অকালমৃত্যুতে শোকস্তব্ধ সবাই। শ্রীদেবীর একসময়ের সহকর্মী অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে শুরু করে বর্তমানের তারকা- শোকে মুহ্যমান সবাই। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল রোববার সকালেই তার শোকবার্তা পাঠিয়েছেন। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধীর কার্যালয় এ অভিনেত্রী মৃত্যুতে জানিয়েছে তাদের শোক। প্রধানমন্ত্রী মোদি টুইটারে তার বার্তায় বলেন, ‘খ্যাতনামা অভিনেত্রী শ্রীদেবীর অকালমৃত্যু আমাকে কষ্ট দিয়েছে। চলচ্চিত্রশিল্পের এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। দীর্ঘ অভিনয়জীবনে নানা ভূমিকায় স্মরণীয় অভিনয় করেছেন। তার পরিবার এবং অসংখ্য ভক্তের প্রতি সমবেদনা জানাই। তাঁর পরলোকগত আত্মার শান্তি কামনা করি।’ কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর কার্যালয় টুইটারে শোক জানিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘শ্রীদেবীর হঠাr ও অকালমৃত্যুর ঘটনা শুনে আমরা শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছি। তিনি ছিলেন এক অসামান্য প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী। বিভিন্ন ভাষায় চলচ্চিত্রে কাজ করে তিনি সুনামের স্বাক্ষর রেখেছেন। তার পরিবারের প্রতি সান্ত্বনা জানাই। তাঁর পরলোকগত আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
খ্যাতনামা অভিনেতা কমল হাসান তার শোকবার্তায় বলেছেন, সেই ছোটবেলা থেকে এক অসামান্য নারী হয়ে ওঠা শ্রীদেবীকে আমি দেখেছি। আজ মুহূর্তেই মনে পড়ছে শ্রীদেবীর সঙ্গে অনেক সুখস্মৃতি। সর্বশেষ তার সঙ্গে দেখা হওয়ার স্মৃতি মনে পড়ছে। ‘সাদমা’র কথা মনে পড়ছে। আমরা তাঁকে সত্যিই মিস করবো।’ অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া দক্ষিণের সুপারস্টার রজনীকান্ত টুইটারে শোক জানিয়ে লিখেছেন, ‘আমি শোকাহত। ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। আমি আমার এক প্রিয় বন্ধুকে হারালাম। আর চলচ্চিত্র জগr হারাল এক সত্যিকারের কিংবদন্তিকে।’
শ্রীদেবীর সেরা ১৪ সিনেমা
মাথাভাঙ্গা মনিটর: ভারতীয় সিনেমা বলতে সচরাচর মুম্বাইয়ের বলি পাড়ার কথাই ঘুরে ফিরে আসলেও দেশটির আরও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠিত সিনেমা শিল্প রয়েছে। শ্রী দেবীই এ যাবতকালের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী যিনি বলিউডের পাশাপাশি একাধারে তামিল, তেলেগু, মালায়লাম, এবং কান্নাড়া সিনেমা শিল্পের তুমুল জনপ্রিয় ও আকাঙ্ক্ষিত অভিনেত্রী ছিলেন। স্বভাবজাত অভিনয়ের জন্য ভারতের প্রতিষ্ঠিত প্রায় সব সিনেমা শিল্পের খ্যাতির চূড়ায় ছিলেন তিনি। অন্যকথায় ভারতের যে ক’টি সেরা সিনেমা শিল্প রয়েছে, এর সবগুলোর দ্যুতি ও খ্যাতি ছড়াতে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন শ্রী দেবী। সত্তর দশক থেকে শুরু করে নব্বইয়ের দশক অবধি শ্রী দেবী মানে এককথায় ‘সুপার ডুপার হিট।’ ভারতের দক্ষিণের রাজ্য তামিল নাড়ুর শিবাকাশিতে ১৯৬৩ সালের ১৩ আগস্ট জন্ম গ্রহণ করেন এই কিংবদন্তি শিল্পী। তার পুরো নাম শ্রী আম্মা আয়াঙ্গার ইয়াপ্পান। শক্তিমান অভিনেত্রীর পাশাপাশি তিনি নৃত্যশিল্পী ও কৌতুক অভিনেত্রী হিসেবেও অমিত প্রতিভার অধিকারী। শ্রী দেবী অভিনীত শেষ ছবিটির নাম ‘মম’, এটি ২০১৭ সালে মুক্তি পেয়েছিল। এছাড়া, চলতি বছরে মুক্তি পেতে যাওয়া শাহরুখ খানের বামুন সিনেমার অংশ বিশেষেও দেখা যাবে এই চির সবুজ শিল্পীকে। আসুন একনজরে দেখে নেই, এই গুণী শিল্পীর কিংবদন্তি মহাতারকার হওয়ার পথে অভিনীত তুমুল জনপ্রিয় এবং প্রশংসিত সিনেমাগুলো। থুনাইভান (১৯৬৯): শাদা-কালো এবং আংশিক রঙিন সেলুলয়েডের ফিতায় চিত্রিত এই সিনেমাটিতে তিনি লর্ড মুরুগা-এর ভূমিকায় অভিনয় করেন। এটি তার প্রথম সিনেমা। এতে তিনি শিশু শিল্পী হিসেবে অভিনয়ে করেন। মেন্ডাম কোকিলা (১৯৮১): ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনি অবলম্বনে তৈরি এই সিনেমায় শ্রী দেবীর বিপরীতে ছিলেন দক্ষিণের আরেক কিংবদন্তি সিনেমা ব্যক্তিত্ব কমল হাসান। এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রী পুরস্কার (তামিল) লাভ করেন শ্রী আম্মা দেবী। মুনদ্রাম পিরাই (১৯৮২): বালু মাহেন্দ্রুর এই ক্লাসিক্যাল সিনেমায়, এক সড়ক দুর্ঘটনায় শ্রী দেবীর স্মৃতি শিশু বয়সে চলে যায়। এমন অবস্থায় স্কুল শিক্ষকের ভূমিকায় অভিনয়কারী কমল হাসান তাকে আশ্রয় দেন। সিনেমাটি হিন্দিতেও তৈরি করা হয়েছে, নাম সাদমা। হিম্মতওয়ালা (১৯৮৩): কে. রাঘবেন্দ্রা রাওয়ের মিউজিক্যাল ব্লকবাস্টার সিনেমা মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো হিন্দি সিনেমার দর্শকদের হৃদয় জয় করে নিয়েছিলেন। এই সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তিনি ‘কুখ্যাত’ ‘থান্ডার থাই’ বা ‘তাণ্ডব উরু’ তকমা পেয়েছিলেন শ্রী দেবী। সাদমা (১৯৮৩): মুনড্রাম পিরাই সিনেমার পরিচালকই এর হিন্দি সংস্করণের তৈরি করেন, নাম দেন সাদমা। এতে শ্রী দেবী স্মৃতি হারিয়ে ৮ বছরের বালিকায় পরিণত হন। এই সিনেমার কিছু দৃশ দেখলে চোখে জল না এসে উপায় থাকে না। নাগিনা (১৯৮৬): আশির দশকের মধ্যভাগে অনন্য প্রতিভাধর শিল্পী হওয়ার পাশাপাশি নিশ্চিত ব্যবসা সফল অভিনেত্রী হিসেবে বলিউডে নিজের অবস্থান পাকা করতে সমর্থ হন তিনি। হারমেশ মালহোত্রার নাগিনা সিনেমাটি এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। মিস্টার ইন্ডিয়া (১৯৮৭): একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক হিসেবে তিনি পরোপকারী অথচ অদৃশ ব্যক্তি মিস্টার ইন্ডিয়াকে খুঁজতে গিয়ে তার প্রেমে পড়ে যান শ্রী দেবী। মিস্টার ইন্ডিয়ার ভূমিকায় অভিনয় করেন অনিল কাপুর। চালবাজ (১৯৮৯): দ্বৈত চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে শ্রী দেবী তার অভিনয় প্রতিভার অনবদ্য স্ফুরণ ঘটান এই সিনেমায়। কমেডি ঘরানার এই সিনেমাটি পরিচালনা করেছিলেন পঙ্কজ পারাশর। চাঁদনি (১৯৮৯): বলিউডের কিংবদন্তি পরিচালক যশ চোপড়ার এই সিনেমাটি এখনও ‘মেরি হাথও মেঁ’ গানের জন্য দর্শকদের কাছে সমাদৃত। এই সিনেমা অভিনয়ের মাধ্যমে শ্রী দেবী সমসাময়িক সময়টিতে শীর্ষ তারকা শিল্পীতে পরিণত হন। নাচ, গান, এবং অভিনয়ের অসাধারণ রসায়ন সিনেমাটিকে ওই বছরের সবচেয়ে ব্যবসা সফল সিনেমায় পরিণত করেছিলো। লামহে (১৯৯১): যশ চোপড়ার আরেকটি অনবদ্য রোমান্টিক সিনেমা লামহে। যদিও এটা অতটা ব্যবসা সফল ছিল না, শ্রী দেবী বহুমাত্রিক অভিনয় বোদ্ধা মহলে বেশ প্রসংশা কুড়িয়েছিলো। খাসানা খানাম (১৯৯১): রাম গোপাল ভার্মার এই সিনেমায় শ্রী দেবীর বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন ভেঙ্কটেম। এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তিনি সেরা অভিনেত্রী হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার (তেলেগু) লাভ করেন। লাডলা (১৯৯৪): দিব্যা ভারতীর দুঃখজনক মৃত্যুর কারণে তিনি এই সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। এই সিনেমায় তার দেওয়া, ‘আন্ডারস্ট্যান্ড? ইউ বেটার আন্ডারস্ট্যান্ড’ ছিল দর্শকদের মুখে মুখে। এতে তার বিপরীতে অভিনয়ে করেন অনিল কাপুর। ইংলিশ ভিংলিশ (২০১২): এই সিনেমার মাধ্যমে প্রায় ১৫ বছর পর আবারও রূপালী পর্দায় ফিরে আসেন এই অনন্য প্রতিভাধর শিল্পী। বিয়ের দীর্ঘ সময় পর একজন গৃহিনীর নিজেকে পুনরায় খুঁজে পাওয়া গল্প এতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মম (২০১৭): এই সিনেমায় নিজের টিনেজ মেয়ের ধর্ষণের প্রতিশোধ আগুনে পুড়তে থাকা এক মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন শ্রীদেবী, ঠিক যেন সন্তানহারা বাঘিনী।
শ্রীদেবীর শেষকৃত্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়
মাথাভাঙ্গা মনিটর: আজ সোমবার বেলা ১১টায় পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ভারতের বরেণ্য অভিনেত্রী শ্রীদেবীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, মুম্বাইর জুহু অথবা সান্টা ক্রুজে এই শেষকৃত্য হবে। তবে শেষ পর্যন্ত কোথায় শেষকৃত্য হবে, নিরাপত্তার কারণে তা এখনই ঘোষণা করা হচ্ছে না। এ সময় শ্রীদেবীর পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও সেখানে থাকবেন বলিউডের শিল্পী ও কলাকুশলীরা। এদিকে শ্রীদেবীর মরদেহ দুবাই থেকে আনার জন্য গতকাল রোববার দুপুর একটায় মুম্বাই থেকে একটি প্রাইভেট জেট রওনা হয়েছে। মুম্বাই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী রাত আটটা নাগাদ এই প্রাইভেট জেটটি শ্রীদেবীর মরদেহ নিয়ে দুবাই থেকে মুম্বাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেবে। এরপর মুম্বাই বিমানবন্দরে আসবে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ। বিমানবন্দরের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে শ্রীদেবীর মরদেহ তাঁর আন্ধেরির লোখান্ডওয়ালা এলাকার বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। শেষকৃত্যের আগে তাঁর মরদেহ এখানেই থাকবে।
গতকাল সকালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত নবদীপ সিং সুরি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পুলিশ শ্রীদেবীর মরদেহের ফরেনসিক প্রতিবেদন তৈরি করছে। এরপরই মরদেহ মুম্বাই পাঠানোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ননদের ছেলে মোহিত মারওয়ারের বিয়েতে অংশ নেয়ার জন্য সম্প্রতি দুবাই যান শ্রীদেবী। তার সঙ্গে ছিলেন স্বামী বনি কাপুর ও মেয়ে খুশি। বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মেয়ে খুশিকে নিয়ে মুম্বাই ফিরে যান বনি কাপুর। শ্রীদেবী আরও কয়েক দিন ছুটি কাটানোর জন্য দুবাই থেকে যান। গত শনিবার শ্রীদেবীকে চমকে দেয়ার জন্য আবার দুবাই যান বনি কাপুর।
মুম্বাইয়ে করণ জোহরের ‘ধাড়াক’ ছবির শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকার জন্য বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি শ্রীদেবীর বড় মেয়ে জাহ্নবী। জাহ্নবী ও খুশি এখন আছেন অনিল কাপুরের বাসায়। সেখানে গিয়ে তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন করণ জোহর, রানী মুখার্জি ও বনি কাপুরের প্রথম স্ত্রীর সন্তান অর্জুন কাপুর। আগেই জানানো হয়েছে, বলিউডের বরেণ্য অভিনেত্রী শ্রীদেবী আর নেই। গতকাল রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ দুবাইয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিলো মাত্র ৫৪ বছর।
শাহরুখের ‘জিরো’ সিনেমায় শেষবারের মতো দেখা যাবে শ্রীদেবীকে
মাথাভাঙ্গা মনিটর: হিন্দি সিনেমার ‘চাঁদনি’ অভিনেত্রী শ্রীদেবী আর নেই। দুবাইয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৫৪ বছর বয়সে চিরবিদায় নিয়েছেন তিনি। আত্মীয় মোহিত মারবাহর বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুবাই গিয়েছিলেন শ্রীদেবী। শ্রীদেবীর এই আকস্মিক প্রয়াণে শোকাহত বলিউড, অনুরাগীরা। বেশ কিছুদিন বলিউড থেকে দূরে ছিলেন। ২০১২-তে ‘ইংলিশ ভিংলিশ’ সিনেমার মাধ্যমে ফের বড়পর্দায় কামব্যাক ঘটে তার। গত বছরই মুক্তি পেয়েছিল তার সিনেমা ‘মম’। এই সিনেমায় প্রধান ভূমিকায় দেখা গিয়েছিলো তাকে। শ্রীদেবীকে শেষ যে সিনেমায় দর্শকরা অভিনয় করতে দেখবেন তা হল আনন্দ এল রাইয়ের পরিচালিত আগামী সিনেমা ‘জিরো’। শাহরুখ খান, ক্যাটরিনা কাইফ ও আনুশকা শর্মা অভিনীত এই সিনেমায় অতিথি শিল্পী হিসেবে দেখা যাবে শ্রীদেবীকে। এই সিনেমায় তার ছোট একটা দৃশ্য রয়েছে। গত বছর এই ভূমিকায় তিনি শ্যুটিং করেছিলেন। উল্লেখ্য, এই সিনেমায় বেশ কয়েকজন নামী অভিনেত্রীর ক্যামিও রয়েছে। শ্যুটিংয়ের সময় শাহরুখ তার ইন্সটাগ্রাম পেজে শ্রীদেবীর সঙ্গে একটা ছবি শেয়ার করেছিলেন।
সৎ ভাই অর্জুনের মতোই প্রথম সিনেমা মুক্তির আগে মাকে হারালেন জাহ্নবি
মাথাভাঙ্গা মনিটর: বলিউড অভিনেত্রী শ্রীদেবীর আকস্মিক প্রয়াণে চলচ্চিত্র জগতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মায়ের আচমকা এই চলে যাওয়াটা সবচেয়ে বেশি ধাক্কা দিচ্ছে শ্রীদেবীর বড় মেয়ে জাহ্নবিকে। চলতি বছরেই করন জোহরের ‘ধড়ক’ সিনেমায় শাহিদ কাপুরের ভাই ইশান খট্টারের বিপরীতে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউডে পা রাখতে চলেছেন জাহ্নবি।
ধড়ক-এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর থেকেই সিনেমার মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছেন সিনেপ্রেমীরা। তবে স্বাভাবিকভাবেই অনুমান করা কঠিন নয় যে, শ্রীদেবী মেয়ের এই অভিষেক সিনেমার দিকে উত্সুক আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রুপালি পর্দায় মেয়ের অভিষেক দেখে যেতে পারলেন না শ্রীদেবী।
একটা সময় বলিউডে সাফল্যের তুঙ্গে উঠেছিলেন শ্রীদেবী। হিন্দি সিনেমা জগতে নিজের একটা স্বতন্ত্র পরিচিতি গড়ে তুলেছিলেন তিনি। মায়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করে মেয়ে জাহ্নবিও সিনেমা জগতে পা রাখতে চলেছেন। আর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তটা মা শ্রীদেবী দেখে যেতে পারলেন না। মায়ের মৃত্যুর অপূরণীয় ক্ষতির সঙ্গে এই আক্ষেপ জাহ্নবি কোনদিনই ভুলতে পারবেন না। এ রকমই দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন শ্রীদেবীর স্বামী বনি কাপুরের প্রথম স্ত্রীর ছেলে অর্জুন কাপুরও। তার প্রথম সিনেমা ইশকজাদের মুক্তির কয়েকদিন আগে অর্জুনের মায়ের মৃত্যু হয়েছিল। এবার জাহ্নবিও তার অভিষেক সিনেমার আগেই মাকে হারালেন। জাহ্নহি ও খুশির সঙ্গে খুব একটা ভালো সম্পর্ক নেই সৎ ভাই অর্জুনের। শ্রীদেবীর সঙ্গেও সম্পর্কের সমীকরণ ভালো ছিল না তার। তাই তো সৎ মায়ের মৃত্যুতে এখনো মুখে কুলুপ এটে আছেন ইশকজাদে তারকা।